উইলিয়াম গোল্ডেনবার্গের নাম শুনেছেন? যদি একজন ভিডিও সম্পাদক হতে চান, এই ভদ্রলোক সম্পর্কে একটু খোঁজখবর নেওয়া শুরু করুন। এ বছর আরগো চলচ্চিত্র সম্পাদনার অস্কার জিতেছেন তিনি। অস্কারে সেরা সম্পাদনা শাখায় আরগোর সঙ্গে মনোনয়ন পেয়েছিল আরও একটি চলচ্চিত্র—জিরো ডার্ক থার্টি। অবাক না হয়ে উপায় নেই, এই চলচ্চিত্রটিরও সম্পাদক হিসেবে ছিলেন উইলিয়াম গোল্ডেনবার্গ।
অস্কারজয়ী এই চলচ্চিত্র সম্পাদককে প্রায় দুই মাস দিন-রাত সম্পাদনা (এডিটিং) প্যানেলে কাটাতে হয়েছে। ভিডিও সম্পাদকে কাজটাই এমন। যেকোনো ধরনের ভিডিও হোক, সেটা মিউজিক ভিডিও, নাটক, সিনেমা, তথ্যচিত্র কিংবা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, এর সম্পাদনার সময় খুব ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে আপনাকে।
ভিডিও সম্পাদনার জন্য ব্যবহূত হয় বেশ কিছু সফটওয়্যার। এর মধ্যে বেশি প্রচলিত ফাইনাল কাট প্রো, অ্যাডবি প্রিমিয়ার প্রো, ইডিয়াস, ভেগাস ইত্যাদি।পাঠশালার ভিডিও সম্পাদনা শাখার শিক্ষক মোহাম্মদ রোমেল জানান, সফটওয়্যার যা-ই হোক, সমস্যা নেই। কেননা, সব সফটওয়্যারের ফাংশন মোটামুটি একই। একজন এডিটরের কাজ হচ্ছে পরিস্থিতি তৈরি করা। এক শট থেকে আরেক শটে যাওয়া, চরিত্রগুলোকে ফুটিয়ে তোলা।
মূল কথা, গল্পটা বোঝা। গল্পই আসলে সম্পাদনার ধরনটা বলে দেবে।
ভিডিও সম্পাদকের কাজটা কি শুধুই প্রযুক্তিনির্ভর? এমনটা মনে করছেন না ভিডিও সম্পাদকেরা। কি-বোর্ড, মাউসের সঙ্গে বোঝাপড়াটা যেমন ভালো হতে হবে, তেমনি সৃজনশীলতা থাকাটাও জরুরি। ভিডিও সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ জানান, শুধু কম্পিউটারের কাজ জানাটাই যথেষ্ট নয়। পাশাপাশি সৃজনশীল হতে হবে। শব্দ, সুর, রং—এসব বুঝতে হবে। এ বিষয় নিয়ে পড়ালেখা করতে হবে। আর ভাবনাগুলো প্রখর হতে হবে। আর ভালো ভিডিও সম্পাদক হতে চাইলে সিনেমা দেখার কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশে এখন ভিডিও সম্পাদক হিসেবে কাজ করার অনেক সুযোগ তৈরি হয়েছে। নতুন নতুন টেলিভিশন চ্যানেল, প্রোডাকশন হাউস হচ্ছে।
ভিডিও সম্পাদনা শিখতে চাইলে যেতে পারেন পাঠশালায়। এখানে ভিডিও সম্পাদনার জন্য আছে বিভিন্ন মেয়াদের কোর্স। এক মাসের কোর্স ফি ছয় হাজার টাকা। তিন মাসের কোর্স ফি ১৫ হাজার টাকা।
ভিডিও সম্পাদনা শেখাচ্ছে ঢাকার ইস্টার্ন প্লাজা কমার্শিয়াল কমপ্লেক্সে অবস্থিত ঢাকা বিডি নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এখানে ৩২টি ক্লাসের জন্য আপনাকে দিতে হবে নয় হাজার ৯৯৯ টাকা।
কোনো প্রতিষ্ঠানে না গিয়ে চাইলে ঘরে বসে ইন্টারনেট ঘেঁটে শিখে ফেলা যায় ভিডিও সম্পাদনা। মনপুরা চলচ্চিত্রের সম্পাদক ইকবাল কবীর জানান, ঘরে বসে শেখা যায় না, তা নয়। কিন্তু ঘরে বসে শেখাটা কঠিন। কারণ, এটি একটি দলীয় কাজ। যদি সরকারিভাবে একটা ফিল্ম ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে এসব শেখার সুযোগ থাকত, তাহলে অনেকেই এই পেশায় আসতেন।
২০ মার্চ/২০১৩/নিউজরুম.