৪ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত ‘বাংলাদেশেরনানান ভাষা’ শিরোনামে শ্রদ্ধেয় মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের ‘ককবরক ভাষার’ ইতিহাস-সম্পর্কিত লেখাটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে ‘বাংলাদেশেরনানান ভাষা’ শিরোনামে লিখিত প্রতিটি রচনাই অত্যন্ত তথ্যবহুল, যা তাঁরপাণ্ডিত্যকে আমাদের কাছে উন্মোচিত করছে এবং গভীর আগ্রহ নিয়ে আমরা তাঁররচনাগুলো পাঠ করছি।
শিরোনামে উল্লেখিত ত্রিপুরা সমপ্রদায়ের ‘ককবরক’ ভাষার লিখিতরূপ সম্পর্কে তাঁর দেওয়া তথ্যের বাইরেও আমার কাছে আরও কিছু তথ্যসংরক্ষিত আছে, যা এই ভাষাভাষীর লোকজন এবং এই ভাষা সম্পর্কে যাঁরা গবেষণাকরেন বা করতে আগ্রহী, আমার বর্তমান লেখাটি মূলত তাঁদের জন্য।
কিছুটাবিস্ময়কর হলেও সত্য যে ‘ককবরক’ ভাষার প্রথম লিখিতরূপ বা ব্যাকরণ গ্রন্থটিরচনা করেছিলেন একজন বাঙালি মুসলমান। তিনি বর্তমান ত্রিপুরা রাজ্যেরসোনামুড়া মহকুমার কুলুবাড়ি গ্রামে ১২৭৪ ত্রিপুরাব্দে (১৮৬৪ খ্রি.)জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ার সময় ত্রিপুরা মহারাজের দেয় ‘রাজকুমার’ স্কলারশিপ লাভ করেন। এরপর তিনি কুমিল্লা জিলা স্কুলে ভর্তি হন।যে বছর তাঁর এন্ট্রান্স পরীক্ষা দেওয়ার কথা, সে বছর স্বদেশি আন্দোলনে যুক্তথাকায় তিনি স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হন। ফলে ধরাবাঁধা পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে তিনিকুলুবাড়িতে চলে আসেন। এরপর সে সময়কার সোনামুড়া মাইনর স্কুলে সহকারী প্রধানশিক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে চাকরি শুরু করেন। বছর চারেক চাকরি করার পর ত্রিপুরারাজ্যের আইন পরীক্ষা দিয়ে স্বাধীনভাবে সোনামুড়া কোর্টে আইন ব্যবসা আরম্ভকরেন।
কবি দৌলত আহম্মদ মজুমদার বিভিন্ন ভাষায় মোট ২৯টি গ্রন্থ রচনা করেনএবং তাঁর ৩২ বছর বয়সে লক্ষৌর জমিয়াতুল ওলেমা থেকে ‘এম এম দাহার’ উপাধিলাভ করেন। এরপর তিনি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে যথাক্রমে ‘কাব্য বিনোদ’ ও ‘সাহিত্য রত্ন’ উপাধি লাভ করেন।
দৌলত আহম্মদ মজুমদার পৌষ ১৩০৭ত্রিপুরাব্দে (১৮৯৭-৯৮ খ্রি.) ককবরমা অং ত্রিপুরা ব্যাকরণ বইটি প্রকাশকরেন, যা কুমিল্লার অমরযন্ত্রে (ছাপাখানা অর্থে) শ্রীযুক্ত নীলাম্বর দত্তচৌধুরী কর্তৃক মুদ্রিত। এ ছাড়া ককমা কালাই, যার বাংলা অর্থ (সহজ ব্যাকরণ)নামে আরেকটি ব্যাকরণগ্রন্থও সমসাময়িককালে তিনি রচনা করেন।
দৌলত আহম্মদমজুমদার ১৩৫১ বঙ্গাব্দে অগ্রহায়ণ মাসে সোনামুড়ার কোর্টে একটি মামলাপরিচালনার সময় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যান এবং মৃত্যুমুখে পতিত হন।
মরহুম দৌলত আহম্মদ মজুমদার ও তাঁর রচনাবলি সম্পর্কে যাঁরা বিস্তারিত জানতে আগ্রহী, তাঁরা নিম্নলিখিত ই-মেইলে যোগাযোগ করতে পারেন।
আলেয়া নূর মুশতাক
বিএ অনার্স, এমএ (বাংলা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
e-mail:mushtaque6666@gmail.com
কত দিন লাগবে?
ঐক্যবদ্ধ হয়েছে সাংবাদিক সমাজ। সাগর-রুনির হত্যার বিচারে তারা ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি দিয়েছে।
শাহবাগেরউত্তাল আন্দোলন ঐক্যবদ্ধ করেছে গোটা জাতিকে। লাখ লাখ মানুষ হত্যা, নারীধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগকারীদের বিচার ও শাস্তির দাবিতে নতুন প্রজন্মরাজপথে অবস্থান করছে কয়েক দিন থেকে। এদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে বিভিন্নশ্রেণী-পেশার নানা বয়সী মানুষ।
এদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ‘ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি’ দিতে আর কত দিন লাগবে সাংবাদিক সমাজের?
মাহবুব ইলাহী, আজিমপুর, ঢাকা।
২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩.