অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের এমন দুঃসময় অনেক দিন আসেনি। কমপক্ষে চারটি ম্যাচ হয়েছে এমন টেস্ট সিরিজে অসিরা এর আগে ধবলধোলাই হয়েছিল ৩৪ বছর আগে। ৩৪ বছর পর সেই দুঃস্বপ্ন আবার ফিরে এসেছে ভারতের মাটিতে। এই হতাশাজনক সিরিজের পর স্বভাবতই দেশের মধ্যে তীব্র সমালোচনার মুখে মাইকেল ক্লার্ক অ্যান্ড গং।গণমাধ্যমের সমালোচনার ভাষাও যেন বিষাক্ত তির হয়ে বিঁধছে তাদের বুকে। অসি গণমাধ্যম সদ্য সমাপ্ত ভারত সফরকে তাদের ইতিহাসের অন্যতম ‘বাজে’ হিসেবেও অভিহিত করে ফেলেছে ইতিমধ্যেই।
১৯৭০ সালে কোনো চার ম্যাচের সিরিজে অস্ট্রেলিয়া শেষবারের মতো ধবলধোলাই হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। দীর্ঘদিন পর সেই লজ্জা আবার ফিরে আসায় ক্ষুব্ধ-হতাশ অস্ট্রেলীয় গণমাধ্যম। লজ্জায় মুখ লুকিয়ে দেশে ফেরার এ মুহূর্তটিকে অস্ট্রেলিয়ার খেলাধুলার ইতিহাসের অন্যতম বাজে অধ্যায় বলছেন অনেকেই। অস্ট্রেলিয়ার ‘টেলিগ্রাফ’ পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এটা অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে সফর। আর গত ৩৪ বছরের মধ্যে দলের সবচেয়ে বাজে টেস্ট পারফরমেন্স। এই দৈন্য ভাবমূর্তি নিয়েই দেশে ফিরবে মাইকেল ক্লার্কের বিধ্বস্ত দল।’
দলের কড়া সমালোচনা করেছে ‘হেরাল্ড সান’ও। তাদের লেখার ভাষাটা আরও কঠোর। ‘সান’ লিখেছে, ‘একই কাজ বারবার করা সত্ত্বেও ভিন্ন ধরনের ফলাফল আশা করার নামই মস্তিষ্কবিকৃতি। এত কিছুর পরও অসি ব্যাটসম্যানরা যদি নিজেদের খেলার ধরনে পরিবর্তন না আনেন, তাহলে তাঁরা একদিন নিজেদের মানসিক হাসপাতালেই আবিষ্কার করবেন।’
ভারত সফরে অস্ট্রেলিয়ার প্রধান ব্যাটসম্যানদের তুলনায় বোলারদের পারফরমেন্সই তুলনামূলকভাবে অনেকখানি ভালো ছিল। যে কারণে প্রথমসারির ব্যাটসম্যানরা বিশেষভাবে সমালোচিত হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান গণমাধ্যমে। এ ছাড়া সমালোচনার তির বিশেষভাবে ছুটে গেছে সহ-অধিনায়ক শেন ওয়াটসনের দিকে।কারণ তিনিই ছিলেন দলের অন্যতম অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। কিন্তু পারফরমেন্সে তার কোনো ছাপই রাখতে পারেননি এই অলরাউন্ডার। ‘টেলিগ্রাফ’ পত্রিকায় এ প্রসঙ্গে লেখা হয়েছে, ‘যদি কোনো খেলোয়াড়ের পারফরমেন্সের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন হয়ে থাকে, তাহলে সেটা নিশ্চিতভাবেই ওয়াটসন। যেখানে পিটার সিডল ও মাইকেল স্টার্কের মতো বোলাররাও অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন, সেখানে তিনি একটি ভালো ইনিংসও খেলতে পারেননি। আর চূড়ান্ত অভিযোগের জায়গাটা হলো, ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান নাথান লায়নও এই সিরিজে ওয়াটসনের চেয়ে বেশি বল মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছেন। লায়নের ব্যাটিং গড়ও ওয়াটসনের তুলনায় বেশি।’ পুরো সিরিজে নাথান লায়ন খেলেছেন ২৪৪টি বল। যেখানে ওয়াটসন খেলেছেন ২৩৯টি। লায়নের গড় ১৮। ওয়াটসনের ১৬.৫।
(২৫ মার্চ/২০১৩) নিউজরুম।