পাকিস্তানের সাবেক সামরিক শাসক পারভেজ মোশাররফ স্বীকার করেছেন, তাঁর শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চালকবিহীন বিমান (ড্রোন) হামলার বিষয়ে গোপন সমঝোতা হয়েছিল। এই প্রথম পাকিস্তানের কোনো অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা এই সমঝোতার বিষয়টি স্বীকার করলেন।
মোশাররফ সিএনএনকে বলেন, বিতর্কিত ড্রোন হামলার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাঁর কোনো গোপন চুক্তি হয়নি। তবে তাঁর সরকার কিছু ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অনুমতি দিয়েছিল—‘যা খুবই সীমিত কয়েকটি ঘটনাকে কেন্দ্র দেওয়া হয় এবং এগুলো একেবারেই বিচ্ছিন্ন ঘটনা; যার দ্বারা পরোক্ষ কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা ছিল না।’
মোশাররফ বলেন, ড্রোন হামলার বিষয়গুলো ‘সামরিক গোয়েন্দা পর্যায়ে’ আলোচনা করা হতো এবং যেসব ক্ষেত্রে ‘আমাদের সামরিক বাহিনীর বিশেষ অভিযান’ চালানোর কোনো সুযোগ থাকত না, সে ক্ষেত্রে ড্রোন হামলার অনুমতি দেওয়া হতো। আর এ ধরনের ঘটনা দুবার বা তিনবার ঘটে থাকতে পারে।
আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে অংশ নিতে পারভেজ মোশাররফ গত মাসে স্বেচ্ছানির্বাসন থেকে দেশে ফিরেছেন।
মোশাররফ বলেন, ২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় নেক মোহাম্মদ নামের একজন যুদ্ধবাজ নিহত হন। এই উপজাতি নেতার বিরুদ্ধে আল-কায়েদা জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ ছিল। তবে নেক মোহাম্মদ নিহত হওয়ার পর পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা বলেছিল, পাকিস্তানি বাহিনীর হামলায় নেক মোহাম্মদ নিজ বাসায় নিহত হন।
পারভেজ মোশাররফ দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রকে ড্রোন হামলার অনুমতি দেওয়ার কথা অস্বীকর করে আসছিলেন। আর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেসব ড্রোন হামলাকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল।
এদিকে পারভেজ মোশাররফের অস্থায়ী জামিনের মেয়াদ ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছেন ইসলামাবাদের হাইকোর্ট। গতকাল শুক্রবার অবৈধভাবে বিচারকদের আটক রাখার মামলার শুনানি চলাকালে আদালত এই আদেশ দেন।
একই সঙ্গে আদালত পাঁচ লাখ রুপির জামানত দাখিলের জন্য মামলার পরবর্তী শুনানির সময় মোশাররফকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
২০০৭ সালের ৩ নভেম্বর পারভেজ মোশাররফ পাকিস্তানে জরুরি অবস্থা জারির পর ৬২ জন বিচারককে আটক করা হয়েছিল। পিটিআই ও ডন।
(রুপশী বাংলা নিউজ) ১৩ এপ্রিল /২০১৩.