বাড়ির বউ চাকরি করবে!

0
203
Print Friendly, PDF & Email

১৩ মার্চ, ২০১৩,
বাড়ির বউ চাকরি করবে! এটা শুনলে একসময় আঁতকে উঠতেন পরিবারের লোকজনসেই পরিস্থিতির বেশ পরিবর্তন এসেছেতবে বদলির চাকরি হলে ভ্রুজোড়া কিছুটা হলেও কুঁচকে যায়তখন স্ত্রী, মা, বউমার ভূমিকায় নামতে হয় পরিবারের অন্য মানুষগুলোকেচাকরি বলে কথাতাই অনেক সময় বদলির চাকরিতে সংসার ছেড়ে দূরে থাকতে হয় নারীকে
পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, সময় পেলেই বাইরে ঘুরতে যাওয়াবদলির চাকরিতে এই মুহূর্তগুলো খুঁজে পাওয়া দুষ্করপরিবার থেকে দূরে থাকলে মন খারাপ হওয়াটাই স্বাভাবিকঅনেক সময় আত্মবিশ্বাসও কমে আসেমনে হয় পরিবার ও চাকরি কোনোটিতেই পুরোপুরি মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে না
রাজশাহী কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবেদা সুলতানার বদলির চাকরির কারণে মাঝে মাঝেই এ রকম মনে হয়তিন সন্তান ও স্বামী ঢাকায় থাকেনচাকরির জন্য ২০১১ সাল থেকে তিনি রাজশাহীতে আছেন১৫ দিন পরপর ঝটিকা সফরে আসেন সংসারেআর বাকি দিনগুলো মন থাকে পরিবারের কাছেআবেদা সুলতানা বলেন, ‘সন্তানদের খাওয়া, পড়াশোনাসবকিছু ঠিকঠাক চলছে কিনা, তা নিয়ে চিন্তিত থাকিবাসায় আমার মা-বাবা কিছুদিন পরপরই এসে থাকেনস্বামী সব সময় চেষ্টা করছেন সংসারটিকে সঠিকভাবে চালিয়ে নেওয়ার জন্যসন্তান ও স্বামী সব সময় আমাকে উসাহ দিয়েছেমন খারাপ হলে তারাও বুঝতে দেয় নাআমিও তাদের বুঝতে দিই না
বদলির চাকরিতে মানসিক দৃঢ়তা, ধৈর্য, মানসিক পরিপক্বতা সহায়ক ভূমিকা পালন করে বলে মনে করেন ইডেন মহিলা কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গাজী রুমানা রহমানস্ত্রীদের যেমন বদলির চাকরি হয়, তেমনি স্বামীদেরও বদলির চাকরি হয়দু ক্ষেত্রেই নারীকে অনেক বড় ভূমিকা পালন করতে হয়এই ভূমিকার জাঁতাকলে পড়ে অনেক নারীরই মনে হয়, চাকরিটা ছেড়ে দিলে কেমন হয়? এ বিষয়ে গাজী রুমানা রহমান বলেন, এটা কোনো সমাধান নয়একটার জন্য আরেকটাকে ছেড়ে দেওয়া ঠিক নাবরং পরিবারের অন্য মানুষগুলোকে এ সময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবেপরিবারের অন্যরা ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করলে অনেক সমস্যাই সহজে সমাধান করা যায়সম্ভব হলে ছোট সন্তানকে মা নিজের কাছেও রাখতে পারেনসন্তান একটু বড় হলে তাদেরকে মায়ের চাকরির গুরুত্ব বোঝাতে হবেএটিও বাবা-মাকে করতে হবেছোটখাটো সমস্যাগুলোর সমাধান তাক্ষণিকভাবে করে ফেলতে হবেনা হলে এগুলোই একসময় অনেক বড় হয়ে দেখা দেয়
চাকরি ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি প্রায়ই মনে করেন নুসরাত জাহানতবে স্বামী ও শাশুড়ি প্রতিবারই ধৈর্য ধরতে বলেনবিয়ে হয়েছে আড়াই বছর হলোকয়েক মাস আগে নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে ভোলা জেলার একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকে নিয়োগ পেয়েছেনচাকরিটি তাঁর কাছে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণকিন্তু স্বামী ও ছোট্ট গোছানো সংসারেই যেন মনটা পড়ে থাকেনুসরাত বলেন, ‘দূরে থেকে সংসার করা অনেক কঠিনসব খোঁজখবরই এখন নিতে হয় ফোনের মাধ্যমেসপ্তাহে এক দিন যাইসংসারের কাজ গুছিয়ে আসিআমার স্বামীও মাঝেমধ্যে ঘুরে যানঅবশ্য স্ত্রীর চাকরিতে ইতিবাচক মনোভাবই পোষণ করলেন স্বামীতিনি চাকরি করেন ঢাকায়যদিও স্ত্রী না থাকায় তাঁর জীবনটা এখন ব্যাচেলরদের মতোঅপেক্ষা করে আছেন, আবার দুজনের এক শহরে কর্মজীবন হবেতখন সংসার করবেন মন ভরে

 

শেয়ার করুন