নিত্যানন্দ গাইন লেখাপড়ার জন্য বিগত কয়েক বছর ভারতের কলকাতায় ছিলেন। সে সময়ের তিনি দিনের অনেকটা সময় রেলস্টেশনে কাটাতেন। স্টেশন সদা চলমান স্থান। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। নাটকীয়তার বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে চলা তাঁর প্রথম একক প্রদর্শনীর উৎস মূল প্রথিত নিত্যানন্দের রেলস্টেশনে বসে কাটানো সময়ের অভিজ্ঞতার অভ্যন্তরে।প্রদর্শনীর নাম তাই ‘ফ্রম দ্য স্টেশন’।
নিত্যানন্দের শিল্পকর্মের মূলচরিত্র মানুষ। স্টেশনে বসে থাকা গল্পরত, অপেক্ষমাণ, চলমান মানুষ।ওয়েটিং ফর জার্নি-‘২’ ছাপচিত্র বার্মটিতে অপেক্ষমাণ মানুষের বিভিন্ন চরিত্র তৈরি হয়েছে। কাজের পেছনের বলে রেল অবরোধের খবরের অংশবিশেষ।কালিস্টার লিথোগ্রাফ পদ্ধতিতে কাজটি করা। শিল্পী জানালেন, এই পদ্ধতিতে ভারতে শিল্পীরা কাজ করেন। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো কেউ করেন না। এর জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যও এখানে এখনো পাওয়া যায় না। নিত্যানন্দ বাস্তবধর্মী ড্রয়িংকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তাঁর ছবিতে ড্রয়িং শক্তিশালী। অধিকাংশ ছবির মূল চরিত্রের বাস্তবধর্মিতা এবং পেছনের তলে সৃষ্ট বাক্য বা খবরের শব্দভান্ডারের নানা মাত্রিকতা তৈরি করে অ্যাবসার্ড অবস্থার। আলো-ছায়ার তীব্র বৈপরীত্যের সামঞ্জস্যের চেষ্টা ছবিতে নাটকীয় আবহ সৃষ্টি করে। রয়েছে এচিং এক্যুয়াটেন্ট মাধ্যমের করা কাজ। নিত্যানন্দ গাইন পারদর্শিতা দেখিয়েছেন ছাপচিত্র মাধ্যমের কৌশলগত চর্চার জায়গায়। চিন্তা ও শিল্প নির্মাণের প্রশ্নে ভবিষ্যতে আরও মৌলিকত্ব তৈরি করবেন হয়তো। ‘মাই ফ্রাসটেশন: আই ক্যান্ট হেলফ ইউ, দি ওল্ডম্যান ইত্যাদি এরিং এক্যুয়াটেন্টগুলোর বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়। ছাপচিত্র মাধ্যমের সীমাবদ্ধতার কারণেই হোক বা অন্য যে কারণেই হোক, নিত্যানন্দ রং ব্যবহারের ক্ষেত্রে ‘মিনিমালিস্ট’। যা শিল্পীকে স্বতন্ত্র জায়গায় যেতে সহায়ক হবে।
২১ মার্চ/২০১৩/নিউজরুম.