সিরাজগঞ্জের তাড়াশে শিক্ষা বাণিজ্যের গডফাদার জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দূর্নীতি, সরকারী সম্পত্তি দখল, অর্থ আত্মসাৎ ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসী সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, তাড়শ মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ শিক্ষা বাণিজ্যের গডফাদার জাফর ইকবালের অনিয়ম ও দূনীতিতে গড়ে উঠেছে সিরাজগঞ্জ জেলাধীন তাড়াশ উপজেলায় জে.আই টেকনিক্যাল কলেজ, জাফর ইকবাল কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়, জাফর ইকবাল কারিগরি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আজিমনগর কম্পিউটার কারিগরি স্কুল ও বাণিজ্যিক কলেজ, আজিমনগর মহিলা কারিগরি স্কুল ও বি.এম কলেজ, ২টি কৃষি কলেজ, মাদ্রাসা, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন বোর্ডের আন্ডারে নিজ নামে, পিতা মাতা ও স্ত্রীর নামে তাড়াশ উপজেলার ভিতরে ও বাহিরে একই বছরের মধ্যে গড়ে তোলেন ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে জাফর ইকবাল ও তার পরিবারের সদস্যরা এবং তার মনোনীত নিকটতম ব্যক্তিদের সদস্য করে পরিচালনা করে আসছেন। এবং প্রতিষ্ঠান গুলোর প্রথম দিকে জাফর ইকবাল নিজেই প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হয়ে ব্যক্তি নামে নাম করণের অর্থ তিনি নিজে ও তাহার পরিবার থেকে বিভিন্ন সময় ভূয়া দান দেখিয়েছেন। এবং উক্ত প্রতিষ্ঠান গুলোর কম্পিউটার ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ের নামে ভূয়া ভাউচারের মাধ্যমে ব্যয় দেখানো হয় এবং দুটি ওয়াডিট হওয়ার পর ব্যক্তি নামে নাম করণের অর্থ তাহার পরিবার হতে যে সব দান দেখানো হয়েছিল তাহা ২০০৪ইং সনে পরিবর্তন করে পরিচিত ও অপরিচিত ব্যক্তিদের নামে ভূয়া দান দেখানো হয়। এবং মূল ক্যাশ বহিটি পরিবর্তন করে ২০০৩ ও ২০০৪ইং সালের অডিট অফিসারদের ¯^াক্ষর নিজ হাতে জাল করে জাল ¯^াক্ষরিত ক্যাশ বহিটি বিদ্যালয় গুলোতে রাখা হয়েছে। এবং ভূয়া ভাউচার অনুমোদন ও জালিয়াতি কাজে সহযোগিতার জন্য মোঃ আবু সাঈদ আকন্দ সাহেবের মত অর্থ লোভি ব্যক্তিদের কে বার বার একটানা সভাপতি করে নিয়োগ বাণিজ্য সহ পি.ডি.আর এর টাকা ও প্রতিষ্ঠানের আয়ের টাকা কম্পিউটার ও যন্ত্রপাতি ক্রয় ও বিভিন্ন খাতে ব্যয়ের অজুহাত দেখিয়ে নগদ ও ব্যাংক হতে উত্তোলন করে ভূয়া ভাউচার দিয়ে মোটা অংকের অর্থ আত্মসাৎ করে থাকেন এবং ব্যয়ের সত্যতা প্রমানের জন্য বিভিন্ন সময় শিক্ষকগণকে চাপ দিয়ে ও চাকুরী হারানোর ভয় দেখিয়ে ভাউচারে ¯^াক্ষর নিয়ে তাহা অনুমোদন করে থাকে। কিন্তু উক্ত ব্যয় সম্পর্কে শিক্ষকগণ কিছুই জানেন না। প্রতিষ্ঠান গুলোতে জমির শর্তপূরণ করা হয়েছে ভূয়া দলিল দেখিয়ে এবং অন্যের জায়গায় ঘর উঠিয়ে। যার কারণে জাফর ইকবাল উচ্চ বিদ্যালয়ে দরজার সামনে খুটি পুতে শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বিদ্যালয়ে প্রবেশ ও পাঠদানে বাঁধাগ্রস্থ করেন ভাদাশ গ্রামের মোঃ সামাদ আলী নামক জমির মালিক। উক্ত অধ্যক্ষ জাফর ইকবাল কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্য জমি ক্রয় করার কথা বলে টাকা নিয়ে নিজ নামে জমি রেজিষ্ট্রি করে নিয়েছেন। তাহার এ সকল অনিয়ম ও দূনীতির কাজে সহযোগিতা করতে যদি কোন প্রতিষ্ঠান প্রধান অ¯^ীকার করেন; তাহলে কোন প্রকার কারণ দর্শানো ছাড়াই তাহাকে প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদ ছাড়তে বাধ্য করেন। এভাবে জাফর ইকবাল কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ের মোট ১৫জন সুপারিনটেনডেন্ট পরিবর্তন করেছেন সভাপতি মোঃ আবু সাঈদ আকন্দ ও প্রতিষ্ঠাতা জাফর ইকবাল সাহেব। আবু সাঈদ আকন্দ নামের ওই ব্যক্তি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে