২ মার্চ, ২০১৩, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি চিঠিপত্র কলামে একজন অভিভাবক অষ্টম শ্রেণীর বৃত্তি নিয়ে যে বাণিজ্য চলছে, তা তুলে ধরেছেন। আমিও একই মত ব্যক্ত করছি।
জেএসসিতেএ-প্লাস পাওয়াটা একটা কমন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেখা যায়, যার ক্লাসেররোল এক, সেও এ-প্লাস পায়, আবার রোল ৬৫, সেও এ-প্লাস পায়। তাই বলে দুজনেরপড়াশোনার মান কি সমান? মেধা কি সমান? আগে জানতাম, মেধাবীদের স্বীকৃত করারএকটি মাধ্যম হচ্ছে বৃত্তি। কিন্তু এই বৃত্তিই যদি মেধার সঠিক মূল্যায়ন করতেনা পারে, তাহলে বৃত্তির মূল্যটা কোথায়?
এবারের জেএসসিতে দেখা গেছে, যারা ক্লাসের প্রথম দিকের ছাত্রছাত্রী, তারা বৃত্তি না পেয়ে যাদের ক্লাসরোল ৩০-৪০-এর ঘরে, বেশির ভাগ বৃত্তি তারাই পেয়েছে। জেএসসি নিয়ম চালু নাথাকলে যারা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশই নিতে পারত না, যারা স্কুলে কখনো এ-প্লাসইপায় না, তারাই যদি বৃত্তির যোগ্য হয়, তাহলে ভালো ছাত্রছাত্রীদের মেধার কিএভাবেই অবমূল্যায়ন ঘটতে থাকবে? আমি এমন বলছি না যে, পেছনের দিকের একটাশিক্ষার্থীর পক্ষে কখনোই ভালো করা সম্ভব নয়। হ্যাঁ, চেষ্টা, উদ্যম, পরিশ্রমতাকে সব সাফল্য এনে দিতে পারে। কিন্তু তাই বলে যারা বৃত্তি পেল, তাদেরবেশির ভাগই পেছনের দিকের শিক্ষার্থী, কেবল দু-একজন ভাগ্যক্রমে প্রথমসারির—সেটা কি অবাক করার মতো নয়?
আমার একজন সহপাঠী বৃত্তি পায়নি বলে রাগকরে নাকি বই পুড়িয়ে ফেলেছে। এটা হয়তো একটা পাগলামি। কিন্তু পুরো এক বছরেরচেষ্টা, পরিশ্রমের প্রাপ্য যদি এই হয়, তাহলে কষ্টটা আমার মতো ভুক্তভোগীযারা, তারাই বুঝতে পারবে। অভিভাবকদের কষ্টের মাত্রাটা তো আরও বেশি। কিন্তুএই কষ্টের প্রতিদান কি এই?
যদি নাম্বারের ওপর ভিত্তি করে বৃত্তি দেওয়াহয়, তাহলে সেই ভিত্তিটা কেন জানতে পারব না? যারা মেধাবীদের উদ্যম, পরিশ্রমকে এভাবে ব্যর্থ করে দিচ্ছে, তারা জানে না দেশের কত বড় ক্ষতি করছে। এবিষয়ে ভাববার সময় কি এখনো আসেনি?
ইসরাত আরা
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ডকলেজ, ঢাকা।