৫০ কোটি ৫২ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন

0
129
Print Friendly, PDF & Email

ব্যবসা ও অর্থনীতিডেস্ক: দেশের ব্যাংক খাতে আরও একটি অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়েছেএবার চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ী দুটি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ৫০ কোটি ৫২ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন
জানা গেছে, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের আব্বাস ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী আলী আব্বাস অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ঋণের নামে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের (বিকেবি) আগ্রাবাদ শাখা এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের (ইউসিবিএল) খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ তুলে নেনবিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তেও উঠে এসেছেসে অনুযায়ী আলী আব্বাসের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ এনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি মামলা দায়ের করেওই মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার আলী আব্বাসকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. হাসানুল ইসলামের আদালত
জানা গেছে, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পেয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস বিভাগ (এফআইসিএসডি) বিকেবির আগ্রাবাদ ও ইউসিবিএলের খাতুনগঞ্জ শাখায় তদন্ত চালায়এতে দেখা যায়, শাখা দুটির কর্মকর্তাদের যোগসাজশে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আলী আব্বাস সিসি (হাইপো) ও এলটিআর সৃষ্টি করে যথাক্রমে ৩০ কোটি ৬২ লাখ ও ১৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেনওই ঋণের বিপরীতে জমা দেওয়া মালামালও বেহাত হয়েছেআবার জামানতও অতিমূল্যায়িত দেখানো হয়
এই অবস্থায় বিকেবি ও ইউসিবিএলকে এসব ঋণ হিসাব শ্রেণীকৃত করে অনাদায়ী টাকা আদায়ের জন্য ঋণগ্রহীতা আলী আব্বাসের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকসে অনুযায়ী ব্যাংক দুটি গ্রাহকের বিরুদ্ধে বকেয়া আদায় ও ফৌজদারি মামলায় অভিযোগ গঠনের জন্য আইনি নোটিশ ইস্যু করেবিকেবির কাছে বন্ধক থাকা জামানত বিক্রয়ের জন্য নিলাম বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়কিন্তু আব্বাস ট্রেডিং এসব পদক্ষেপের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন দায়ের করলে আদালত এসব কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেনতবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্থগিতাদেশটি খারিজ করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেএখন মামলাটি শুনানির অপেক্ষায় আছে
পরবর্তী সময়ে এফআইসিএসডির অনুরোধে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) অভিযোগের তদন্ত করে বিকেবি ও ইউসিবিএলের ওই দুটি শাখায় আলী আব্বাসের ব্যাংক হিসাবগুলোতে সন্দেহজনক লেনদেনের অস্তিত্ব খুঁজে পায়
এরপর বিএফআইইউর তদন্ত প্রতিবেদন দুদকে পাঠানো হলে তারাও অনুসন্ধান চালায়দুদকের তদন্তেও প্রমাণিত হয়, আলী আব্বাস ঋণের টাকা অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন এবং এর কিছু অংশ দিয়ে তিনি ব্যক্তিগতভাবে বিশাল সম্পদের মালিক হয়েছেনবাকি অর্থ স্থানান্তরের কোনো হদিস পাওয়া যায়নিসে জন্য দুদক অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তরের অভিযোগ এনে তাঁর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে আদালতে মামলা করেতখন আলী আব্বাস চট্টগ্রামের সিএমএম আদালত থেকে আগাম জামিন নেনকিন্তু দুদকের অনুরোধে গতকাল জামিন বাতিল করে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত
এদিকে চট্টগ্রাম থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, আলী আব্বাস গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. হাসানুল ইসলামের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানালে আদালত তা নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মাহমুদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, আলী আব্বাস কৃষি ব্যাংক ও ইউসিবিএল খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে পণ্য আমদানির বিপরীতে ঋণ নিয়ে ওই অর্থ বিদেশে পাচার করেনঋণ পরিশোধ না করার অভিযোগেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে
দুদকের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল হক বলেন, ‘এই মামলায় ব্যবসায়ী আলী আব্বাস এক মাসের জামিনে ছিলেনজামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় গতকাল তিনি আদালতে হাজির হয়ে জামিনের জন্য আবেদন করেনআদালত তা নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন

 

১৫ মার্চ/নিউজরুম

 

শেয়ার করুন