তাড়াশ উপজেলার জাফর ইকবাল কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়, আজিমনগর কম্পিউটার কারিগরি স্কুল ও বাণ্যিজিক কলেজ, বস্তুল টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের সভাপতি পদে দীর্ঘদিন যাবৎ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি প্রতি মাসের মিটিং দেখিয়ে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান হতে ২ হাজার করে টাকা নিয়ে থাকেন। এ সকল টাকার ভাউচার দেখাতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ভূয়া ভাউচার দেখাতে হয়। তিনি নিজে প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ ভোগ করে থাকেন এবং প্রতিষ্ঠাতা কে লক্ষ লক্ষ টাকা ভোগ করার সুযোগ করে দেন। বিধায় তিনি ছাড়া এ সকল প্রতিষ্ঠানের সভাপতি অন্য কেউ হওয়ার সুযোগ পান না। এই সভাপতি মোটা অংকের টাকা নিয়ে প্যাটানের বর্হিভূত অনেক শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ প্রদান করেন যার মধ্য হতে কৌশলে অনেকের বেতন ভূক্ত হয়। এবং কিছু পদে বেতন ভূক্ত হচ্ছে না এবং টাকাও ফেরৎ পাচ্ছে না। প্যাটান বর্হিভূক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের নিকট হতে শিক্ষামন্ত্রণালয় ভোগকৃত অর্থ হিসাব মোতাবেক সাকুল্য টাকা ফেরৎ এবং জাফর ইকবাল কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২ তম সুপারিনটেনডেন্ট নিয়োগের পর কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে বেতনের জন্য কাগজ প্রেরণের সঙ্গে সঙ্গে এই বিদ্যালয়ে প্যাটান বর্হিভূত শিক্ষক কর্মচারী থাকায় সুপার মোঃ আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের বেতন প্রদানের পরিবর্তে প্যাটান বর্হিভূতদের ভোগকৃত অর্থ ফেরত চাহিয়া সভাপতি ও সুপারিনটেনডেন্ট বরাবরে চিঠি প্রদান করেন। এলাকাবাসীর অভিমত জাফর ইকবাল জাল জালিয়াতির মেশিন, জালিয়াতি ছাড়া কি করে সম্ভব তার পরিবার থেকে কোটি টাকার উপরে অনুদান দিয়ে এতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজ নামে করা। কারণ জাফর ইকবাল একজন কৃষক পরিবারের সন্তান। উলিপুর গ্রামের আজিম উদ্দিনের পূত্র জাহের একজন সাধারণ জুতার দোকানদার থেকে তাড়াশ ডিগ্রী কলেজের ভূগোল বিভাগের প্রদর্শক থেকে তাড়াশ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ তারপর হয়ে যান শিক্ষা বাণিজ্যের গডফাদার হয়ে জান জাফর ইকবাল। হয়ে যায় আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ নাকি পেয়ে যান আলাউদ্দিনের চেরাগ। যার ফলে তিনি হয়ে যান কোটিপতি। তাহার কোটিপতি হওয়ার পেছনে রয়েছে জুয়া চুরি ও জালিয়াতি। কিন্তু তাহার জালিয়াতির কারণে নষ্ট হচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকা এবং এলাকার কিছু শিক্ষিত বেকার ছেলে মেয়েদের জীবন। এবং নিয়োগ বাণিজ্য করে প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে তিনি হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। একটি বিদ্যালয়ের নিয়োগ বাণিজ্যের তথ্যঃ বিদ্যালয়টির নাম জাফর ইকবাল কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয় তাড়াশ, সিরাজগঞ্জ, স্থাপিত ২০০১ খ্রিঃ। বিদ্যালয়টিতে ২টি ট্রেড ১। ফুড প্রসেসিং ২। জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়াকর্সের ¯^ীকৃতি নিয়ে ২৮/১২/২০০১ খ্রিঃ তারিখে একটি নিয়োগ বোর্ড গঠন করেন। তিনি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হয়ে শুরু করেণ নিয়োগ বাণিজ্য। চলতে থাকে ২০০৩ সালের ডিসে¤^র পর্যন্ত উক্ত নিয়োগ বোর্ডের আন্ডারে লোক ঢুকানোর কার্যক্রম। নিয়োগ বোর্ডে একজন জনাব আব্দুল আউয়াল চীফ ইন্সঃ ইলেকট্রিক্যাল পাবনা পলিটেকনিক থেকে এসেছিলেন। তিনি নিয়োগ বোর্ড করে যে