ঢাকা: রাজীব হায়দার শোভন সম্পর্কে রাজধানী ধানমন্ডির তাওয়াকুল মসজিদের ইমামের অশোভন উক্তির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল।
রোববার এক বিবৃতিতে ইমামের উক্তিকে ফতোয়ার সমতুল্য বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, “শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে নিহত রাজীব সম্পর্কে রাজধানী ধানমন্ডির তাওয়াকুল মসজিদের ইমাম সাঈদ জুলফিকার জুহর বলেন- রাজীব তার প্রাপ্য সাজা পেয়েছে। কিন্তু মৃত্যু তার জন্য যথেষ্ট নয়। তার মৃতদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে পোড়ানো উচিত।”
তিনি বলেন, “একজন ইমামের অন্য কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে অপবাদের ওপর ভিত্তি করে এমন মন্তব্য করা এবং শাস্তির ঘোষণা দেওয়ার কোনো এখতিয়ার আছে বলে আমরা জানি না।”
তিনি বলেন, “এই ধরনের মন্তব্যের মাধ্যমে বিচার বহির্ভূত ও বর্বর হত্যাকাণ্ডকে বাহবা দেওয়া ফতোয়া জারি করার সমতুল্য এবং ফতোয়া জারি বাংলাদেশের আইনে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ধর্মীয় প্রার্থনার স্থান মসজিদ থেকে এই ধরনের মন্তব্য করা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।”
সুলতানা কামাল বলেন, “বিশেষ করে আমাদের মতো অসাম্প্রদায়িক চেতনার ধারক গণতান্ত্রিক দেশে যেখানে প্রতিটি মানুষ তার নিজ নিজ বিশ্বাস বেছে নিতে পারে এবং চর্চা করার অধিকার রাখে, সেখানে এ ধরনের মন্তব্য সব রকম নৈতিকতা বিরোধী। বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৮-এ এই অধিকারকে সংরক্ষণ করা হয়েছে।”
আসক-এর নির্বাহী পরিচালক তার বক্তব্যে বলেন, “এছাড়া আন্তর্জাতিকভাবেও বলা যায়, যদিও সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা এবং নাগরিক ও রাজনৈতিক সংক্রান্ত চুক্তিতে মত প্রকাশ, চিন্তার ও ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু যে বক্তব্য অন্যের প্রতি শত্রুতা ও আঘাত হানার উস্কানি দিতে পারে, তা নীতিবহির্ভূত করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “একজন মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ, যা যার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে, তিনি খণ্ডন করতে পারবেন না, পুরোপুরি শিষ্টাচার বহির্ভূত এবং অমানবিক।”
তিনি আরও বলেন, “সমাজে বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতা তৈরি করতে পারে এমন মন্তব্যের সামাজিক প্রভাব সম্পর্কে মন্তব্যকারীর সজাগ থাকা উচিত।”
ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৩