৭ মার্চ, ২০১৩ স্বপ্নভঙ্গের বৃত্তি
আমার সন্তানের শিক্ষাজীবনের প্রথম পাঁচ বছরের পরিশ্রম, নিষ্ঠা এবং পঞ্চম শ্রেণীর প্রতিটি দিনের অধ্যবসায় আমি দেখেছি, অনুভব করেছি ওর আত্মবিশ্বাসকে। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত, এমনকি পঞ্চম শ্রেণীর নির্বাচনী পরীক্ষায় পর্যন্ত ওর অবস্থান ছিল মেধাতালিকার প্রথম দিকে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ সালের পিএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে প্রাথমিক বৃত্তির ফল প্রকাশিত হয়। অন্য অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীর মতো আমার সন্তানও বৃত্তি পায়নি। বৃত্তি পেয়েছে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেসব শিক্ষার্থী, যারা গত পাঁচ বছরে কখনো কোনো পরীক্ষায় তার কাছাকাছি নম্বরও পায়নি। ওর কথামতো, পরীক্ষা খুব ভালো হয়েছে।
আমি এখন সন্তানের কষ্টেভরা হতাশ মুখটা দেখছি। আর দেখছি ওর ভেঙে যাওয়া আত্মবিশ্বাসকে। মেধাবী ছাত্রের আত্মবিশ্বাস ভেঙে যাবে, আর আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার কর্তাব্যক্তিরা শুধু ‘চমক দেওয়া’ শিক্ষাব্যবস্থার কথা বলবেন, তা তো হয় না!
আমি একজন ভুক্তভোগী অভিভাবক।আমার সম্পূর্ণ অধিকার আছে—বৃত্তি দেওয়ার ব্যাপারে কোন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে, তা জানার। সেটা কি নম্বরের ভিত্তিতে? তাহলে কেন আমার সন্তান জানতে পারবে না তার প্রাপ্ত নম্বর? গোপন নম্বরের ভিত্তিতে কি কোনো রাষ্ট্রের জাতীয় মেধা নির্ধারণ করা উচিত? শিক্ষার পেছনে যদি সততা না থাকে, তাহলে কী মূল্যবোধে বড় হবে আমাদের সন্তানেরা? আমার মেধাবী সন্তান যদি এখন পুরোপুরি আত্মবিশ্বাস হারিয়ে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ওপর বিরূপ মনোভাব নিয়ে বড় হয়—এর দায় কে নেবে? দেশও যে মেধাশূন্য হয়ে পড়বে, সেটাতেও কি কারও কিছু যায়-আসে না?
শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আমার আন্তরিক অনুরোধ, আপনি অনতিবিলম্বে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করুন এবং ফলাফল পুনর্মূল্যায়ন করে সংশোধিত ফলাফল প্রকাশ করে আমার সন্তানের মতো অসংখ্য মেধাবী শিক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিন।নিদেনপক্ষে পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর প্রকাশ করার ব্যবস্থা করুন।
জেসমিন আখতার, অভিভাবক
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা।
পানির কষ্ট
আমরা পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার ২, ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের অধিবাসী।আমাদের এই ওয়ার্ডগুলোর ভেতরে দিয়ে যে খালটি প্রবহমান, এর পানির ওপর নির্ভর করতে হয় দৈনন্দিন যাবতীয় কাজে। অথচ এই খালের ব্যাংকপাড়া থেকে বহেরাতলা অংশে কোনো একটি স্বার্থান্বেষী মহল বাঁধ দিয়ে পানি শুকিয়ে ফেলেছে। জানা গেছে, খালের পাড়ে নাকি প্রশস্ত সড়ক নির্মাণ করা হবে। রাস্তা থাকার পরেও কী কারণে আবার প্রশস্ত রাস্তা করার দরকার পড়ল, তা বোধগম্য নয়। অথচ যেসব সড়ক বছরের পর বছর চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে, সেগুলো সংস্কার করা হচ্ছে না। গত বছর মাসের পর মাস বন্ধ রেখে অপ্রয়োজনীয় স্লুইসগেট নির্মাণ করা হয়েছিল। ওই সময়ের সীমাহীন পানির কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে না-পেতেই আবারও এ বছর দুই পাশেই বাঁধ দেওয়া হলো। আমাদের এ পৌরসভায় পানি সরবরাহের কোনো ব্যবস্থা নেই। খালের পানিই একমাত্র ভরসা। নলকূপের পানিও লবণাক্ত হওয়ায় ব্যবহারের অনুপযোগী। কারও কারও পুকুর থাকলেও তা ব্যবহার করতে দিচ্ছেন না। তা ছাড়া এখন শুষ্ক মৌসুমে পানিও শুকিয়ে যাচ্ছে। তাই এই নিদারুণ পানির কষ্ট থেকে আমাদের বাঁচান।
শ্রাবন্তী দাস
মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর।