‘প্রতিশোধ’ শব্দে তাঁর প্রবল আপত্তি। খেলাধুলার মতো নির্মল বিনোদনের জায়গায় প্রতিশোধ বলে কিছু দেখতে চান না। অস্ট্রেলিয়াকে ধবলধোলাই লজ্জায় ডোবানোর পর পুরোনো ভাবনাটাই আবার জানালেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। তবে একটা প্রতিশোধ নিয়েই ছাড়লেন ভারত অধিনায়ক। মাঠে যেমন প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিয়েছেন, সংবাদ সম্মেলনে এসে ধুয়ে দিলেন মাঠের বাইরের প্রতিপক্ষদের। একহাত নিলেন সমালোচকদের।
ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ায় আট টেস্টে হার, এরপর দেশের মাটিতেও ইংল্যান্ডের কাছে হারার পর চার দিক থেকে ধোনিকে বিঁধেছে সমালোচনার অসংখ্য তির। নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়া বা ভাগাভাগিরও পরামর্শ দিয়েছেন অনেকে। কিন্তু হাওয়া বদলে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ। পরিসংখ্যানের পাতায় ধোনি এখন ভারতের সফলতম টেস্ট অধিনায়ক। গাভাস্কার-আজহার-সৌরভরা যা পারেননি, অধিনায়ক ধোনি করে দেখিয়েছেন সেটাই, ৪-০-তে সিরিজ জয়!
সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে ধোনিও ছুড়েছেন পাল্টা তির। ধোনির নেতৃত্বের সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হয় রক্ষণাত্মক ফিল্ডিং সাজানো নিয়ে। পরশু সেটা নিয়ে উপহাস ভরে বললেন, ‘বীরেন্দর শেবাগের জন্য যখন প্রতিপক্ষ ডিপ পয়েন্ট, ডিপ থার্ড ম্যান ও ডিপ স্কয়ার লেগ রাখে, তখন সেটাকে বলা হয় কৌশল। কিন্তু এম এস ধোনি ডেভিড ওয়ার্নারের জন্য ডিপ পয়েন্ট, ডিপ স্কয়ার লেগ রাখলে বলা হয় রক্ষণাত্মক ফিল্ডিং। ব্যাটসম্যানের মানসিকতা বুঝেই তো ফিল্ডিং সাজাতে হবে, না! ক্রিকেট এখন পুরোপুরি বদলে গেছে…ফিল্ডারদের চাপিয়ে রাখার মতো আক্রমণাত্মক ফিল্ডিংয়ের দিন শেষ।’
এই সিরিজে চেন্নাই-দিল্লির উইকেট নিয়েও আলোচনা হয়েছে অনেক। এ ধরনের উইকেটে টেস্ট ক্রিকেট হওয়া ঠিক কি না, এক সাংবাদিকের এই প্রশ্নকে হেলিকপ্টার শটে গ্যালারিতে পাঠিয়েছেন ধোনি, ‘কোনটা “ঠিক” আর কোনটা “ভুল” আপনিই বলুন, কারণ আপনাদের মতামতই তো শেষ পর্যন্ত বিবেচনায় নেওয়া হয়..! যখন চার ফাস্ট বোলার খেলে (ইঙ্গিত অস্ট্রেলিয়ার দিকে), তখন বলা হয় সেটা কৌশল, কিন্তু যখন তিন বা চার স্পিনার খেলে, তখন সেটা হয়ে যায় বাজে উইকেট।’
এর আগে প্রতিশোধ প্রশ্নেও ধোনির উত্তর ছিল নিজস্ব ঢংয়ে, ‘৪-০, ২-২, ২-০ বা ৩-১, এসব কোনো ব্যাপার নয়…প্রতিশোধের মতো শব্দ আমি পছন্দ করি না। কারণ, পরের প্রশ্নটাই তাহলে আবার হয় “স্পিরিট অব ক্রিকেট নিয়ে”। প্রতিশোধ, স্পিরিট—শব্দগুলো খুব বিভ্রান্তিকর। তার চেয়ে বরং বলা যাক, আমাদের জন্য সিরিজটি ছিল দারুণ।’
ধোনি যখন সমালোচকদের জবাব দিচ্ছেন, উল্টো অবস্থা তখন ক্লার্ক-ওয়াটসনদের।অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যম ধুয়ে দিয়েছে ক্রিকেটারদের। সাবেক ক্রিকেটারদের কণ্ঠে হতাশা, সংশয়, সমালোচনা। ক্লার্কের নেতৃত্বে আস্তে আস্তে গুছিয়ে উঠতে শুরু করেছিল দল। কিন্তু তরুণ দলটি এত বড় ধাক্কা কীভাবে নেবে? ছন্নছাড়া দল অ্যাশেজের আগে কতটাই বা গুছিয়ে নিতে পারবে? অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট মহলে এখন এসবই আলোচনা। ওয়েবসাইট।
(২৬ মার্চ/২০১৩) নিউজরুম।