কৃষি ডেস্ক: কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এক সময়ের প্রমত্তা তিস্তা নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে এখন আলু চাষের সমারোহ। বালুচরে চাষিরা অন্যের জমি বর্গা নিয়ে আলু আবাদ করছেন। ভাঙনে গর্জে ওঠা সেই তিস্তা নদী এখন শুষ্ক মওসুমে নাব্যতা হারিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে।শুকিয়ে যাওয়া তিস্তা নদীর বালুচরে ইতোমধ্যে আলু উঠানো শুরু হয়েছে এবং চাষিরা লাভবান হচ্ছেন বলে জানান। এক একজন চাষি দুই একর থেকে ১৫ একর পর্যন্ত আলু চাষ করছেন। আলুচাষি কৃষক জাহেরুল ইসলাম জানান, এই আলু মণপ্রতি ৯৫০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। কৃষকেরা জানান, এ উপজেলার উৎপাদিত আলু এখান থেকে কিনে আড়তদারেরা দেশের দণিাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছেন।উপজেলা কৃষি অফিসার ষষ্টী চন্দ্র জানান, এবারে এ উপজেলায় এক হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। আশা করি আলু ভালো ফলন হবে এবং কৃষকেরা লাভবান হবেন।আলু আবাদ শেষ হতে না হতেই এরই সাথে শুরু হবে বাদাম ও পেঁয়াজের মওসুম। আর এই আবাদ দু’টি শেষ হতে না হতেই শুরু হবে বর্ষা মওসুমে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল। তখন ফুঁসে উঠবে নদী। দুই-তিন দিনের টানা বর্ষণ হলে এ তিস্তা নদী আবার গর্জে উঠে উত্তাল হয়ে প্রমত্তা রূপ ধারণ করে দুই কূল ভাসিয়ে ফসলের মাঠ, বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট লণ্ডভণ্ড করে দেয়। শুরু হয় বসতবাড়ি, জমির ফসল ও গবাদিপশু হারা নদীর তীরে বসবাসরত মানুষের ভাঙনের আর্তনাদ। বর্ষা শুরু হলে মানুষের মনে আতঙ্ক বিরাজ করে। তিস্তা নদীর পানি ফেঁপে ওঠার সময় নদীর বাঁধ ভাঙবে, মানুষের বসতবাড়ি ফসলের মাঠসহ রাস্তাঘাট লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়।
তিস্তা নদীর অব্যাহত ভাঙন প্রতিরোধে কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী আবু তাহের ও প্রকৌশলী এসডির সাথে কথা হলে তারা জানান, উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে পানি বিপদসীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় ভাঙনের শিকার হয়। এ বিষয়ে পাউবোর তত্ত্বাবধানে আগাম মন্ত্রণালয়ে কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। এলাকায় বাজেট এলে সঠিক সময়ে প্রকল্প বাঁধ মেরামত এবং নদী ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে তারা সচেষ্ট রয়েছেন।
২৫ ফেব্রুয়ারী/নিউজরুম