১০ মার্চ, ২০১৩, অর্থনীতির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড, এ কথার সঙ্গে সবাই একমত। একটু ঘুরিয়ে বলতে চাই, অর্থনীতির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাই জাতির মেরুদণ্ড।
বাংলাদেশের জন্মের পর থেকে আজ পর্যন্ত ব্যাংকিং সেক্টরে হল-মার্ক কেলেঙ্কারির মতো এত বড় কেলেঙ্কারি এ দেশে হয়নি। এ ঘটনা তো এক দিনে সম্পন্ন হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয় কারোরই কি কোনো করণীয় ছিল না? এটা তো রোগী মারা যাওয়ার পর ডাক্তার এসে চেয়ে চেয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই নয়।
এবার আসি ডেসটিনির প্রসঙ্গে। এমএলএম মার্কেটিং পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও রয়েছে। যার নিজস্ব উৎপাদিত পণ্য প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মাধ্যমে কমিশনের ভিত্তিতে বিক্রি হয়। ডেসটিনির উৎপাদিত পণ্যের নাম কী? এদের পণ্যের ফ্যাক্টরি কোথায়? একবারও তো কোনো কর্তাব্যক্তি তা দেশবাসীর সামনে উচ্চারণ করেননি।
রাজধানীতে নিজস্ব ভবন তৈরি হলো, তখনো কি কর্তৃপক্ষের জানতে ইচ্ছা করে না ডেসটিনির আয়ের উৎস কী? আজ ডেসটিনি শাখা-প্রশাখা মেলে বিরাট বটবৃক্ষের মতো দাঁড়িয়ে আছে। এখন সুর উঠেছে, ডেসটিনির কার্যক্রম বৈধ নয়। প্রশ্ন হলো, এখন কেন এই কথা উঠেছে, আরও আগে কেন উঠল না?
পদ্মা সেতু আর বিশ্বব্যাংক নিয়ে আর কী বলব। এটা এমন গল্প, যার শুরু আছে শেষ নেই। একেবারে সাদামাটা কথা হলো, দেশের কর্তাব্যক্তিরা অনেকেই যেখানে বলাবলি শুরু করেছেন যে সেখানে কোনো অর্থের লেনদেন হয়নি। সেখানে আবার অর্থের দুর্নীতি হলো কোথায়? আমাদেরও প্রশ্ন, দুর্নীতিটা কোথায়? তাহলে ওই পিতার মৃত্যুর পর তার ছেলেরা কি বণ্টননামা অনুযায়ী সম্পত্তি ভাগ করে এবং তা বিক্রি করে অর্থ নিতে পারবে কি না? যদি পারে, তাহলে পদ্মা সেতুর বেলায় পারবে না কেন?
অন্যদিকে সমবায় সমিতি হলো স্বেচ্ছায় প্রণোদিত হয়ে কতিপয় ব্যক্তির নিজস্ব অর্থ দিয়ে কোনো মহৎ কাজ করা।প্রয়োজনে সদস্যদের মধ্যে অর্থের লেনদেন হতে পারে। কিন্তু সাধারণ জনগণ থেকে উচ্চ সুদে যেমন ২০-২৫% হারে আমানত সংগ্রহ করা এবং তা ৩০-৩৫% হারে ঋণ বিতরণ করা—এটা কোন পর্যায়ের সমিতি, তা ভালো বলতে পারবে সমবার অধিদপ্তর। দেশের প্রচলিত ব্যাংকিং সেক্টরে যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংক আমানত সংগ্রহের একটি সর্বোচ্চসীমা ১০% এবং ঋণ বিতরণ সর্বোচ্চসীমা ১৬% নির্ধারণ করে থাকে; যা আলোচিত সমিতি থেকে অনেক নিম্ন পর্যায়ের। কিন্তু ওই সমিতি বা মাল্টিপারপাস নামে দেশে যে অরাজকতা বিরাজ করছে, তা দেখার কি কেউ নেই? জানি বাংলাদেশ ব্যাংক বলবে, এটা সমবায় অধিদপ্তরের কাজ। আবার সমবায় অধিদপ্তর বলবে, এটা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাজ।
এসব কথা জনগণ শুনতে চায় না, তারা চায় অর্থনীতির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ—দেশের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে কাজ করুন। যেকোনো অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।
আবুল কাদের
যমুনা ব্যাংক লি., বরুড়া শাখা, কুমিল্লা।
ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ
রাজউক ঝিলমিল প্রকল্প প্লট বরাদ্দের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করে ২০০০ সালে এবং বরাদ্দ প্রাপকদের তালিকা প্রকাশিত হয় গত ৩০-০১-২০০১ তারিখে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাঁদের নামে বরাদ্দপত্র ইস্যু করা হয়নি। ইতিমধ্যে রাজউক ২০১১ সালে পুনরায় ঝিলমিল প্রকল্পের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করে এবং আবেদনকারীদের নামে বরাদ্দপত্র ইস্যু করে তাদের কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা বৃদ্ধি করেছে।
এ সংবাদ প্রথম আলোয় প্রকাশিত হওয়ার পর রাজউকে যোগাযোগ করা হলে ২০০০ সালের আবেদনকারীদের নামে বরাদ্দপত্র ইস্যুর ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানা যায়। কিন্তু এর কারণ আবেদনকারীদের জানানো হয়নি।
এ অবস্থায়, অবিলম্বে বরাদ্দপত্র ইস্যু করার জন্য রাজউক কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।
মুহিতুল হক
বিসিআইসি কলেজ, ঢাকা।