স্পোর্টস ডেস্ক: হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালের সামনে অপেক্ষায়গণমাধ্যমকর্মীরা। ভিড়ভাট্টা বেশি দেখে এগিয়ে এলেন এক নিরাপত্তাকর্মী।নেপাল থেকে দেশে ফিরছে বাংলাদেশ ফুটবল দল, জেনে খুবই খুশি হলেন। বললেন, ‘ওরা সত্যিই ভালো খেলেছে।’
এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের বাছাইপর্বে তিন ম্যাচেদুটি জয়—বাংলাদেশের সামনে চূড়ান্ত পর্বে যাওয়ার সোনালি হাতছানি। এমনচমৎকার পারফরম্যান্সে বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরাই নন, খুশি পুরো জাতি।
বিমানবন্দরেরআনুষ্ঠানিকতা সেরে ফুটবলারদের বের হতে সময় লাগল ঘণ্টা দেড়েক। তবুওহাসিমুখেই এলেন মিঠুন, ওয়ালি ফয়সাল, মামুনুলরা। সবাইকে ফুল দিয়ে বরণ করেনেওয়া হলো।
বাংলাদেল দলের নতুন ডাচ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফের জন্যঅভিজ্ঞতাটা একেবারেই নতুন। এর আগে ক্লাব পর্যায়ে কোচিং করালেও জাতীয় দলেরঅভিষেক হলো এবারই। প্রথম অভিযানটা বেশ উপভোগ করেছেন সেটা তাঁর কথাবার্তাশুনেই মনে হলো। বিমানবন্দর থেকে কালই ফিরে গেছেন হল্যান্ডে। তবে যাওয়ার আগেবললেন, ‘এই ছেলেদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাটা চমৎকার।’ খেলোয়াড়দের মধ্যেশেখার আগ্রহ আছে বলেই জানালেন, ‘সবাই ভালো থেকে আরও ভালো করতে চায়।প্রতিদিন ট্রেনিংয়ে কঠোর পরিশ্রম করেছে। ওদের মধ্যে লড়াকু মনোভাব আছে।সবারই সেরাটা দেওয়ার খুব আগ্রহ। এটাই আসলে খুব গুরুত্বপূর্ণ।’ খেলোয়াড়দেরভুলত্রুটিগুলো নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন তিনি, ‘আমাদের সব জায়গায় উন্নতির জায়গাআছে। রক্ষণভাগে একটু বেশি সমস্যা। দল হিসেবে গড়ে তুলতে হলে আসলে রক্ষণথেকেই শুরু করতে হবে।’
ফিলিস্তিনের বিপক্ষে হারটা হতাশাজনকই বললেনক্রুইফ। তবে পরের দুই ম্যাচ নিয়ে তাঁর বিশ্লেষণ ছিল ইতিবাচক, ‘নেপালেরবিপক্ষে ম্যাচটিকে আমি ডার্বি বলেছিলাম। আমাদের জন্য এটা বিশেষ একটা ম্যাচছিল। শুধু বাংলাদেশের মানুষের জন্য নয় নেপালের জন্যও ছিল সমানগুরুত্বপূর্ণ। প্রায় ২৫ হাজার দর্শকের সামনে ওদের ঘরের মাঠে ওদের ২-০-তেহারিয়েছি। এটাকে অবশ্যই ভালো ফল বলব। নর্দার্ন মারিয়ানা অবশ্য তত ভালো দলছিল না। তবে ৯০ মিনিটে আমরা পেয়েছি মাত্র ৪টা গোল। এটা হতাশাজনক। আমি আশাকরেছিলাম, অন্তত ৬-৭টা গোল হবেই।’ চূড়ান্ত পর্বে যাওয়ার ব্যাপারে বেশআশাবাদী ক্রুইফ, ‘মাত্র তিন গ্রুপের খেলা শেষ। এখনো আমরাই সেরা রানার্সআপ।আমাদের ভালো সুযোগ আছে পরের রাউন্ডে ওঠার।’
তরুণ গোলরক্ষক সোহেল এইসফরকে দেখছেন আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেওয়ার সিঁড়ি হিসেবে, ‘ফিলিস্তিনের সঙ্গেএমন খেলার পর আমাদের আত্মবিশ্বাস আরও উঁচুতে উঠে গেছে। আমরা দুর্ভাগ্যক্রমেওই ম্যাচে হেরেছি। দ্বিতীয় রাউন্ডে গেলে আরও ভালো খেলব।’
অভিজ্ঞমিডফিল্ডার আবদুল বাতেন কোমলের কথা, ‘এখান থেকে ভালো করার একটা প্ল্যাটফর্মপেয়েছি আমরা। এই টুর্নামেন্টের অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে অনেক কাজে দেবে আমাদের।আমরা উন্নতি করার একটা ট্র্যাক খুঁজে পেয়েছি।’ নেপাল থেকেই অবসরেরসিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মোহাম্মদ সুজন। তবে কাল বললেন অন্য কথা, ‘আমি অবসরনিলে আনুষ্ঠানিকভাবে সবাইকে জানিয়ে দিব।’ নেপালে দর্শক হিসেবে দেখেছেনতিনটি ম্যাচ। নিজে না খেললেও এই দল নিয়ে দারুণ আশাবাদী অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার, ‘এই দলের সবাই ভালো খেলেছে। এখন আমাদের একটাই কাজ, সাফল্যের ধারাবাহিকতাধরে রাখতে হবে। আশা করি, ভবিষ্যতে আমরা আরও ভালো খেলতে পারব।’
৮ মার্চ/নিউজরুম