সকল শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়োগ দিয়ে যান তার মধ্য হতে অনেকে মোটা অংকের টাকা প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের কে বাদ দিয়ে পরবর্তিতে ঐ সকল পদে অন্য লোক নিয়োগ করেছেন কোন প্রকার নিয়োগ বোর্ড ছাড়াই। তিনি জাল ¯^াক্ষর করে মোঃ আলাউদ্দিন (টেকনিক্যালশপ), মোঃ আব্দুল হান্নান, মোঃ শামসুল আলম পাস করার এক বৎসর পূর্বে নিয়োগ প্রদান করেছেন। এবং ড্রেস মেকিং টেইলারিং ট্রেডের ¯^ীকৃতি পান ১৭-১২-২০০২ইং সালে কিন্তু উক্ত পদে মোঃ রেজাউল করিম ও মোছাঃ আলেয়া খাতুন ট্রেড ইন্সঃ ড্রেস মেকিং কে নিয়োগ প্রদান করেন ২৮/১২/২০০১ইং তারিখে। এবং বিদ্যালয়ে সংরক্ষিত পত্রিকা বিজ্ঞপ্তি ব্যাগ ডেট করে আনা হয়েছে। এ সকল জাল ¯^াক্ষরিত টেবুলেশন,নিয়োগের ফলাফল সিট মূল ¯^াক্ষরিত সিটের সাথে মিল না থাকায় পরে সকল টেবুলেশন ও রেজুলেশন পরিবর্তন করে জাল ¯^াক্ষর করে বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। এমনকি প্যাটান বর্হিভূত পদে বেতন ভূক্ত করার জন্য জেলা শিক্ষা অফিসারের ¯^াক্ষর জাল করা হয়ে থাকে। এ সকল কাজের জন্য আজিমনগরে রাতের অন্ধকারে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের যেতে হয়েছে। এতেও শেষ হয় না তার ব্যবসা। তিনি চাকুরী প্রদানের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ সনদ বিক্রয়ের ব্যবসা করেছে ব্যাপক। নন ডিপ্লোমা ট্রেড ইন্সঃ কম্পিউটার প্রদর্শক ও টেকনিক্যাল শপ পদে ১০ থেকে ১৫ হাজার করে টাকা নিয়ে ভূয়া সনদ দিয়ে বেতন ভূক্ত করেণ যার জন্য ১৫-০৮-২০০৯ইং তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হতে এক প্রতিবেদনে কিছু সংখ্যক প্রশিক্ষণ সনদ জাল ও ক্রয়কৃত বলে ভোগকৃত অর্থ ফেরত চাওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত তথ্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে ২৫-০৮-২০০৯ইং তারিখে আলমগীর কবির নামক ব্যক্তি অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু কোন ফল হয় নাই। কারণ জাফর ইকবালের কালো টাকায় সবাই চুপ হয়ে যায়। এতে নষ্ট হচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকা এবং লাভবান হচ্ছেন নিয়োগ বাণিজ্যকারী জাফর ইকবাল। এ সকল শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রতিষ্ঠাতার কাছে গেলে তিনি তাদের নিকট হতে চাঁদা নিয়ে সংশোধন করেছেন। যার জন্য তিনি বলেন বৃক্ষরোপন করেছি ফল ভোগ করবই। এমনকি কোন শিক্ষক-কর্মচারী কোন প্রশিক্ষন ও মেডিক্যাল ছুটি নিলে ছুটি অনুমোদন না করে বেতন স্থগিত করে চেক লিখে নিয়ে বেতন ছার দিয়ে থাকেন। এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এস.এস.সি (ভোক) নবম ও দশম শ্রেণির কেন্দ্র ফি ও ব্যবহারিক কেন্দ্র ফি এর অর্থ যথাযথ খাতে ব্যয় করতে না দিয়ে কেন্দ্র সচিবকে চাপ দিয়ে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে প্রতি বছর নিয়ে থাকেন। এবং কেন্দ্র সচিব সাহেবকে শিখিয়ে দেন যদি কেহ জিজ্ঞেস করে তাহলে বলেদিও যে বোর্ডে ও ডিসি অফিসে এ টাকা দিতে হয়। সে কারণে শিক্ষক-কর্মচারী অনেক সময় ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় কেন্দ্র সচিবের সাথে তর্কবিতর্ক হয়। এছাড়াও উক্ত জাফর ইকবাল তাড়াশ মহিলা ডিগ্রী কলেজের নিয়োগ বাণিজ্য ও অনিয়ম করে অন্তত কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে এবং বিভিন্ন স্থানে সরকারী সম্পত্তি দখলে নিয়েছে জালিয়াতি করে। যা প্রতারণা ও শাস্তি যোগ্য অপরাধ। এগুলোর সঠিকভাবে তদন্ত করলেই প্রমান পাওয়া যাবে। এ ঘটনা গুলোর প্রতিকার চেয়ে সম্প্রতি এলাকাবাসী সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত জাফর ইকবাল কথা বলতে রাজি হয়নি।
২৬ মার্চ/২০১৩/নিউজরুম.