স্পোর্টস ডেস্ক: সকাল ১০টা।ঝাঁজালো রোদ চারদিকে।বাফুফে ভবন চত্বরটাকে আরও ঝকঝকে লাগছিল।২৩ ফুটবলার একসঙ্গে ফটোসেশন করছেন।ছোট ছোট ভাগে গল্পে মেতেছেন।অলক্ষ্যে যেন একটি সুরই বাজল—কাঠমান্ডু থেকে একটা উপহার আনা চাই-ই চাই।উপহারটা চ্যালেঞ্জ কাপের চূড়ান্ত পর্বের টিকিট।কাজী সালাউদ্দিনের হাতে তা তুলে দিতে উদ্গ্রীব ফুটবলাররা। এমন ব্যাকুলতা ফুটবলারদের শরীরী ভাষায় কমই দেখা যায়।বাফুফে ভবন চত্বর থেকে বিমানবন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া বাংলাদেশ দলের বাসটাও জানিয়ে গেল, ‘আমরা করব জয়।মিডফিল্ডার মামুনুলের কণ্ঠে ওই উপলব্ধির অনুরণন, ‘সালাউদ্দিন ভাই সহজে ফুটবলারদের নিয়ে বসেন না।কদিন আগেই আমাদের সঙ্গে বসার সময় ওনাকে খুব অসহায় লাগছিল। ওনার জন্য হলেও আমাদের কিছু করা উচিত।নইলে স্পনসরের কাছে তো যেতেই পারবেন না। সালাউদ্দিন ভাইকে একটা উপহার আমরা এবার দেবই।পরিস্থিতিই আসলে এমন চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞাই দাবি করছে ফুটবলারদের কাছে।বাফুফের পক্ষ থেকে এই সফরে ভালো করতে চেষ্টার ত্রুটি রাখছেন না সালাউদ্দিন।উচ্চ বেতনের দুজন ডাচ কোচের হাতে দায়িত্ব সঁপে দলটাকে পাঁচ দিন আগেই নেপালে ২-৬ মার্চ অনুষ্ঠেয় প্রতিযোগিতায় পাঠাচ্ছেন।খেলোয়াড়দের তো কিছু দেওয়ার পালা এখন।অধিনায়ক সুজন ঘুমের ঘোরেও নাকি গত কয়েক দিন তা টের পেয়েছেন। টিম বাসে ওঠার আগে সেটিই বলে গেলেন, ‘সারাক্ষণই মনের মধ্যে খোঁচা লাগছে, ভালো করতেই হবে।এমিলি-জাহিদ চোটের কারণে যেতে পারছে না। ইনশা আল্লাহ, আমরা হতাশ করব না। ডু অর ডাই মানসিকতা নিয়েই সবাই যাচ্ছি।এই লড়াকু বাংলাদেশই দেখতে চায় সবাই।আর তা দলটাকে লড়াকু মানসিকতায় গড়ে তোলার দায়িত্ব নিয়েছেন লোডভিক ডি ক্রুইফ ও রেনে কোস্টার।যানজটের কারণে কাল বাফুফে ভবনে আসতে পারেননি তাঁরা।বিমানবন্দরেই দলের সঙ্গে মিলেছেন দুজন।তবু ঘুরে ঘুরে গুরুই থাকলেন ফুটবলারদের মুখে।ডিফেন্ডার ওয়ালির একটু বেশিই বললেন কোচ প্রসঙ্গে, ‘কোচ ডাচ পদ্ধতিতে খেলাতে চান। সবাই ওই দিকটা নিয়েই বেশি ফোকাসড। একটা শিহরণ লাগছে। খুব ভালো অনুভূতি এ মুহূর্তে সবার। মনে হচ্ছে এবার আমরা ভালো করবই।’নবাগত স্ট্রাইকার তকলিচ আহমেদও একইভাবে শিহরিত যেন। ‘২০০৮ সালে ছাত্রভিসায় ইংল্যান্ড চলে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আবেদন করলেও ভিসা পাইনি। ভালোই হয়েছে, পেলে আজ আমি জাতীয় দলে খেলতে পারতাম না!—বললেন সিলেটের তরুণ স্ট্রাইকার।আরেক নবাগত মিডফিল্ডার জামাল হোসেন ২৬ দিন আগে বাবাকে হারিয়েছেন, ‘বাবা বেঁচে থাকলে খুশি হতেন খুব। তাঁর স্মৃতির উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানাতে এই সফরে ভালো খেলতে চাই।’টুকরো টুকরো এসব সংকল্প মিলিতভাবে একটা সাফল্যের পূর্বাভাসই কি দিচ্ছে?
২৬ ফেব্রুয়ারী/নিউজরুম