নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষার প্রশ্নপত্র এইচএসসি ও আলীম পরীক্ষার। অথচ উত্তরপত্র এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার! প্রশ্ন ও উত্তরপত্রে এমন অমিল থাকলেও এভাবেই নেওয়া হলো কুমিল্লা শিক্ষা ও বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষা।বিষয়টি বোর্ড কর্তৃপক্ষের নজরে না এলেও পরীক্ষার্থীদের নজরে এসেছে ঠিকই। তারা পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত শিক্ষকদের এ বিষয়টি জানালে তারা বলেন, “এসএসসি ও দাখিল কেটে সেখানে এইচএসসি ও আলিম লিখে নাও।” অথচ উত্তরপত্রের ওপরে স্পষ্ট করে লেখা রয়েছে, “উত্তরপত্রে কোনো অবাঞ্ছিত দাগ দেওয়া যাইবে না।”
সোমবার (১ এপ্রিল) সকালে কুমিল্লা বোর্ডের বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র ঘুরে পরীক্ষার দ্বিতীয় অংশে নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার অপটিক্যাল মার্ক রিডার (ওএমআর) শিটে এ সমস্যা দেখা গেছে। এ ঘটনায় পরীক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক হতাশা ও শঙ্কা বিরাজ করছে।
কলেজের পরীক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া প্রতিটি ওএমআর সিটে এইচএসসি পরীক্ষা ২০১৩ লেখার পরিবর্তে এসএসসি পরীক্ষা-২০১৩ ও মাদ্রাসায় পরীক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া প্রতিটি আলিম পরীক্ষা-২০১৩ লেখার পরিবর্তে দাখিল পরীক্ষা-২০১৩ ছাপা হয়েছে।
এইচএসসি ও দাখিল পরীক্ষার নিয়মানুযায়ী পঞ্চাশ নম্বর নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার্থীদের জন্য ৩ ঘণ্টার পরীক্ষায় শেষের ঘণ্টা নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ।
পরীক্ষার দ্বিতীয় অংশে পরীক্ষার্থীদের হাতে নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার উত্তরপত্র দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। পরীক্ষার্থীরা কক্ষ পর্যবেক্ষকদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে অনেক পর্যবেক্ষকই এর সমাধান দিতে পারেন নি। আবার অনেক পর্যবেক্ষক পরীক্ষার্থীদের উত্তর দিতে না পেরে কোনো পরিবর্তন বা কাটাকাটি করতে বাধা দেন।পরীক্ষা শেষে চান্দিনা মহিলা ডিগ্রি কলেজের পরীক্ষার্থী মীম বলেন, “আমি চান্দিনা রেদোয়ান আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছি। আমার কক্ষে হঠাৎ ওএমআর সিটে এসএসসি লেখা দেখে কক্ষ পর্যবেক্ষককে দেখাই। তিনি আমাদেরকে জানান, তোমাদের কোনো কিছুই পরিবর্তন করতে হবে না। শুধু উত্তর দিয়ে যাও। যা করার বোর্ড করবে।” একই কলেজের একাধিক পরীক্ষার্থীর সঙ্গে আলাপকালে তারা জানায়, বিভিন্ন কক্ষে পর্যবেক্ষকরা এসএসসি লেখা কেটে পাশে এইচএসসি লেখার জন্য বলেছেন।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্র কুমিল্লা মহিলা কলেজ কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী আশিকুর রহমান জানান, ওই কেন্দ্রেও একই সমস্যা হয়েছে। সেখানেও তারা এসএসসি লেখা কেটে এইচএসসি লিখে দিয়েছেন।
তবে, পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন ওএমআর সিট মূল্যায়ন করা হয় কম্পিউটারে। যে উত্তরপত্রে একটি দাগও দেওয়া যায় না, ওই উত্তরপত্রে এসএসসি লেখা কেটে এইচএসসি লেখা থাকবে তা কি করে হয়? এ সমস্যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন পরীক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে চান্দিনা রেদোয়ান আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম বলেন, “বোর্ড থেকে একটি নির্দেশনা এসেছে। ওই নির্দেশনায় এসএসসি’র স্থানে এইচএসসি লেখার জন্য বলা আছে। কিন্তু কেন এমন সমস্যা হলো তা আমরা জানি না।” কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর কুণ্ডু গোপী দাসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
০১ এপ্রিল /২০১৩.