সিলেবাস রেজিস্ট্রেশন

0
186
Print Friendly, PDF & Email

১৫ মার্চ, ২০১৩, গত বছর নবম শ্রেণীতে যেসব ছাত্রছাত্রী পুরোনো সিলেবাসে ১১০০ নম্বরের পরীক্ষা দিয়ে অকৃতকার্য হয়েছে, এবার তাদের অনুসরণ করতে হবে নতুন সিলেবাসআমার প্রশ্ন হচ্ছে, রেজিস্ট্রেশনের বিষয়টিরই বা কী হবে? কেননা, এ বছর ১২টি বিষয়ে ১২০০ নম্বরে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবেনতুন একটি বিষয়ে কীভাবে কোড নম্বর দেওয়া হবেপুরোনোদের ১১টি বিষয়ে কোড নম্বর দেওয়া হয়েছেঅতিরিক্ত একটি বিষয়ের জন্য কী পুরোনো শিক্ষার্থীদের নতুন রেজিস্ট্রেশন করানো হবে, নাকি পুরোনো রেজিস্ট্রেশনে চলবে
গ্রাম পর্যায়ের স্কুলগুলোতে এ সমস্যা প্রকট আকারে দেখা দিয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেগ্রামের শিক্ষকেরা শহরের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমনকি বোর্ডের সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগ করেন না এবং এই বিষয়ে সঠিক কোনো তথ্য বা সমাধান দিতে পারেন নাশিক্ষকদের নানামুখী অজ্ঞতার কারণে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা সিলেবাস এবং রেজিস্ট্রেশন সমস্যায় ভুগছেএ বিষয়ে সঠিক সমাধানের জন্য একজন অভিভাবক হিসেবে ঢাকাসহ সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, পরিচালনা পর্ষদের কাছে জরুরি সমাধান কামনা করছিসঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষাসচিবের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি
শেফালী আক্তার
অভিভাবক, নবাবগঞ্জ

চলনবিলের মেলা
দেশের বৃহত্তম চলনবিল অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী যে কয়েকটি মেলা অনুষ্ঠিত হয় সেগুলোর মধ্যে প্রধান দুটি হলো তাড়াশ উপজেলার বারুহাস মেলা এবং সিংড়া উপজেলার তিশিখালী মেলাপ্রতিবছর চৈত্র-চন্দ্রিমার ১৩ তারিখে জমিদারখ্যাত বারুহাস গ্রামে দুই দিনব্যাপী মেলা অনুষ্ঠিত হয়এই মেলার বয়স প্রায় দেড় শ বছরআগে বারুহাস গ্রামের পশ্চিমে ভদ্রাবতী নদীর তীরে এই মেলা বসত বলে সে সময় সবার কাছে এই মেলা ভাদাই মেলা নামে পরিচিত ছিলকালের বিবর্তনে ভাদাই থেকে এখন বারুহাস গ্রামের নামানুসারেই পরিচিতসিংড়া উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার পূর্বে পীর ঘাসী দেওয়ান মাজার ঘিরে তিশিখালী মেলা অনুষ্ঠিত হয়চৈত্র-চন্দ্রিমার ৬ তারিখে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই তিশিখালী মেলার বয়স সাড়ে তিন শ বছরেরও বেশিএই মেলার সবচেয়ে বড় ঐতিহ্য হলো, মেলার আগের রাতে মাজার ঘিরে শুরু হয় জমজমাট গানের আসরদূরদূরান্তের আগত ভক্ত-আশেকানরা দল বেঁধে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে গানের আসর বসানদেহতত্ত্ব গানে মুখরিত হয়ে ওঠে মেলার প্রাঙ্গণএখানে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানদের কোনো ভেদাভেদ নেইগানে গানে সবাই যেন এক কাতারে শামিল
মাত্র সাত দিনের ব্যবধানে মেলা দুটি ঘিরে উত্তর চলনবিল অঞ্চলের কয়েকটি গ্রামজুড়ে শুরু হয় সাজ সাজ রবমেলার অন্তত এক মাস আগে থেকেই চলে প্রস্তুতিমুড়ি ভাজা, খই ভাজা, আটার তৈরি ঝুরি তৈরি করা, ঘরবাড়ি পরিষ্কার, আত্মীয়স্বজনকে দাওয়াত, জামাই-ঝি নিয়ে আসা সব মিলে মেলাবাসীদের ব্যস্ততা আর আনন্দের সীমা থাকে নামেলার এই উসব ঘিরে বিশেষ করে জামাইদের খুবই মূল্যায়ন করা হয়মেলা উপলক্ষে জামাইকে দেওয়া হয় পরবি নামক অর্থ সম্মানীশ্বশুরবাড়ির এই পরবি পেয়ে জামাইরা মেলা থেকে রঙিন হাঁড়িতে মিষ্টি, দই, বড় মাছ ও মাংস কিনে থাকেনসে সময় অনেকেই এই দুটি মেলাকে জামাই মেলাও বলতেন
দুঃখের বিষয়, চলনবিলের ঐতিহ্য এই দুটি মেলার সেই জৌলুশ আর নেইআগের দিনের মতো জাঁকজমকভাবে আর উসব জমে ওঠে না
চলনবিলের গ্রামীণ লোকজ সংস্কৃতি যেন আজ হারানোর পথেমূলত প্রতিটি জাতিরই কিছু নিজস্ব সংস্কৃতি থাকেযা সে জাতির অহংকারবাঙালি হিসেবে তাই আমাদের এই গ্রামীণ লোকজ সংস্কৃতি মেলা উসবগুলোকে আগের মতো ফিরিয়ে আনা দরকার
সৌরভ সোহরাব
আয়েশ, সিংড়া, নাটোর

 

শেয়ার করুন