সাঈদীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড আদেশ

0
191
Print Friendly, PDF & Email

ডেস্ক রিপোর্ট: হত্যা, লুণ্ঠন, নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল

ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর বৃহস্পতিবার সাঈদীর উপস্থিতিতে জনাকীর্ণ আদালতে যুদ্ধাপরাধের এ মামলার রায় ঘোষণা করেন  ট্রাইব্যুনালের অপর দুই বিচারক বিচারপতি আনোয়ার-উল হক ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনও রায়ের অংশবিশেষ পড়েনমানবতাবিরোধী অপরাধের কারণে একাত্তরে এই জামায়াত নেতাকে পিরোজপুরের মানুষ চিনত দেইল্লা  রাজাকারনামেযে ২০টি ঘটনায় ট্রাইব্যুনালে তার বিচার শুরু হয়েছিল, তার মধ্যে আটটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে রায়ে জানানো হয় ২০১০ সালে ট্রাইব্যুনাল গঠনের মধ্য দিয়ে বহু প্রতীক্ষিত এই বিচার প্রক্রিয়া শুরুর পর যুদ্ধাপরাধের মামলার তৃতীয় রায় এলো  প্রথম রায়ে গত ২১ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনাল-২ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির আদেশ দেয়আর একই ট্রাইব্যুনালে ৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় রায়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়, যা প্রত্যাখ্যান করে তার ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন চলছে সারা দেশেঅন্যদিকে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরোধিতায় বৃহস্পতিবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল করছে জামায়াতে ইসলামীট্রাইব্যুনাল ভেঙে দিয়ে শীর্ষ নেতাদের মুক্তির দাবিতে গত নভেম্বর মাস থেকেই রাজধানীসহ সারা দেশে সহিংসতা চালিয়ে আসছে একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দলটি      গত ৫ ফেব্রুয়ারি কাদের মোল্লার রায়ের দিনেও সারা দেশে হরতাল করে জামায়াতের নেতাকর্মীরাতাদের এই সহিংস কর্মসূচির বিরোধিতার পাশাপাশি একাত্তরে মানবতাবিরোধী ভূমিকার কারণে দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবিও জোরালো হয়ে উঠেছে  দুই ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের সাবেক ও বর্তমান আমিরসহ আরো পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর শুনানি চলছেরায় উপলক্ষ্যে আগের দিন থেকেই ট্রাইব্যুনাল ঘিরে নেয়া হয় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থাট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি সদস্যদের নিয়ে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়ট্রাইব্যুনালে আসা সাংবাদিক ও দর্শনার্থীদেরও কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে তল্লাশি চালিয়ে ট্রাইব্যুনালে প্রবেশ করতে দেয়া হয়   আগের রায়ের দিনগুলোর মতো এদিনও সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনালের বাইরে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ দিতে দেখা যায় বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীদেরজামায়াত নিষিদ্ধের দাবিতেও স্লোগান দেন তারামুক্তিযুদ্ধের সময় পিরোজপুরে হত্যা, লুণ্ঠনসহ বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেপ্তার করা হয় সাবেক সংসদ সদস্য সাঈদীকেপরের বছর ১৪ই জুলাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল

 

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক জামায়াত নেতাদের মধ্যে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধেই সবার আগে অভিযোগ গঠন হয়একাত্তরে ৩ হাজারেরও বেশি নিরস্ত্র ব্যক্তিকে হত্যা বা হত্যায় সহযোগিতা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ভাংচুর ও ধর্মান্তরে বাধ্য করাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ২০টি ঘটনায় ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে তার বিচার শুরুর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনালএকই বছরের ৭ ডিসেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনসহ মোট ২৮ জন রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেনএছাড়া তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া ১৫ সাক্ষীর জবানবন্দি ট্রাইব্যুনাল সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণ করেআসামিপক্ষে ১৭ জনের সাফাই সাক্ষ্য শেষ হয় গত ২৩ অক্টোবরচলতি বছর ২৯ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন বিচারক

 

২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩.

 

শেয়ার করুন