প্রস্তর বা নব্যপ্রস্তর যুগ নয়, বর্তমানে চলছে প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তিগতউন্নয়নের জোয়ারে সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা বাংলাদেশও ডিজিটাল হয়ে গেছে।ভাবতে ভালোই লাগে। প্রদীপ ঘষলেই যেমন দৈত্য বেরিয়ে আসে, তেমনি ইন্টারনেটেক্লিক করলেই অন্যান্য অনেক কিছুর মতো বইও বাসায় চলে আসে। কষ্ট করে ভিড় ঠেলেবইমেলায় না গিয়েও মেলার বই পাওয়া যায়। কী তামশা! কিন্তু এত প্রযুক্তির পরওবই কিন্তু সেই আগের মতোই আছে। বঙ্কিমচন্দ্রের আমলে যে রকম বই বের হত, এখনোসেই একই রকম বই বের হয়। কাগজের ওপর ছাপা কালো অক্ষরের কোন পরিবর্তন নেই।গবেষকেরা বই পড়ে গবেষক হয়ে বিভিন্ন বই লিখলেও বইকে কীভাবে আরও আপগ্রেডকিংবা আরও ব্যবহার উপযোগী করা যায় তা নিয়ে একদমই গবেষণা বা চিন্তাভাবনাকরছেন না। আর সে জন্যই বইয়ের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। কোনো মানে হয়? কোনোইমানে হয় না। অথচ বই জিনিসটাকে আরও আধুনিক করে গড়ে তোলা কত প্রয়োজন। বইপড়ছেন, হঠাৎ কারেন্ট চলে গেল। মোমবাতিও নেই। ব্যস, বই পড়া বন্ধ। কারণবাংলাদেশে একবার বিদ্যুৎ গেলে কখন আসবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু এটাতো হতে পারে না। বই পড়ায় বাধা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই দেশেরবিজ্ঞানীদের উচিত রেডিয়াম আলোসমৃদ্ধ বই বের করা। এতে বইয়ের অক্ষরগুলোঅন্ধকারে আলো দেবে। অন্ধকারে পড়তে কোনো ঝামেলাই হবে না। আক্ষরিক অর্থেইমানুষের জীবনকে আলোকিত করবে বই। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনকে বুড়ো হুল দেখিয়েদেশে জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে মশা। বই পড়ার সময় মশাদের আক্রমণ যেন আরওবেড়ে যায়। দুই হাতে বই ধরে রাখার কারণে কষে চড় দিয়ে মশা মারতেও বেগ পেতেহয়। ব্যাহত হয় জ্ঞানচর্চা। তাই বিজ্ঞানীদের এমন কোন প্রযুক্তি বইয়ের সঙ্গেযুক্ত করা উচিত, যেন বই খুললে এর আশপাশের ১০০ গজের মধ্যে কোনো মশা-মাছিআসতে না পারে। এতে করে জ্ঞানচর্চা আরও ত্বরান্বিত হবে। কিন্তু এসব জনহিতকরপ্রযুক্তি প্রণয়নের কথা কেউই ভাবছে না। এ বিষয়ে বরাবরের মতো এবারওকর্তৃপক্ষও নীরব ভূমিকা পালন করছে। তাই, আন্দোলন সংগ্রামের এই মাসে বইয়েরপ্রযুক্তিগত উন্নতির তীব্র দাবি জানানো হচ্ছে। আশা করছি, কর্তৃপক্ষ এব্যাপারে চিন্তাভাবনা করবে।
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩: