২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩: ‘জানিই তো জেমস বন্ড কোনো দিন মরবে না। তাহলে সেই সিনেমাটা আমি কেন দেখব?’
ঠিকই তো! সাক্ষাৎকার নিতে এসে নিজেরাই প্রশ্নের মুখে পড়লাম।
আর্টহাউস ধারার সিনেমা যেমন করেছেন, তেমনি সম্প্রতি তাঁর বিশ্বরূপম ব্যবসাকরেছে ১০০ কোটি রুপির ওপরে। চিত্রনাট্য নির্বাচন করেন কী ভেবে? এমনপ্রশ্নের এই উত্তর রাহুল বোসের। পক্ষপাত তাঁর আর্ট ফিল্মেই। ‘পরে কী হবে, ঘটনা কোন দিকে যাচ্ছে—এ ধরনের ছবিতে তা আগেভাগেই বলে দেওয়া যায় না। এধরনের ছবিতে অভিনয়ের মজাই আলাদা। আই উইল অলওয়েজ গো ফর আর্টহাউস।’ বললেনতিনি।
তাহলে বিশ্বরূপম? বলা যায়, রাহুল বোসের প্রথম অ্যাকশন ছবি। ‘ওটাতো কমল হাসানের জন্য করেছি। আর ৩০ বছর ধরে রাগবি খেলার পর মনে হয়েছেঅ্যাকশনটা আমি ভালোই করতে পারব।’
অভিনয়ের জন্য প্রশংসা পেয়েছেন অনেক, তবে সুপারহিট বলতে যা বোঝায়, তা হয়েছে বিশ্বরূপম। ‘আরে দর্শক তো কমলহাসানকে দেখতে এসেছে। আমি এ ছবিতে না থাকলেও কিছু যেত-আসত না।’ এমনই মনেকরেন রাহুল।
২০০১-এ প্রথম সিনেমা পরিচালনা করেছিলেন তিনি। তাঁরপরিচালিত এভরিবডি সেইস আ’ম ফাইন। ছবিটি প্রদর্শিত হয়েছিল টরন্টো চলচ্চিত্রউৎসবে। এরপর এখন কাজ করছেন মথ স্মোক নিয়ে। পাকিস্তানি ঔপন্যাসিক মহসিনহামিদির এই উপন্যাসটি নিয়ে ছবি বানাচ্ছেন রাহুল। প্রযোজনা করবেন অনুরাগকশ্যপ, জানালেন তিনি। তবে এ ছবির মূল চরিত্রটি একজন অভিনেতার কাছে যথেষ্টলোভনীয় হলেও রাহুল চান পরিচালনাতেই মন দিতে।
চাকরি হারানো, বন্ধুরস্ত্রীর প্রেমে পড়া, আস্তে আস্তে ডুবে যাওয়া মাদকের জগতে—এমনই এক মানুষেরজীবন নিয়ে এগিয়েছে এর কাহিনি। ‘মথ স্মোক-এর মূল চরিত্রের জন্য খুব খাটতেহবে। মেকআপ, কস্টিউম, অভিনয়, পরিচালনা এত কিছুর চিন্তা এখন মাথায় নিতেচাই না। শুধু পরিচালনাই করতে চাই এই ছবিতে।’ বলেন তিনি।
আসছে সুমনমুখোপাধ্যায়ের সিনেমা শেষের কবিতা। আর অমিত-লাবণ্য রূপে অভিনয় করবেনরাহুল বোস ও কঙ্কণা সেন শর্মা। তবে কেমন হতে যাচ্ছে এই সিনেমা, মূলউপন্যাসের মতোই কি চিত্রনাট্য থাকবে, এসব প্রশ্নের এখনই উত্তর দিতে নারাজরাহুল। ‘এসব জানতে হলে সিনেমাটা দেখতে হবে।’ সোজাসাপ্টা জবাব তাঁর।
অ্যাকটিভিস্ট হিসেবেও রাহুল বোস সক্রিয়। নিজের এনজিও ‘দ্য ফাউন্ডেশন’-এরমাধ্যমে তো বটেই, যুক্ত আছেন অক্সফাম, ‘নর্মদা বাঁচাও’ আন্দোলনের সঙ্গেও।‘বছরে ৩৫-৪০টি স্কুল-কলেজে যাই আমি। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলি। কী ঘটছেচারপাশে, তা বোঝার এটাই সবচেয়ে ভালো উপায়। নিজের দেশটাকে আবিষ্কার করিআমি এভাবেই।’ বললেন তিনি।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে অতিথিহিসেবে বক্তব্য রেখেছেন রাহুল। ‘আজকের এই সমাবর্তনের পরই কিন্তু ওদের নতুনএকটা জীবন শুরু হবে। সেটাই বাস্তব জীবন। সেই জীবনের প্রস্তুতি তারা কীভাবেনেবে, সেটা তো তাদের জানাতে হবে। আমি বলেছি, জীবনে অবশ্যই একটা বিশ্বাসথাকতে হবে। তুমি কিসে বিশ্বাস করো, সেটা তুমি আগে ঠিক করো। তুমি বন্ধুত্বেবিশ্বাস করো, নাকি ভালোবাসায়, নাকি ন্যায়বিচারে? এ রকম যেকোনো একটাবিশ্বাস তো তোমার থাকতেই হবে। তারপর সেই অনুযায়ী তোমার জীবন সাজাবে। আগেজানো, তুমি কে। আমার জীবনের সেই সময়ে এমন কথাগুলো যদি কেউ আমাকে বলেদিতেন।’