কৃষি ডেস্ক: উখিয়া-টেকনাফে এবার মওসুমি ফল তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে অগ্রিম তরমুজ বিক্রি করতে পারায় তারা মূল্যও পাচ্ছেন আশাতীত।
উখিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপজেলা কর্মকর্তা ইউসুফ ভুইয়া জানান, চলতি মওসুমে উখিয়া উপজেলায় ৩৫ হেক্টর ও টেকনাফ উপজেলায় ২৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। বিশেষ করে উপকূলীয় ইউনিয়ন জালিয়া পালংয়ের ইনানী, নিদানিয়া, চোয়াংখালী, ছেপটখালী, ইমামের ডেইল, মনখালী, মাদারবনিয়া, বাহারছড়া ইউনিয়নের শাপলাপুর, শীলখালি, হ্নীলা, সাবরাং, শাহপরীরদ্বীপ ও হোয়াইক্যং এলাকায় এর চাষাবাদ হয়েছে খুবই বেশি। কম সময়ে তরমুজ চাষ বেশি লাভজনক হওয়ায় চাষিদের দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে।
ইমামের ডেইল এলাকার লাল মোহাম্মদ ও ছেপটখালী এলাকার আবদুস সালামের মতে, নতুন উৎপাদিত প্রজাতির লাল তীরের বীজ বপন করে আমরা স্বল্প সময়ে তরমুজ বিক্রি করতে পারছি। কম সময়ে বেশি ফলন হওয়ায় বাজারে তরমুজের দামও বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি থলেতে প্রচুর তরমুজের ফলন হয় এবং আকারে খুবই বড়। তরমুজের ওজন ১২ থেকে ১৫ কেজি পর্যন্ত হয় এবং স্বাদে খুবই মিষ্টি। চাষি নূর মোহাম্মদ বলেন, ৮০ শতক জমিতে লাল তীরের তরমুজ ক্ষেত করে ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা পাওয়া গেছে।খরচ হয়েছে মাত্র ৩৫ হাজার টাকা। তার মতে, ওই বীজ ব্যবহার করে যেসব চাষি তরমুজ ক্ষেত করেছেন সবাই লাভবান হবে নিঃসন্দেহে। শীলখালির আবুল কালাম জানান, প্রতি বছরই তিনি তরমুজ ক্ষেত করেন। কিন্তু এবার লাল তীরের বীজ বপন করে ক্ষেত করায় তরমুজের অভাবনীয় ফলন দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন। কারণ অন্যান্য বছর এভাবে তরমুজের ফলন আসেনি। বর্তমানে তরমুজ ক্ষেতে বেশি লাভবান হওয়ায় চাষিরা খুশিতে আত্মহারা। চাষিরা জানান, অগ্রিম ফলন দেখে ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন তরমুজ ক্ষেতে এসে ট্রাক, জিপ ও হাইচ মাইক্রোবাসে করে কক্সবাজার, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাজারজাত ও বিক্রি করছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে লাল তীর সিড লিমিটেডের এরিয়া ম্যানেজার আবদুুর রশিদ বলেন, ভিক্টর সুপার ব্র্যান্ডের বীজ বপন করে তরমুজ ক্ষেত করলে অধিক লাভের পাশাপাশি অল্প সময়ে ফলন পাওয়া যায়। এতে কৃষকের সময় ও ব্যয় কম লাগে।মাত্র ৬০-৬৫ দিনের মধ্যে তরমুজের ফলন ও বিক্রির উপযুক্ত হয়। অথচ অন্যান্য ব্র্যান্ডের বীজ বপন করলে ৭৫ থেকে ৮০ দিন পর্যন্ত সময় লাগলেও ফলনও সন্তোষজনক নয়। তিনি আরো বলেন, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে তরমুজ ক্ষেত শুরু করা হয়। মানসম্পন্ন ভালো জাতের লাল তীরের তরমুজ ক্ষেতে খরচ ও সময় কম এবং রোগবালাই না হওয়ায় কৃষকেরাই বেশি লাভবান হচ্ছেন। জুনিয়র অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, এক একর জমিতে বীজের প্রয়োজন হয় ৮০০ গ্রাম। তরমুজ ক্ষেতের পরিচর্যা, কীটনাশক ও রাসায়নিক সার প্রয়োগের বিষয়ে চাষিদের মাঠ পর্যায়ে হাতে-কলমে শিক্ষাসহ যাবতীয় পরামর্শ দেয়া হয়।
টেকনাফ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, চলিত বছর আবহাওয়া অনুকূল, সার, কীটনাশক সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকায় এবং ভালো জাতের বীজ সংগ্রহ করতে পারায় তরমুজ ক্ষেতে বাম্পার ফলন হয়েছে।
১০ মার্চ/নিউজরুম