স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খানকে সতর্ক করলেন ট্রাইব্যুনাল

0
130
Print Friendly, PDF & Email

ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত দুই জামায়াত নেতার মামলার রায় প্রকাশের কল্পিত তারিখ উল্লেখ করে বক্তব্য দেওয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে সতর্ক করে দিয়ে তার বিরুদ্ধে আনা শো’কজ (কারণ দর্শাও) নোটিশের নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।

রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আইনজীবীর মাধ্যমে তার বক্তব্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা দানের দিন ধার্য ছিল। সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান লিখিত ব্যাখ্যা দেন এবং বক্তব্যের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার ব্যাখ্যায় যদি মিশরে সফরকালীন সময়ে বিচারিক বিষয়ে মন্তব্য করায় বিচারের ওপর কোনো প্রভাব পড়ে অথবা বিচারের ওপর কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ হয়েছে বলে ট্রাইব্যুনাল মনে করেন, সেজন্য ট্রাইব্যুনালের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।  

এ বিষয়ে শুনানি শেষে দুপুর ২টায় আদেশের সময় ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সতর্ক করে দিয়ে শো’কজ নোটিশটির নিষ্পত্তি করে দেন ট্রাইব্যুনাল।

ট্রাইব্যুনাল তার আদেশে বলেন, ‘‘সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য দান অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। তার এ বক্তব্য চলমান বিচারকাজে বিঘ্ন ঘটাতে এবং জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে। তাই তাকেসহ জনপ্রতিনিধি, দায়িত্বশীল এবং মন্ত্রী পর্যায়ের ব্যক্তিদের বিচারাধীন মামলা বা ট্রাইব্যুনালের বিষয়ে মন্তব্য করতে সতর্ক করে দেওয়া হলো।’’

এর আগে জামায়াত নেতাদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ১০ দিন অর্থাৎ ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দানের আদেশ দিয়েছিলেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আইনজীবীর সময়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে আরও ১০ দিন বাড়িয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি (রোববার) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য দিন পুনর্নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল।

অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম সেদিন ৩টি সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করেন, ‘‘মিশর সফররত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর গত ৩১ জানুয়ারি কায়রোতে এক সমাবেশে বক্তব্য দানকালে মন্তব্য করেছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে কাদের মোল্লা ও ১৪ ফেব্রুয়ারি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার রায় ঘোষণা করবেন ট্রাইব্যুনাল।’’

এজন্য তাজুল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানান।

উল্লেখ্য, গত ৩১ জানুয়ারি  মিশরে গিয়ে রাষ্ট্রীয় এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ট্রাইব্যুনালের বিচারিক বিষয়ে মন্তব্য করেন। মিশরের কায়রোতে মন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, “চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর রায় চূড়ান্ত। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে একটি মামলায় ট্রাইব্যুনালের দ্বিতীয় রায় হবে এবং  ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ১৪ তারিখ যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর মামলার রায় হবে।”

ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৩

শেয়ার করুন