ঢাকা: ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মলয় কুমার বোস হত্যা মামলায় ৯ জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
একই সঙ্গে এ মামলায় আরো ১২ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন একজনকে। তবে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় ৮ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।রোববার দুপুর দেড়টায় ঢাকার চতুর্থ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোতাহার হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। মুত্যৃদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ইমামুল হোসেন তারা মিয়া, বকুল মাতব্বর, মিজানুর রহমান, মামুন মাতব্বর, হাসেম মোল্লা, মোশারফ মোল্লা, মনিরুজ্জামান শেখ, উজ্জল বেপারী ও বেলায়েত হোসেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আজাদ মোল্লা, সোহেল মিয়া, আমিনুল মাতব্বর, সাত্তার মোল্লা, নজরুল শেখ, নসরু খান, হাতেম মোল্লা, ওলিয়ার রহমান, ইমরান মাতব্বর, আক্কাস শিকদার, মিরাজ সরদার ও সেন্টু মাতব্বর। দুই বছর কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামি হলেন- জাহাঙ্গীর ফকির।
সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর এসএম রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এ মামলার ৩০ জন আসামির মধ্যে ২৭ জনই জেল হাজতে আটক আছেন, বাকি ৩ জন পলাতক।
এসএম রফিকুল ইসলাম দাবি করেন, রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে।
জেল হাজতে আটক ২৭ আসামি হলেন- ইমামুল হোসেন তারা মিয়া, বকুল মাতব্বর, আজাদ মোল্লা, মিজানুর রহমান, মামুন মাতব্বর, হাসেম মোল্লা, সোহেল মোল্লা, মোশারফ মোল্লা, আমিনুর মতব্বর, ছাত্তার মোল্লা, উজ্জ্বল বেপারী, নজরুল শেখ, সাহিদ মোল্লা, নসরু খান, হাতেম মোল্লা, ফিরোজ খান, আমিনুর মোল্লা, অলিয়ার রহমান, বেলায়েত, ওমর শেখ, ইমরান মাতব্বর, মিরাজ সরদার, সেন্টু মাতব্বর, আসাদ মাতব্বর, বাবলু ফকির, দেলোয়ার মোল্লা ও সলেমান।
এ ছাড়াও মামলার ৩ আসামি মনিরুজ্জামান, জাহাঙ্গীর ফকির ও আক্কাস পলাতক আছেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের সালতা থানার আটঘর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মলয় কুমার বোস তার সঙ্গী সোহাগ খানের মোটরসাইকেলে চড়ে ফরিদপুর থেকে নিজ কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। তারা রনকাইল এলাকায় জনৈক নিমাই দাসের বাড়ির পাশে এলে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আসামিরা দেশিয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নসিমন নিয়ে মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। এরপর তারা কুপিয়ে মলয় বোসকে হত্যা করে ও সোহাগ খানকে গুরুতর আহত করে।
উল্লেখ্য, ঘটনার আগে থেকেই আসামিরা মলয় বোসকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। এ ব্যাপারে মলয় সালতা থানায় একটি জিডি ও ফরিদপুর আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৭ ধারায় একটি মামলা করেন। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ববিতা বোস বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
রায় ঘোষণার আগে মামলার চার্জশিটের ৩৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান, কাজী নজিব উল্যাহ হিরু ও এসএম রফিকুল ইসলাম। আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট টিএম আকবর ও অ্যাডভোকেট শরফুদ্দিন মুকুল।
মার্চ ২৪, ২০১৩