কয়েক বছরের ধারাবাহিক সাফল্যে উত্সাহিত হয়ে বরগুনার আমতলী উপজেলার প্রতিটি গ্রামের কৃষক ব্যাপক হারে তরমুজ চাষ শুরু করেছেন। কৃষকদের কাছে ধানের পর এখন তরমুজ দ্বিতীয় প্রধান ফসল হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।
মাত্র আড়াই মাসে তরমুজ চাষ করে মোট উত্পাদন খরচের চার গুণ আয় করা যায় বলে কৃষকদের মধ্যে তরমুজ চাষ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে বলে কৃষক ও কৃষিবিদেরা জানিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে প্রতিটি গ্রামেই প্রায় ৭০ শতাংশ কৃষক এ বছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে তরমুজ চাষ করছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে পারিবারিক চাহিদা মেটাতে ‘বাত্সরিক একটি ফল’ হিসেবে তরমুজ চাষ করেছেন। মোট চাষের ৮০ শতাংশই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে করা হয়েছে। অধিকাংশ তরমুজ খেতে এখন ফুল ও গুটি ধরেছে। আগামী এপ্রিল-মে মাসের মধ্যে ফসল উঠে যাবে বলে কৃষকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে। কৃষকদের তথ্য মতে, এ বছর উপজেলার (আমতলী-তালতলী) ১৪ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে তিন হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, তরমুজের পাশাপাশি ৫০ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি ও ১৫০ হেক্টর জমিতে খিরাই চাষ করা হয়েছে। আর এ কাজে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রায় ২০ হাজার কৃষক। গাজীপুর গ্রামের কৃষক রইস উদ্দিন বলেন, গত বছর তিন একর জমিতে তরমুজ চাষ করে প্রায় এক লাখ টাকা লাভ হয়েছিল। এই বছর তিনি পাঁচ একর জমিতে তরমুজ করেছেন। এ বছর সাড়ে তিন একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন সোনাখালী গ্রামের মাননাফ গাজী। তিনি বলেন, ‘মাইনসের দেহাদেহি গত বছর এক একর জমিতে তরমুজ ফলাইছিলাম।
প্রায় দুই হাজার পিস তরমুজ হইছিল। গড়ে ৪০ টাকা পিস বেইচ্ছি। খরচা বাদ দিয়া ৫৫ হাজার টাকা ঘরে তুলছিলাম।’ উপজেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে আরও জানা গেছে, সরকারি হিসাব মতে গত বছর আমতলী উপজেলায় তিন হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে প্রায় সাড়ে এত লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন তরমুজ উত্পাদিত হয়েছিল। সে বছর তরমুজ চাষ করে আমতলীর কৃষকেরা প্রায় ২১ কোটি টাকা আয় করেন। এ বছর কৃষক ও কৃষি বিভাগ আরও বেশি ফলন আশা করছে।
২০ মার্চ/২০১৩/নিউজরুম.