ইসরাইলের নজর আফ্রিকার দিকেও মোকাবেলায় উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে

0
228
Print Friendly, PDF & Email

২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩।।

আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে গোলযোগপূর্ণ পরিস্থিতির সুযোগে ইসরাইল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জোরালো প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে।

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে ‘জঙ্গি’ বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ফরাসি বাহিনীর সামরিক অভিযান ইসরাইলের কূটনৈতিক ফায়দা তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে বলে সে দেশের বুদ্ধিজীবীরা মনে করছেন। মধ্যপ্রাচ্যের গালফ নিউজ পত্রিকার সূত্রে গতকাল মঙ্গলবার পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে এ কথা জানা যায়। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, অর্থনৈতিক ও কৌশলগত, উভয় কারণে আফ্রিকা মহাদেশের কোনো কোনো অঞ্চলে ইসরাইল বহু আগে থেকেই সুদৃঢ় অবস্থান তৈরি করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে। জানা গেছে, মালি ও নাইজারের মতো রাষ্ট্রগুলোকে ইসরাইল আরবদের বিরুদ্ধে কাজে লাগাতে চায়। এ জন্য আরববিরোধী মনোভাব উসকে দিতে চাচ্ছে। সম্প্রতি মালির নতুন প্রেসিডেন্ট ত্রেয়রের এহেন মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। গত মাসে আফ্রিকান ইউনিয়নের শীর্ষ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, “আরব দেশগুলো মালির সাথে প্রত্যাশিত আচরণ করেনি। তারা ফ্রান্সের অভিযানের সমালোচনা করলেও ‘ইসলামি গেরিলাদের’ হাত থেকে মালির উত্তরাঞ্চল মুক্ত করার ব্যাপারে সাহায্য করেনি।” তবে এ মাসে ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনে দেশের ঐক্য ও অখণ্ডতা রক্ষার্থে মালি সরকারের প্রয়াসে সমর্থন জ্ঞাপন করা হয়েছে।

আফ্রিকা ঔপনিবেশিক শক্তিগুলোর প্রচারণামাফিক ‘অন্ধকার মহাদেশ’ হিসেবে দীর্ঘ দিন অভিহিত হয়েছে। তবে বিশাল এই মহাদেশের সম্পদ ও সমার্থ্যরে বিচারে এর ভবিষ্যৎ মোটেও অন্ধকার নয়। আফ্রিকায় জ্বালানি ও পানির ভাণ্ডার তুলনামূলক সুলভ। তা ছাড়া মহাদেশটি মুক্ত অর্থনীতির বর্তমান বিশ্বে সম্ভাবনাময় বাজার। তদুপরি মালি ও নাইজারসহ এর পশ্চিম অঞ্চলে রয়েছে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম ইউরেনিয়াম সম্ভার। এই অমূল্য ধাতু যে কত বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা বলা নিষ্প্রয়োজন। অত্যন্ত দরিদ্র দেশ মালিতে রয়েছে ১৭ হাজার টন ইউরেনিয়াম মজুদ, যা আজো খনি থেকে তোলা হয়নি। গত বছরও সেখানে এই ধাতুর নতুন মজুদ আবিষ্কৃৃত হয়েছে। আর সে এলাকাতেই ‘ইসলামি গেরিলা’দের ঘাঁটি। ফ্রান্স যে এদের দমনের জন্য সৈন্য পাঠিয়েছে, তার প্রধান কারণ ইউরেনিয়াম। এ দিকে ইসরাইল আফ্রিকান মুসলিম দেশগুলোর বন্ধু সেজে আরব দেশগুলোর সাথে তাদের সম্পর্ক নষ্ট করার কাজে তৎপর। ইসরাইল আফ্রিকার বিভিন্ন দেশকে ব্যবসায়িক সুযোগ-সুবিধা এমনকি সামরিক সহায়তা দেয়ারও প্রস্তাব করেছে। এই প্রেক্ষাপটে সহজেই ধরে নেয়া যায়, ইহুদিবাদী অপরাষ্ট্রের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ আগে থেকেই আফ্রিকার টার্গেট করা দেশগুলোতে অত্যন্ত সক্রিয়।

ইহুদি রাষ্ট্রশক্তিসহ বিশ্ব ইহুদিবাদী চক্রের যাবতীয় নীলনকশা ও ষড়যন্ত্র সম্পর্কে মুসলিম উম্মাহকে সদাসতর্ক এবং সে মোতাবেক তৎপর থাকতে হবে। এ জন্য তাদের গোয়েন্দা তৎপরতা, প্রচারকৌশল, রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ, কূটনৈতিক উদ্যোগ, অর্থনৈতিক  কর্মকাণ্ড প্রভৃতি সম্পর্কে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা দরকার। ইসরাইলি অপতৎপরতার ক্ষেত্রে মুসলিম দেশগুলোর সরকারের দায়িত্ব সর্বাধিক। এ বিষয়ে ওআইসির বিশেষ ভূমিকা রাখা অপরিহার্য।

শেয়ার করুন