কৃষি ডেস্ক: বুনো মৌমাছি ও শস্যফুলের পরাগায়ণকারী কীটপতঙ্গের সংখ্যা কমে যাওয়ায় বিশ্বের কৃষি খাতে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কানাডার ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এ তথ্য জানিয়েছেন। সায়েন্স সাময়িকীতে এ-সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রতিবেদন গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে।
শস্যবীজ ও ফুল উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী বুনো মৌমাছিদের ওপর গবেষণায় নেতৃত্ব দেন বিজ্ঞানী লরেন্স হার্ডার। অন্তত ৫০ জন গবেষক ২০টি দেশের ৬০০টি খামার থেকে এ ব্যাপারে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন।
পরাগায়ণকারী কীটপতঙ্গ সাধারণত বুনো বা আংশিক প্রাকৃতিক পরিবেশে (যেমন: বনাঞ্চলের সীমানা, ঝোঁপঝাড় ও তৃণভূমি) বসবাস করে। কৃষিজমির অব্যাহত সম্প্রসারণের কারণে বুনো মৌমাছিদের এসব আবাস ধ্বংস হয়েছে। পরিণামে বিভিন্ন শস্যের উৎপাদন কমেছে।
সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা বাদাম, কফিসহ অন্যান্য বীজ ও ফল উৎপাদনকারীর ৪১টি প্রজাতির ওপর পরাগায়ণকারী বুনো কীটপতঙ্গের প্রভাব বিশ্লেষণ করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ফসলের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে ব্যবহূত কীটনাশক পরাগায়ণকারী কীটপতঙ্গ ধ্বংস করে। ফলে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হয়। টমেটো, কফি ও তরমুজের উৎপাদনের ওপর এই প্রভাব সবচেয়ে বেশি। ১৯৭১-৭২ সালের তথ্য-উপাত্ত এবং ২০০৯-১০ সালের তথ্য-উপাত্তের তুলনা করে দেখা যায়, বুনো মৌমাছির ১০৯টি প্রজাতির অর্ধেকই বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
গবেষক লরেন্স হার্ডার বলেন, উদ্ভিদের বংশবিস্তারে খামারে নিয়ন্ত্রিত পরাগায়ণকারী কীটপতঙ্গের তুলনায় বুনো মৌমাছি বেশি কার্যকর। তাই এই প্রাণীটির অভাব অন্য কোনোভাবে পূরণ করা কঠিন। খামারে বসবাসকারী মৌমাছি দিয়ে এই সংকট দূর করা যাবে না। কাজেই বুনো মৌমাছি রক্ষার ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
নিউজিল্যান্ডের ক্যান্টারবারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জ্যাসন টাইলিয়াংকিস বলেন, বুনো মৌমাছির মতো কীটপতঙ্গ বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা সুরক্ষিত রেখেছে। এএফপি ও গার্ডিয়ান।
৪ মার্চ/নিউজরুম