আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:কিউবায় ব্যতিক্রমী কিছু না ঘটলে আজ রোববার দেশটির পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রোকে পুনর্নির্বাচিত করবে। এটিই হবে তাঁর শেষ মেয়াদ এবং এর মধ্য দিয়ে ফিদেল কাস্ত্রোসহ দেশটির বিপ্লবী কমিউনিস্ট প্রজন্মের শাসনের অবসান হবে।শীর্ষ বিপ্লবী ফিদেল কাস্ত্রোর চার দশকব্যাপী শাসনের পর রাউল ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসেছিলেন। তিনি দেশের সর্বোচ্চ পদগুলোর জন্য সর্বোচ্চ দুই মেয়াদের বিধান রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে এ ব্যাপারে সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনী এখনো আনা হয়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, কাস্ত্রো ভাইয়েরা দেশটিতে তাঁদের দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠিত শাসনব্যবস্থা সুরক্ষার স্বার্থেই সরে দাঁড়াচ্ছেন।
কিউবার অর্থনীতিতে সংস্কারের আভাস মিলেছে। রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার বাইরে দেশটিতে এখন ক্ষুদ্র ব্যবসার বিস্তার হচ্ছে। সরকারি বেতনভুক্ত কর্মীদের সংখ্যা কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশটিতে বর্তমানে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ স্বনির্ভর। তবু তাদের মধ্যে হতাশা রয়েছে। এদুয়ার্দো গার্সিয়া নামের এক ব্যক্তি বলেন, তাঁদের নিজেদের মতো করে কাজ করার সুযোগ দিলেও বিভিন্ন চাপের মধ্যে রেখেছে সরকার। তবে আশা করা যায়, ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত শিল্পোদ্যোগের ব্যাপারে কিউবার নতুন সরকারকে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। খামারগুলোকে পরীক্ষামূলকভাবে আরও বেশি স্বাধীনতা দেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া সীমিতসংখ্যক সমবায় প্রতিষ্ঠানকে কৃষি ব্যতীত অন্য কোনো শিল্প গড়ে তোলার জন্য প্রথমবারের মতো সুযোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাজধানী হাভানার একটি বিলবোর্ডে রাউলের একটি উদ্ধৃতি শোভা পাচ্ছে: ‘অর্থনৈতিক লড়াই এখন অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং এটিই আমাদের প্রধান কাজ।’
সরকারি অর্থনীতিবিদ হুয়ান ত্রিয়ানা বলেন, ‘এ লড়াইয়ের ফলাফলের ওপরই কিউবার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। ১৯৯০-এর দশকে আমরা সবচেয়ে কঠিন বাধা অতিক্রম করে এসেছি। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পর আমরা তখন বিশ্বে একক অস্তিত্ব ধরে রাখতে সমর্থ হই। পাঁচ দশক পর কিউবা এখন সমাজতন্ত্র পুনরাবিষ্কারের চেষ্টা করছে।’
তবে নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।অর্থনৈতিক সংস্কারের পাশাপাশি কিউবায় রাজনৈতিক পরিবর্তন এখনো আসেনি।কাস্ত্রো ক্ষমতা ছাড়ার পর প্রায় সাত বছর পেরোলেও উত্তরসূরি হিসেবে সে রকম কাউকে দেখা যাচ্ছে না। কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য মিগুয়েল ডায়াজ-কানেল পরে নেতৃত্বে আসবেন বলে অনেকে ধারণা করছেন। তবে কিউবার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো এখনো অন্তরালেই নেওয়া হয়ে থাকে।
২৪ ফেব্রুয়ারী/নিউজরুম