ডেস্ক রিপোর্ট: মিসরের ‘রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার চেতনা সৃষ্টিতে’ বিবদমান সরকার ওবিরোধী দলের মতবিরোধ অতিক্রম করা জরুরি। শনিবার কায়রোয় মার্কিনযুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এ কথা বলেন। মার্কিন এ নয়াপররাষ্ট্রমন্ত্রী মিসরের বিরোধী দল ও সরকারকে দেশের কল্যাণে সমঝোতায় আসারআহ্বান জানান।
কেরি বলেন, ‘ব্যাপারটি পুরোপুরিই মিসরের সর্বস্তরের জনগণের—ঠিক এই ইস্যুতেসব পক্ষের অবশ্যই তাত্পর্যপূর্ণ সমঝোতায় আসার সদিচ্ছা থাকতে হবে।’
মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় কেরি জানান, আইএমএফের ৪.৮ বিলিয়ন ডলার ঋণে চুক্তি করতে অর্থনৈতিক সংস্কার বিষয়ে একমতহওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেরি বলেন, আইএমএফের এ চুক্তি সম্পন্ন হয়ে গেলেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রতিশ্রুত গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা পাওয়ারপথও খুলে যাবে। গত বছর প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা মিসরকে অর্থ সহায়তা দেয়ারপ্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কর্মকর্তারা বলছেন, কেরির এ বক্তব্যের পর মূলতউদারতাবাদী ও ধর্মনিরপেক্ষবিরোধী দলগুলো যুক্তরাষ্ট্র সফরকে অনিশ্চিত করেতুলল। মিসরে মার্কিন দূতাবাসের মাধ্যমে দেশটির সরকার ও বিরোধী দলের ১১ জনকেএকটি আলোচনায় যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এই ১১ জনের মধ্যে৬ জন বিরোধী দলের। যারা কিনা দেশটির এপ্রিলের পার্লামেন্ট নির্বাচন বয়কটকরবে বলে এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছে। মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল আমরেরসঙ্গে বৈঠকের পর কেরি স্বীকার করেন যে, বিরোধী ও সরকারের মধ্যে গভীরমতবিরোধ অতিক্রম করাটা খুবই কঠিন।
রোববার প্রেসিডেন্ট মুরসির সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেরির বৈঠকঅনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কেরি জানান, তিনি বিষয়টি প্রেসিডেন্ট মুরসির সঙ্গেবৈঠকে তুলে ধরবেন।
এদিকে মিসরে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আগমনে পোর্ট সাইদ এলাকায় ব্যাপক প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে জনগণ।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, অন্তত ৫শ’ লোক বিক্ষোভ করে। তারা এ সময় ওইএলাকার পুলিশ স্টেশন লক্ষ্য করে পাথর ও পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে তারা পুলিশ স্টেশনে আগুন লাগিয়ে দেয়। একইসঙ্গে তারা ফায়ারসার্ভিসের গাড়িও অবরোধ করে রাখে। প্রতিবাদকারীদের দুজন পুলিশের ট্রাকেরআঘাতে আহত হওয়ার পর তারা পুলিশ স্টেশনের কাছে চলে আসে।
অপরদিকে সরকার এবং ধর্মনিরপেক্ষবিরোধী দলগুলোর মধ্যে টানা প্রায় প্রতিদিনইসংঘর্ষ ও বিক্ষোভের ঘটনা চলছে। বিরোধী দলগুলো অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে।বর্তমানে তাদের অবরোধের ৩য় সপ্তাহ চলছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কেরির সফরেরঅন্যতম লক্ষ্য হলো মিসরের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে দেশটিতে অর্থনৈতিকসঙ্কটের উত্তরণ ঘটানো। কেরি বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেন মিসরের অর্থনৈতিকসংস্কারের ওপর, যাতে আইএমএফের ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ পাওয়া সহজ হয়ে ওঠে।
৪ মার্চ/নিউজরুম