লেখাপড়া করছেন ফ্যাশন ডিজাইনে। তবে বক্সিং রিংটা টানে তামান্না হককে। হাতের চুড়ি খুলে তাই বক্সিং গ্লাভস পরে কাল খেললেন স্বাধীনতা দিবস টুর্নামেন্টে।প্রথমবার রিংয়ে নেমেই ৫০ কেজি ওজন শ্রেণীতে হয়েছেন রানারআপ। সামনে আরও খেলতে চান বক্সিং। জানালেন নিজের পরিকল্পনা
প্রথমবারের মতো বক্সিং রিংয়ে নেমেই রানারআপ। তা কী মনে করে বক্সিংয়ে এলেন?l
তামান্না হক: বক্সার হওয়াটা স্বপ্ন দেখি আমি। সুযোগ ছিল না বলে এত দিন আসতে পারিনি। এখন সুযোগ হয়েছে। তবে আজ প্রথম নেমে এতটা ভালো করব, ভাবিনি।প্রথমে একটু ভয় লাগছিল। রিংয়ে নামার পর ভয় কেটে গেছে।
কত দিন অনুশীলন করেছেন?l
তামান্না: গত ডিসেম্বর থেকে অনুশীলন করছি। ধানমন্ডি থেকে পল্টনে আসতে একটু কষ্ট হয়। আবার মাঝে কিছুদিন পরীক্ষা ছিল। কিছুদিন আগে জ্বর হয়েছিল। এখনো আমার শরীর দুর্বল। তার পরও এই শরীর নিয়ে খেললাম।
মেয়েদের বক্সিং টুর্নামেন্ট হয় না বললেই চলে। ফেডারেশনের কাছে আপনার চাওয়া কী?l
তামান্না: নিয়মিত মেয়েদের বক্সিং টুর্নামেন্ট হোক, এটাই চাওয়া। টুর্নামেন্ট বেশি বেশি হলে আমরা খেলতে পারব। ফেডারেশনের নতুন সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, আমাদের খেলার ব্যাপারে অনেক সাহায্য করবেন।
ফুটবল-ক্রিকেটে অনেক মেয়ে খেলছে। কিন্তু বক্সিংয়ে মেয়েরা আসে না। আপনাকে দেখে অন্যরা কিছু বলে না?l
তামান্না: হয়তো অন্য মেয়েরা ভয় পায় বক্সিংয়ে আসতে। বক্সিং করলে নাক-টাক না ফেটে যায়! চেহারা নষ্ট হয়ে যায়! কিন্তু রিংয়ে ঢুকলে বোঝা যায়, ব্যাপারটা অত সিরিয়াস নয়। এটা শুধু একটা খেলাই। রেসলিংয়ের মতো এখানে ভয়ের কিছু নেই। তাই বলব, মেয়েদের এই খেলায় আসা উচিত। যদি এভাবে টুর্নামেন্ট হয়, প্রচার আসে এবং ফেডারেশন আরও উদ্যোগ নেয়, তাহলে অবশ্যই মেয়েরা বক্সিংয়ে অনেক ভালো করবে।
পরিবারের লোকজন আপনার বক্সিংয়ে আসাটা কীভাবে নিয়েছেন?l
তামান্না: শুরুতে কেউ সমর্থন করেনি। সবাই বলত, মেয়েরা বক্সিং খেলে না। তুমি একা কী করছ না-করছ? তবু আমার একটা আত্মবিশ্বাস ছিল, কিছু একটা করতে পারব।এখন আমার পরিবারের সবাই খুশি।
অনুশীলন করেন ছেলেদের সঙ্গে। কোনো অস্বস্তি লাগে না?l
তামান্না: যেহেতু কোনো মেয়ে বক্সার নেই, তাই এখন ছেলেদের সঙ্গেই অনুশীলন করতে হবে। মেয়ে বলে লজ্জা পাব, অনুশীলন করব না, সেটা ঠিক নয়। লজ্জা পেলে কখনো কিছু শিখতে পারব না। আমি সব সময়ই নিজেকে বক্সার ভাবি। এখানে কে ছেলে, কে মেয়ে, মাথায় রাখি না।
নিজেকে ভবিষ্যতে কোথায় দেখতে চান?l
তামান্না: নিজেকে এমন জায়গায় নিয়ে যেতে চাই, যেন দেশে বা দেশের বাইরের মানুষ বলে, এ দেশের মেয়েরা বক্সিংও পারে। আমরাও যে পারি, সেটা দেখিয়ে দিতে চাই।
(২৭ মার্চ/২০১৩) নিউজরুম।