নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য জরুরি

0
255
Print Friendly, PDF & Email

২২ মার্চ, ২০১৩।।

বাংলাদেশে আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়ে এখন অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করার পর এই অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশনের কিছু ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়া নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সাথে নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি বাতিল করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা গণমাধ্যমে এসেছে। নির্বাচন কমিশনের এ ধরনের সিদ্ধান্ত ভবিষ্যৎ জাতীয় নির্বাচনকে আরো অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলতে পারে।

এ পরিস্থিতিতে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে আগামী নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে মোতায়েন করার বিষয়টি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে। একই সাথে বিরোধী দলগুলোর সাথে আলোচনা না করে নির্বাচনী আসন বিন্যাসের ব্যাপারে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছে। প্রধান বিরোধী দল এমন এক সময় নির্বাচন কমিশনে গিয়েছে যখন দলটি সরকারের পতনের এক দফার আন্দোলন শুরু করেছে।

এ সময়ে নির্বাচন কমিশনে তাদের দাবি রাজনীতিতে একটি ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের উচিত প্রধান বিরোধী দলের এই ভূমিকা গুরুত্বের সাথে নেয়া। কারণ, বিরোধী দলের এসব দাবির ওপর ভবিষ্যতে সব রাজনৈতিক দলের অংশ নেয়ার মাধ্যমে ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।

এ ছাড়া প্রধান বিরোধী দলের পক্ষ থেকে জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের যে দাবি জানানো হয়েছে। তা কোনো অযৌক্তিক দাবি নয়। অতীতে প্রায় সব নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচনে পেশিশক্তি মোকাবেলা, জালিয়াতি ও কেন্দ্র দখলের মতো ঘটনা ঠেকানোর জন্য সেনা মোতায়েনের বিকল্প নেই। এ ছাড়া এ দেশের মানুষ এখনো প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থাশীল। তারা মনে করেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করলেই কেবল শান্তিপূর্ণ ও ভয়ভীতিহীন পরিবেশে ভোট দিতে পারবেন।

আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান বিরোধী দলের এসব দাবি যৌক্তিকভাবে মেনে নেয়া নির্বাচন কমিশনকে গ্রহণযোগ্য হিসেবে তুলে ধরার একটি চ্যালেঞ্জ। প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন কমিশন কতটা স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে তা এখন প্রমাণ করার সময় এসেছে।

আমরা আশা করব, আগামী নির্বাচন সব রাজনৈতিক দলের অংশ নেয়ার মাধ্যমে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে রাজনৈতিক দলের পরামর্শগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ক্ষমতাসীন দলের ইঙ্গিতে নয়, বরং স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালন করতে পারবে বলে আমরা আশা করি।

শেয়ার করুন