জলেভাসা জমির চাষাবাদ ব্যাহত

0
253
Print Friendly, PDF & Email

কৃষি ডেস্ক: রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা রুলকার্ভ অনুসারে না কমানোয় এ বছর বোরো মওসুমে রাঙ্গামাটির সাড়ে ১৩ হাজার একর জলেভাসা জমির চাষাবাদ ব্যাহত হয়েছেপ্রতি বছরের মতো এ বছর ওই পরিমাণ জমি পানি থেকে জেগে না উঠায় সময় মতো চাষ করতে পারেনি চাষিরাফলে চাষ করতে না পারায় বোরো আবাদসহ অন্যান্য ফসলের চাষ আশানুরূপ না হওয়ায় এবার খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা করা হচ্ছেরাঙ্গামাটি জেলায় এ বছর বোরো উপাদনের ল্যমাত্রা অর্জন হবে না বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় কৃষিবিদ ও চাষিরা

 

রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর রাঙ্গামাটি জেলায় আট হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছেএর মধ্যে প্রায় চার হাজার ৫০ হেক্টর জলেভাসা জমিতে এ চাষাবাদের ল্যমাত্রা ধরা হয়সূত্র মতে, হেক্টর প্রতি ৩.২ মেট্রিক টন হিসেবে এই পরিমাণ জমিতে প্রায় ২৭ হাজার মেট্রিক টন ধান উপাদনের প্রত্যাশ রয়েছেতবে কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ বেশি থাকায় এখনো অনেক জমিতে বোরো চাষের কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নিবোরো লাগানোর মওসুম প্রায় শেষ পর্যায়েএই অবস্থায় পানি না কমানোর কারণে বিপুল পরিমাণ জলেভাসা জমি পানির নিচে তলিয়ে থাকায় এ বছর বাকি বিপুল পরিমাণ জমিতে বোরো চাষা নাও হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষি বিভাগ

 

সূত্র মতে ইতোমধ্যে জলেভাসা জমির মধ্যে ৪০ শতাংশ জমিতে চাষাবাদ শুরু হয়েছেদুই-একদিনের মধ্যে কাপ্তাই হ্রদের পানি ছাড়া না হলে অবশিষ্ট জলেভাসা জমিতে এ বছর চাষাবাদের সম্ভাবনা নেইবর্ষা মওসুমে কাপ্তাই হ্রদের পানির নিচে ডুবে থাকা জমি শুকনা মওসুমে আবাদের উপযোগী হলে এসব জমিতে কৃষকেরা বিভিন্ন জাতের রবিশস্য ও সবজি চাষ করে থাকেএসব জমিকেই জলেভাসা জমি বলা হয়হ্রদের পানির উচ্চতা অনুসারে ৯৬ এমএসএলর ওপরে থাকা জমিকে জলেভাসা জমি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়

 

১৯৬০ সালে জলবিদ্যু পাদনের ল্েয খরস্রোতা কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে বাংলাদেশের একমাত্র কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদ সৃষ্টি করা হয়পানিবিদ্যু কেন্দ্রের বাঁধের কারণে সে সময় প্রচুর আবাদি জমি হ্রদের পানিতে ডুবে যায়বর্ষায় হ্রদে পানি জমা হওয়ার পর রুলকার্ভ অনুসারে বছরের বিভিন্ন সময় পানির স্তর বাড়ানো কমানোর কারণে এসব জলেভাসা জমি আবাদের আওতায় আসেতবে কৃষকেরা জানিয়েছেন, এ বছর দেরিতে পানি ছাড়ার কারণে অনেক জমিতে বোরো চাষে বিলম্ব হচ্ছেঅন্য দিকে একই কারণে বোরোর ফসল ঘরে তোলার আগেই বর্ষার পানি চলে আসতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রান্তিক চাষিরা

 

কৃষিবিদরা জানান, রাঙ্গামাটি জেলার ছয়টি উপজেলার বোরো রোপণ অনেকটা কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়া-কমার ওপর নির্ভরশীলজেলার প্রায় ২২ হাজার কৃষক পরিবার বোরো আবাদের সাথে সম্পৃক্তসাধারণত ডিসেম্বরে যখন কাপ্তাই হ্রদের পানি কমতে থাকে তখন এখানকার কৃষকরা বোরো চাষের প্রস্তুতি নেয়

 

৯ মার্চ/নিউজরুম

 

শেয়ার করুন