কৃষি ডেস্ক: বিভিন্ন স্থানেনদ-নদীসহ জলাশয় থেকে বালু উত্তোলনের মহোত্সব চলছে। বালু উত্তোলন বন্ধে কোনোকার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় বালুদস্যুরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এতে বাড়ছেনদীভাঙন। বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। বিস্তারিত খবর পাঠিয়েছেন প্রতিনিধিরা :
নোয়াখালী : নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর আমিশাপাড়া ইউনিয়নের আইচাপাড়া গ্রামেজোতদার সন্ত্রাসী মাহাবুব পাটারী বাহিনীর অত্যাচারে ওই গ্রামের কয়েক বাড়িরলোকজন ভূমির প্রকৃত মালিক হয়েও পালিয়ে বেড়াচ্ছে। প্রবাসী জাহাঙ্গীরদেরপরিবার বাড়িতে বসবাস করলেও তাদের বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার জন্য নানাভাবেহুমকি-ধমকি প্রদর্শন করছে। বসতবাড়ি ছেড়ে না গেলে তাদের প্রাণনাশেরও হুমকিপ্রদান করছে মাহাবুব বাহিনী। আইচাপাড়া মোটওয়ালা বসতবাড়িটি জবরদখল করে সে ওইবাড়ির চারটি পুকুর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছে। এর ফলেবসতঘর পুকুরে ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ঘটনায় সোনাইমুড়ী থামাতে মালিকপক্ষথেকে সারোয়ার অভিযোগ দিলে থানা পুলিশ ঘটনার সত্যাতা পেয়েও জবরদখলকারীদেরবিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় জনমনে নানা প্রশ্ন ও ক্ষোভজন্মেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, পুলিশ সন্ত্রাসী বাহিনী থেকে বিপুল অঙ্কেরচাঁদা নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তবে থানা পুলিশ এটিমানতে নারাজ।
স্থানীয় লোকজন, ক্ষতিগ্রস্তরা ও ভূমির মালিক গোলাম সারোয়ারসহ অন্যরাজানিয়েছেন, আমিশাপাড়া ইউপির আইচাপাড়া গ্রামে মোটওয়ালা বাড়ি ও তার আশপাশে এবাড়ির প্রায় সাত একর জমিন রয়েছে। এ বাড়িতে গোলাম সারওয়ার, মোস্তফা ভূঁইয়া, ইউছুফ, কাজল চৌধুরী, হাবিব উল্লা চৌধুরীসহ ২৫-৩০ অংশীধার (মালিক) রয়েছে।প্রকৃত মালিকরা এ জমিন ভোগ দখল করে বসবাস করে আসছিল। পার্শ্ববর্তী বাড়িরমাহাবুব পাটারী আদমজীতে থাকত। কয়েক বছর থেকে সে এলাকায় এসে ঈদগাহ আমিনবাজারএলাকায় তার নামে মাহাবুব বাহিনী নামে একটি বাহিনী গড়ে তোলে। এ বাহিনীচুরি, ডাকাতি, খুন, চাঁদাবাজি, দখল, জবরদখল, সন্ত্রাসী হামলাসহ নানা অপরাধ ওঅসামাজিক কর্মকাণ্ড শুরু করে। প্রথমে তার রোষানলে পড়েন আইচাপাড়া গ্রামেরমোটওয়ালা বাড়ির লোকজন। মোটওয়ালা বাড়ির বাসিন্দাদের ওপর মাহাবুব ও তারবাহিনী নানাভাবে জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন শুরু করে। পুকুরে বেড় দিয়ে মাছধরে নিয়ে যায়। বাগানের আম, কাঁঠাল, নারিকেল, সুপারি, কলাসহ নানা ধরনের ফলনিয়ে যায়। পরে বাড়ি থেকে বড় বড় কাঠের গাছ ও ফলের গাছ কেটে নিয়ে যায়।প্রতিবাদ করলে বাড়ির বাসিন্দা সেনা অফিসার গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়াকে কয়েক বছরআগে প্রকাশ্য দিবালোকে মাহাবুব ও তার বাহিনী পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে।
এ ঘটনায় তার স্বজনরা মামলা করলে প্রাণনাশের হুমকি ও সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েতাদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়। একই কায়দায় গোলাম মাওলার বসতঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটতরাজ করা হয়, এমনকি তার বসতঘরটি ভেঙে ফেলা হয়। তার পরিবারআমিশাপাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকে। আতঙ্কে প্রবাসী ইউছুফের পরিবার পালিয়েবেড়াচ্ছে।
অন্যদিকে মাহাবুব বাহিনী অপরাধ করলে সে খবর সংগ্রহে পুলিশ, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি অথবা ক্ষতিগ্রস্তদের স্বজনরা গেলে বাহিনীর লোকজন চতুর্দিক থেকেঘটনাস্থলে গিয়ে ভীতির সঞ্চার করে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীরা ভয়ে আর মুখখুলতে সাহস পায় না। মিডিয়া কর্মীসহ অন্যদের মিথ্যা ভিত্তিহীন তথ্য দিয়েঘটনাস্থল ত্যাগে বাধ্য করা হয়।
এ ব্যাপারে মাহাবুব পাটোয়ারীর কাছে জানতে চাইলে তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
এ নিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই গোলাম কিবরিয়ার কাছে জানতে চাইলেতিনি জানান, আদালত থেকে কাজ বন্ধের নির্দেশ এসেছে, আমি তা করেছি।
এ নিয়ে জনতে চেয়ে সোনাইমুড়ী থানার ওসি (তদন্ত) মো. সওকত হোসেনের মুঠোফোনেকল করলে তিনি জানান, ওসি সাহেব ছুটিতে রয়েছেন। আরও জানান, তিনি এ থানাতেনতুন এসেছেন।
নগরকান্দা (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়াকুমার নদী থেকে ড্রেজিং মেশিন দিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করার ফলে ব্যাপকভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের ফলে ফসলি জমি, হিয়াবলদী বাজার, হিয়াবলদী গ্রাম, মাদরাসা, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ এলাকা ঘরবাড়ি এখন হুমকির মুখে পড়েছে।বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। অপরদিকে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব থেকে সরকার বঞ্চিতহচ্ছে। হিয়াবলদী গ্রামের প্রভাবশালী মৃত আকমাল কাজির ছেলে স্থানীয় আ.লীগনেতা মনিরুজ্জামান মিন্টু কাজি (৩৫) রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ড্রেজিংয়েরমাধ্যমে বালু উত্তোলন করে পুকুর ভরাট করছেন ঘরবাড়ি নির্মাণের জন্য। ওই বালুউত্তোলন করায় সরকারের কোনো অনুমতি নেই। এমনকি ওই বিষয়ে কোনো সংশ্লিষ্টকর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিজও গ্রহণ করেননি। অথচ প্রশাসনের নাকের ডগায় কুমারনদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে এসব প্রভাবশালী মহল। সংশ্লিষ্টকর্তৃপক্ষের অনুমতি আছে কিনা অভিযুক্ত মনিরুজ্জামান মিন্টু কাজির কাছেজানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)মোবাশ্বের হাসান জানান, ‘আমি বালু উত্তোলনের কোনো অনুমতি দেইনি, বরং আমারতহসিলদার দিয়ে দু’বার নোটিশ দিয়ে বাধা দিয়েছি। তার পরও যদি বালু উত্তোলনকরে, তা হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মুকসুদপুর (গোপালগঞ্জ) : গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলায় নীতিমালা নামেনে কুমার নদ থেকে অবৈধভাবে খননযন্ত্র (ড্রেজার) দিয়ে বালু উত্তোলন করাহচ্ছে। এভাবে বালি উত্তোলন করতে থাকলে বর্ষা মৌসুমে টেংরাখোলা বাজারেরপোস্ট অফিস রোডের প্রায় ৩০টি দোকান, কায়েকটি বাড়ি ও কয়েক একর জমি নদীগর্ভেবিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তারযোগসাজশে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বালু তুলছেন বলে জানা গেছে।এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চণ্ডীবরদী, কমলাপুর, মহারাজপুর, বনগ্রামে টেকেরহাট সিন্দিয়া ঘাট কুমার নদে বড় খননযন্ত্র বসিয়ে কিছু অসাধুব্যবসায়ী বালু উত্তোলন করছে। প্রতিদিন এলাকা থেকে বিভিন্ন ৫ হাজার থেকে ১০হাজার ঘনফুট বালু তোলা হয়। এ বিষয়ে মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এককর্মকতা জানান, বালু তোলা বন্ধ করে দেয়া হলেও আবার কিছু দিন পরে তারাবিভিন্ন উপায়ে অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বালু তোলা শুরু করে।
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) : হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী এলাকায় সোনাই নদীরওপর নির্মিত রাবার ড্যামের রক্ষণাবেক্ষণ দেয়াল ধসে আটকানো পানি শূন্য হয়েপড়েছে। এতে প্রায় ছয় হাজার একর ইরি-বোরো ফসল উত্পাদন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।ফলে এলাকার কয়েক হাজার কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। গত বুধবার ভোর থেকে রাবারড্যামের রক্ষণাবেক্ষণ দেয়াল ধসে পড়তে থাকে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনেরতীব্রতা বৃদ্ধি পায় এবং ৩০-৪০ ফুট এলাকাজুড়ে ভাঙন সৃষ্টি হয়ে কয়েক ঘণ্টারমধ্যেই ড্যামে আটকানো পানি শূন্য হয়ে পড়ে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলীআহমেদ তানজিলউল্লা ছিদ্দিকী জানান, ভাঙনের খবর পেয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীকেঅবহিত করেছি। এ ব্যাপারে কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করারচেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
<iframe src=”https://s-static.ak.facebook.com/connect/xd_arbiter.php?version=18#channel=f3c9166bd65a45&origin=http%3A%2F%2Fwww.amardeshonline.com&channel_path=%2Fpages%2Fdetails%2F2013%2F02%2F26%2F189599%3Ffb_xd_fragment%23xd_sig%3Dfdbf5dfc1ac18c%26″ style=’border-bottom-style:none;border-bottom-width:medium;border-left-style: none;border-left-width:medium;border-right-style:none;border-right-width: medium;border-top-style:none;border-top-width:medium’ tab-index=-1 title=”Facebook Cross Domain Communication Frame” aria-hidden=true allowtransparency=true name=”fb_xdm_frame_https” scrolling=no frameborder=0>
২৬ ফেব্রুয়ারী/নিউজরুম