আজ থেকে ৬০ বছর আগে সফলভাবে পোলিও টিকা খাওয়ানো শুরু হয়েছিল। এই টিকা খাওয়ানোর ফলে দীর্ঘ ছয় দশকে বিশ্বের অনেক অঞ্চল থেকেই রোগটি নির্মূল হয়েছে।কিন্তু সহিংসতা, ষড়যন্ত্রতত্ত্ব ও তহবিল-সংকটের কারণে বর্তমানে অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে সফল এই টিকা কর্মসূচি।
পোলিও টিকা কর্মসূচির ক্ষেত্রে সবচেয়ে সফল দেশ ভারত। গত দুই বছরে দক্ষিণ এশীয় এই দেশটিতে একজনও এই রোগে আক্রান্ত হয়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পোলিও কর্মসূচির মুখপাত্র ওলিভার রোজেনবুয়ের বলেছেন, ভারতের সফলতা বিবেচনায় নিলে বলা যায়, পোলিও নির্মূল সম্ভব। ভাইরাসটি সমূলে উৎপাটন করা না গেলে ভবিষ্যতে রোগটি আবারও মহামারির আকার ধারণ করতে পারে।
সম্প্রতি পোলিও টিকা কর্মসূচির বিরুদ্ধে সহিংসতা এই কর্মসূচিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। পাকিস্তান ও নাইজেরিয়ার কিছু ধর্মীয় নেতা বলেছেন, এই টিকায় শূকরের মাংস রয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করতে এই টিকার মাধ্যমে তাঁদের বন্ধ্যা করে দেওয়া হচ্ছে। গত কয়েক মাসে এই দেশ দুটিতে বেশ কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী পোলিও টিকা খাওয়াতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গত ডিসেম্বর থেকে নাইজেরিয়ায় ১০ জন এবং পাকিস্তানে ২০ জন নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তানের অনেকে মনে করেন, এটা মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইয়ের কাজ। তারা আল-কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেনকে ধরতে ডিএনএ টেস্টের জন্য সাধারণ মানুষের নমুনা সংগ্রহ করছে। অবশ্য বিন লাদেন ইতিমধ্যে মার্কিন হামলায় নিহত হয়েছেন।
দাতব্য সংস্থা রোটারি ইন্টারন্যাশনালের পোলিও-নিরোধক কর্মসূচির প্রধান ক্যারোল পানডাক বলেন, ‘পোলিও টিকা কর্মসূচির ক্ষেত্রে এই গোষ্ঠী (ধর্মীয় নেতারা) যে একটা চ্যালেঞ্জ, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।’
পোলিও টিকা নিয়ে ভুল ধারণা দূর করতে ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক পোলিও কর্মীরা ধর্মীয় নেতা ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন। এএফপি।
২৬ মার্চ/২০১৩/নিউজরুম.