নাটোরের চলনবিল এলাকার সিংড়া ও তাড়াশ উপজেলায় ২০-৩০টি গ্রামের প্রায় এক হাজার একর জমিতে এবার খিরা চাষ করা হয়েছে। গত কয়েক বছর খিরা চাষে কৃষকেরা লাভবান হওয়ায় এ বছর খিরা চাষ হয়েছে দ্বিগুণ। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর ফলন বেশি ভালো হয়েছে। কিন্তু খিরার দাম এবার একেবারেই কম। গত বছর মৌসুমের শুরুতে বস্তাপ্রতি খিরার দাম ছিল দেড় হাজার টাকা। পরে দাম কমে গিয়ে নেমেছিল সর্বনিম্ন তিন শ টাকায়। এ বছর মৌসুমের শুরুতে এক বস্তা খিরা বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১৭ টাকায়, কিন্তু অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই দাম ভীষণ পড়ে যায়। এখন বাজারে এক বস্তা খিরা বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ৮০ টাকায়, সর্বোচ্চ ১৩০ টাকায়। আর যদি হরতাল হয় তাহলে সেই দিন খিরার মহাজনেরা আর খিরা কিনতেই চান না। এসব দিনে বাধ্য হয়ে চাষিরা এক বস্তা খিরা মাত্র ২০-৩০ টাকায় বিক্রি করে বাড়ি ফিরে আসেন। এ রকম হতে থাকলে কৃষক যে টাকা ব্যয় করে খিরা চাষ করেছিলেন, সেই টাকাই উঠবে না। কৃষকেরা খিরার ন্যায্য দাম না পেলে আগামী বছর আর কোনো জমিতে খিরা চাষ হবে বলে মনে হয় না। এখনো চলনবিলের কৃষকেরা আশায় আছেন খিরার দাম বাড়বে।
এমতাবস্থায় খিরাচাষিদের বাঁচাতে হলে বাংলাদেশের বিখ্যাত কারওয়ান বাজারসহ দেশের বড় শহরগুলোর কাঁচাবাজারের মহাজনেরা যদি ছোট ব্যবসায়ীর কাছ থেকে খিরা না কিনে সরাসরি খিরার খেত থেকে খিরা কেনেন, তাহলে খিরাচাষিরা ন্যায্য দাম পাবেন।
দিলরুবা রিজওয়ান দিনা
আয়েশ, সিংড়া, নাটোর।
বই পেলাম না!
বছরের গুরুত্বপূর্ণ তিন মাস অতিবাহিত হতে যাচ্ছে অথচ আমরা নবম শ্রেণীর কিছু হতভাগা (বিজ্ঞান বিভাগ) শিক্ষার্থী এখনো বই পেলাম না। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী আপনি নিশ্চয়ই জানেন, বছরের অন্যান্য উৎসবের চেয়ে নতুন বছরের প্রথম দিনে নতুন বই পাওয়ার আনন্দ কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমার প্রশ্ন, নতুন বছরের শুরুতে যে বই উৎসব আপনি শুরু করেছেন, সেই বইয়ের পাতার ঘ্রাণে আপনি নস্টালজিক হয়ে যান কি না? তাই যদি হন, তাহলে আপনাকে আমাদের এই মর্মবেদনা বুঝতে দেরি হওয়ার কথা নয়। কথিত আছে দিন দিন বিজ্ঞানশিক্ষা পিছিয়ে যাচ্ছে। আমরা যারা প্রত্যন্ত অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থী সাহস করে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ব বলে স্থির করেছি, তারা যদি বিজ্ঞান বিষয়ের বই পাওয়া থেকে বঞ্চিত হই, তাহলে এই ক্ষতি আমরা কীভাবে পুষিয়ে নেব?
একে তো নতুন সিলেবাস, তার ওপর মানসম্পন্ন বিজ্ঞান শিক্ষকের অভাব। গ্রাম অঞ্চলের শিক্ষার্থী হিসেবে পর্যাপ্ত ল্যাব ও বিজ্ঞান শিক্ষার উপকরণের অভাবে হাতে-কলমে শিক্ষা গ্রহণ থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। তার পরও যদি ওই বিষয়ের বইগুলো যথাসময়ে হাতে না পাই, তাহলে আমাদের অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তা সহজেই অনুমেয়। মাননীয় মন্ত্রী আপনাকে ধন্যবাদ এ জন্য যে বোর্ডের বই এখন আর বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না। তবে শুনেছি, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে সব বইয়ের সফট কপি দেওয়া আছে। কিন্তু তা তো আমাদের সাধ্যের বাইরে। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, আপনি অভিভাবক হিসেবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের বইপ্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করলে উপকৃত হব।
মো. মুজাহিদুল ইসলাম
এহাটা আর পি পি হাইস্কুল, মহম্মদপুর, মাগুরা।
সিদ্ধান্তহীনতা
মন্ত্রণালয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতা ও ফাইল চলাচলে ধীরগতি বর্তমানে আরও বেড়ে গেছে। মাঠ পর্যায় থেকে একটি সিদ্ধান্তের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠালে তা পেতে চার-পাঁচ মাস লেগে যায়। ফলে ওই সিদ্ধান্তটি যখন মন্ত্রণালয় থেকে মাঠ পর্যায়ে আসে তখন আর কোনো কাজেই আসে না। কিন্তু এই জন্য আবার দোষ দেওয়া হয় মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ফাইল ফেলে রাখার এই যে একটা অভ্যাস, এটা দূর করার কোনো প্রচেষ্টাই নেই। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দিনের পর দিন ফাইল খুলে রাখলেও তাঁদের কোনো জবাবদিহি নেই।মন্ত্রী বা সচিব এই জন্য কোনো দিন তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিয়েছেন, এর একটি নজিরও দেখতে পাবেন না। ব্রিটিশ আমলের সেই লাল ফিতার দৌরাত্ম্য এখনো রয়ে গেছে। প্রেসিডেন্ট এরশাদের সময় একটা আইন করা হয়েছিল, কোনো কর্মকর্তা তিন দিনের বেশি ফাইল তাঁর কাছে রাখতে পারবেন না। তাঁকে অবশ্যই ফাইলের সিদ্ধান্ত/স্বাক্ষর করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠাতে হবে। কিন্তু বর্তমানে এই আইনের কোনো কার্যকারিতা নেই। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাঁদের খেয়ালখুশিমতো চলছেন। সব সরকারই শুধু মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করেন। কিন্তু ফাইলের গতি আনার কোনো চেষ্টাই নেই। ফলে বেশির ভাগ প্রকল্প সময়মতো শেষ হয় না। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির টাকা কোনো বছরই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী খরচ হয় না। তাই সরকারকে বলব এ ব্যাপারে একটু নজর দিতে। মন্ত্রীরা যেহেতু বর্তমানে মন্ত্রণালয়ের প্রধান, তাই তাঁদেরই এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
মো. ইব্রাহীম খলিল, বাসাবো, ঢাকা।১৭ মার্চ/নিউজরুম