স্পোর্টস ডেস্ক: মোহাম্মদ আশরাফুল ও নুরুল হাসান বাধা হয়ে দাঁড়ালেন। বিসিএলের পাঁচ দিনের ‘গোলাপি ফাইনাল’ নইলে শেষ হয়ে যেতে পারত তৃতীয় দিনেই। তবে আজ চতুর্থ দিনে যদি ম্যাচ শেষ না হয়, সেটাই হবে বিস্ময়ের। জিততে হলে এখন ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলের প্রয়োজন ৫ উইকেট, বিসিবি উত্তরাঞ্চলের ১২২ রান। আর ম্যাচটা যে তৃতীয় দিনেই শেষ দেখতে শুরু করল, তার কারণ বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম।
বিসিএল ফাইনাল প্রতিদিনই কিছু না-কিছু দিচ্ছে মিরপুর স্টেডিয়ামের হাতেগোনা দর্শকদের। প্রথম দিন সেঞ্চুরি করলেন মধ্যাঞ্চলের রকিবুল, দ্বিতীয় দিনে আশরাফুলের হ্যাটট্রিক আর কাল ইনিংসে ৮ উইকেট তুলে নিলেন উত্তরাঞ্চলের সানজামুল। জাতীয় লিগে এক ইনিংসে ৮ বা তার বেশি উইকেট পাওয়ার ঘটনা আছে ১২টি।সানজামুলেরটিসহ বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে এটা ঘটল ত্রয়োদশবারের মতো। ম্যাচের দুই ইনিংস মিলিয়ে ১১ উইকেট নিলেন সানজামুল।
দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমে পরশুই দুই ওপেনার শামসুর ও সানিকে হারায় মধ্যাঞ্চল। শামসুরের উইকেট নিয়ে সানজামুলের ঘূর্ণি-জাদুর শুরুও তখন থেকে।কাল তো একপর্যায়ে মাত্র ৪১ রানে পড়ল মধ্যাঞ্চলের ৫ উইকেট। ২ উইকেটে ১০৩ থেকে ৭ উইকেটে ১৪৪, পাঁচ উইকেটের চারটাই সানজামুলের। মেহরাব ও শুভাগতকে ফিরিয়েছেন এক ওভারেই।
প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান রকিবুল দ্বিতীয় ইনিংসেও মধ্যাঞ্চলের সবচেয়ে লড়াকু ব্যাটসম্যান। ১০৬ বলে ৬৮ করেছেন। রকিবুল সানজামুলের বলে আউট না হলেও ফরহাদ রেজার বলে গালিতে সানজামুলের হাতেই ক্যাচ হয়েছেন! ১৪৪ রানে ৭ উইকেট পড়ার পর যে দুজন টেনে তুলতে চেষ্টা করেছেন দলকে, দুজনকেই ফিরিয়েছেন সানজামুল। অষ্টম উইকেটে নুরুল হাসানের সঙ্গে ৭৪ রানের জুটি গড়ে আশরাফুল (৪১) স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন ফরহাদ হোসেনকে। ফিফটি করে কাভারে নুরুল হাসান (৫৫) ক্যাচ হন ফরহাদ রেজার। ২৪৭ রানে অলআউট মধ্যাঞ্চল।
এর আগে এক ইনিংসে সানজামুলের সেরা বোলিং ছিল ৫/৭০। কাল ৮ উইকেট পাওয়ার সাফল্যে নিজেও বিস্মিত সানজামুল বললেন, ‘আমিও কল্পনা করতে পারিনি ৮ উইকেট পেয়ে যাব। আমার পরিকল্পনা ছিল ডট বল করব, ওরা যদি ভুল করে উইকেট পাব। সেটাই কাজে লেগে গেছে।’ বল হাতে ক্যারিয়ার-সেরা সাফল্যের দিনে ব্যাট হাতেও গুরুদায়িত্ব এসে পড়েছে কাঁধে। ২৫১ রানের লক্ষ্য সামনে নিয়ে ৭১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে উত্তরাঞ্চল। তখন মনে হচ্ছিল সানজামুলের কৃতিত্বই মাটি হওয়ার মুখে। কিন্তু সানজামুলই সাত নম্বরে নেমে অধিনায়ক জহুরুলের সঙ্গে দাঁড়িয়ে গেলেন বুক চিতিয়ে। ষষ্ঠ উইকেটে ৫৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েছেন তাঁরা।জহুরুল ৩৯ রানে ও সানজামুল ৩৪ রানে অপরাজিত। আজ ফলাফল নির্ধারণী দিনে জুটিটাকে আরও লম্বা করতে চান সানজামুল, ‘আজ (গতকাল) একটা পর্যায়ে মনে হচ্ছিল ম্যাচটা আমাদের হাত থেকে ছুটে যাচ্ছে। এখন আর সে পরিস্থিতি নেই, ফিফটি-ফিফটি সুযোগ দুই দলেরই। কাল (আজ) আমার আর অমি ভাইয়ের (জহুরুল) লক্ষ্য থাকবে এই জুটিতে যত বেশি রান করা যায়। সম্ভব হলে ম্যাচ জিতে আসা।’
২৫ ফেব্রুয়ারী/নিউজরুম