মেধার সঠিক মূল্যায়ন

0
263
Print Friendly, PDF & Email

মার্চ, ২০১৩, মেধার সঠিক মূল্যায়ন
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রোববার চিঠিপত্র কলামেমেধাবৃত্তি নিয়ে বাণিজ্যশিরোনামে লেখার পত্রলেখকের সঙ্গে আমি সম্পূর্ণএকমত পোষণ করছিএ ব্যাপারে আমিও একজন ভুক্তভোগী
আমার মেয়ে ভিকারুননিসানূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল প্রভাতি শাখার একজন শিক্ষার্থীগত বছরপঞ্চম শ্রেণীতে স্কুলের প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় এবং চূড়ান্ত মডেলটেস্টে তার শাখায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলশুধু তার শাখায়ই নয়, পঞ্চমশ্রেণীর পাঁচটি শাখা মিলে তার নম্বরই সর্বোচ্চতার পিএসসি পরীক্ষাও খুবইভালো হয়েছেপাস ফল ছিল জিপিএ-৫কিন্তু দুঃখের বিষয়, বোর্ডের বৃত্তিরতালিকায় তার নাম নেইতার সঙ্গেও অনেক মেধাবী ছাত্রীর একই দশামেয়েটি অনেককেঁদেছেকিন্তু তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমার ছিল নাওর কান্নার কাছেআমি ছিলাম অসহায়পত্রলেখকের মতো স্কুলশিক্ষিকার সঙ্গে যোগাযোগ করে লটারিরকথা জানলামআমার প্রশ্ন হলো, খাতা দেখার পর একটা বিষয়ভিত্তিক নম্বরপত্রনিশ্চয়ই তৈরি করা হয়তাহলে সেটা পরীক্ষার্থীদের দেওয়া হচ্ছে না কেন? পরীক্ষার নামে কেন এ প্রহসন? তাহলে কি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বৃত্তি শাখারঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ভাষায় বৃত্তির বিষয়টি গোপন রাখার জন্যই এ রকম করাহচ্ছেএকজন পরীক্ষার্থী ৮০ পেলেও এ+, আবার ৯৫ পেলেও এ+তাহলে এ+ দিয়ে কিএকজন পরীক্ষার্থীর মেধার সঠিক মূল্যায়ন হচ্ছে? জীবনের প্রথম পাবলিকপরীক্ষায় একজন পরীক্ষার্থী যদি তার মেধা ও শ্রমের সঠিক মূল্যায়ন না পায়, তাহলে সে পড়ালেখায় উসাহ হারাবে
তাই মেধার সঠিক মূল্যায়নের ব্যাপারেএখনই পদক্ষেপ নেওয়া দরকারপিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় শুধু এ+ এর সনদপত্র নাদিয়ে নম্বর দেওয়া হোকসব শেষে পত্রলেখকের সঙ্গে আমিও বলতে চাই, পুনর্মূল্যায়নের মাধ্যমে মেধা অনুসারে মেধাবৃত্তির ফলাফল প্রকাশ করা হোক
সাহানা কবির, সিদ্ধেশ্বরী ঢাকা

চাকরির বয়স
গত২৬ ডিসেম্বর ২০১১ সরকারি চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা ৫৭ থেকে বাড়িয়ে ৫৯ বছরকরা হয়েছেকিন্তু দুঃসংবাদ হলেও সত্য, চাকরিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরপ্রবেশের সময়সীমা যা ছিল, তা-ই আছে অর্থা ৩০ বছরই আছেএর যুক্তি হিসেবেসরকারি মহল থেকে গড় আয়ু বাড়ার কারণের কথা বলা হয়েছিলতাহলে প্রশ্ন, কেন গড়আয়ু বাড়ার কারণে চাকরিতে প্রবেশের সময়সীমা বাড়বে না? জাতীয় সংসদে স্পিকার ১ফেব্রুয়ারি ২০১২ ৭১ নম্বর বিধিতে জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিশের ওপর আলোচনার সময়সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ করার প্রস্তাব করেনএ প্রস্তাব যুগোপযোগী, যুক্তিসংগত ও সময়ের দাবি
বর্তমান সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময়সীমা১৮-৩০ বছরএ ছাড়া বাংলাদেশ সরকারের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী বিসিএসসহ প্রথম ওদ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরির প্রজ্ঞাপনে বয়সসীমা ২১ বছর বিদ্যমান আছেএটা বর্তমান বাস্তবতার নিরিখে কতটা যুক্তিসংগত? পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেসাধারণত মধ্যবিত্ত ও গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীরা অনেক স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হয়কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতা, ক্ষমতা প্রদর্শনে মারামারি ইত্যাদি মিলিয়েশিক্ষাজীবন শেষ করতে সাত-আট বছর লাগেএরপর চাকরিতে আবেদন, এর কচ্ছপ গতিরনিয়োগ-প্রক্রিয়া শেষ করতে ৩০ বছরের বেশি বয়স হয়এই স্বল্প সময়ের মধ্যেযোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও একজন শিক্ষার্থীর ভালো কোনো সরকারি কিংবা বেসরকারিচাকরিতে প্রবেশের সুযোগ থাকে না
বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতোই সরকারিচাকরিতে অবসরের সময়সীমা দুই বছর বাড়ানোর ফলে এই দুই বছর চাকরিতে আবেদন ওনিয়োগ বন্ধ থাকবে বা কমে যাবেফলে এই দুই বছরের মধ্যে যাঁদের চাকরিতেপ্রবেশের বয়সসীমা শেষ হয়ে যাবে, তাঁদের প্রতি কি অবিচার করা হলো না? তাছাড়া যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায় বয়সসীমা ৩৫ থেকে ৪০বছর পর্যন্তভারতেও বয়সসীমা ৩৫ বছর
তাই বাস্তবতার নিরিখে সরকারের কাছেআকুল আবেদন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ করা হোকতাহলে যাঁদের চাকরিতে প্রবেশের বয়স ইতিমধ্যে চলে গেছে, তাঁরা যেমন সুযোগপাবেন, তেমনি লাখ লাখ তরুণ ও যুবকেরা মেধা-জ্ঞান কাজে লাগিয়ে স্বপ্নগুলোকেবাস্তবায়ন করতে পারবেনআর এতে দেশ ও জাতির কল্যাণও হবে
সাধন সরকার, শিক্ষার্থী, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

 

শেয়ার করুন