বিনোদন ডেস্ক বলিউডের অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের মুক্তির আবেদন করলেন প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার প্রধান বিচারক মারকান্ডে কাটজু। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের এক মামলার রায়ে ২১ মার্চ বৃহস্পতিবার সঞ্জয়কে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। তাঁকে ক্ষমা করতে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল কে শঙ্কর নারায়ণনকে অনুরোধ জানিয়েছেন কাটজু।
শঙ্করকে লেখা এক চিঠিতে কাটজু উল্লেখ করেন, ‘১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ে সংঘটিত সিরিজ বোমা হামলার সঙ্গে সঞ্জয়ের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয়নি। দোষ প্রমাণিত না হওয়া সত্ত্বেও এ মামলায় এখন পর্যন্ত যথেষ্ট দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তাঁকে। ভারতের সংবিধানের ১৬১ ধারায় সঞ্জয়কে ক্ষমা করে দেওয়ার আবেদন করছি আমি।’ এক খবরে এমনটিই জানিয়েছে পিটিআই।
কাটজু লিখেছেন, ‘২০ বছর আগের মামলায় সঞ্জয় এর মধ্যে ১৮ মাস জেল খেটেছেন।এই সময়টাতে ‘মুন্নাভাই’ সিরিজের ছবিসহ অনেক ভালো ছবি তিনি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। সঞ্জয় সংসারধর্ম পালন করছেন এবং বছর তিনেক আগে যমজ সন্তানের বাবা হয়েছেন। সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে তাঁকে ক্ষমা করে দিয়ে মুক্তি প্রদানের জন্য আপনাকে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।’
১৯৯৩ সালের মার্চ মাসে মুম্বাইয়ে ধারাবাহিকভাবে বেশ কয়েকটি স্থানে ১২টি শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরিত হয়েছিল। সেসময় ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণে মারা গিয়েছিলেন ২৫৭ জন। আহত হয়েছিলেন ৭০০ জনেরও বেশি। ভয়াবহ ওই সহিংসতা ঘটার পর বিস্ফোরণ মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততা এবং বাড়িতে অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগে ১৯৯৩ সালের এপ্রিল মাসে সঞ্জয়কে গ্রেপ্তার করে মুম্বাই পুলিশ।
এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে সঞ্জয় দত্তের বাড়ি তল্লাশি করে একটি একে-৫৬ রাইফেল ও একটি লাইসেন্সহীন নাইন এমএম পিস্তল খুঁজে পেয়েছিল পুলিশ।সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ এবং অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করার পর মুম্বাইয়ের আর্থার রোড জেলে রাখা হয়েছিল।
পরবর্তী সময়ে ২০০৬ সালে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগটি বাদ দেওয়া হয়। তবে আদালত তাঁকে অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে ছয় বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। পরে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলে জামিন পান সঞ্জয় দত্ত।
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি পেলেও গতকাল ২১ মার্চ ৫৩ বছর বয়সী জনপ্রিয় এ অভিনেতাকে অবৈধ অস্ত্র রাখার অপরাধে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। তাঁকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের আদেশও দিয়েছেন আদালত।
এদিকে সঞ্জয় দত্তের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এ মামলায় সঞ্জয় দেড় বছর সাজা ভোগ করেছেন। এই হিসাবে আর সাড়ে তিন বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে তাঁকে।সঞ্জয় আদালতের রায় মেনে নিয়েছেন এবং জেল খাটতে প্রস্তুত আছেন।
এ প্রসঙ্গে সঞ্জয়ের ভাষ্য, ‘বরাবরই আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলাম, আছি এবং থাকব। এই সাজার মাধ্যমে আমাকে যদি আরও দুর্ভোগের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়, তবে তা সয়ে নিতে আমাকে আরও অনেক বেশি শক্তি অর্জন করতে হবে। আমার বিশ্বাস, আমি তা পারব। অনেক কষ্ট হলেও আমাকে তা পারতে হবে।
(২২ মার্চ):নিউজরুম