স্পোর্টস ডেস্ক: সব ঠিকঠাক থাকলে এ সপ্তাহেই অস্ত্রোপচার হবে সাকিব আল হাসানের ডান পায়ে।শিনবোনের চোটমুক্তির জন্য অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়েছেন সিডনির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক স্কট বার্ন। বিসিবি এবং সাকিব নিজেও দ্রুততম সময়ে সারতে চাইছেন অস্ত্রোপচার। অস্ত্রোপচারের এক সপ্তাহ পরই হয়তো দেশে ফিরতে পারবেন, কিন্তু খেলায় ফিরতে সময় লাগবে পাঁচ থেকে ছয় সপ্তাহ। তার মানে আসন্ন শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়া হচ্ছে না সাকিবের।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন সাকিব। সাকিব তো নয়ই, বিসিবির ফিজিও-চিকিৎসকেরাও তখন ধারণা করতে পারেননি স্কট বার্ন অস্ত্রোপচারের কথা বলবেন। কিন্তু এখন অস্ত্রোপচার করিয়েই দেশে ফিরবেন সাকিব। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে এমআরআই ও কম্পার্টমেন্টাল প্রেশার স্টাডি নামে দুটি পরীক্ষার পর অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়েছেন বার্ন। এ জন্য টেন্ট সালকাভিচ নামে সিডনি অলিম্পিক পার্কের এক অস্ত্রোপচার বিশেষজ্ঞের সঙ্গে সাকিবকে যোগাযোগ করতে বলেছেন তিনি। তাঁর সঙ্গে সাকিবের দেখা করার কথা আগামীকাল।
কিন্তু যে সমস্যার সমাধান অস্ত্রোপচারে, ঢাকায় কেন সেটির জন্য বারবার বিশ্রামের কথাই বললেন চিকিৎসকেরা? বিসিবির চিকিৎসক-ফিজিওদের কাছে, এমনকি অ্যাপোলো হাসপাতালেও তো কম দৌড়াদৌড়ি করেননি সাকিব! বিসিবির চিকিৎসক দেবাশিস চৌধুরী কাল এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বললেন, ‘আমাদের এখানে সাকিবের যে তিনটি সমস্যা ধরা পড়েছে, ওখানেও কিন্তু ওই তিনটা সমস্যাই ধরা পড়েছে। কাজেই আমাদের ডায়াগনোসিস সঠিক ছিল।’ অস্ত্রোপচার প্রসঙ্গে বক্তব্য, ‘সাকিবের সমস্যা তিনটি হলো এক্সরশনাল কম্পার্টমেন্ট সিনড্রোম, স্ট্রেস রিঅ্যাকশন ও পেরিওসটিসিস। পরের দুটি সমস্যা অস্ত্রোপচারে ঠিক হবে না। বিশ্রাম আর পুনর্বাসনই এ দুটির চিকিৎসা। অস্ত্রোপচার করা হবে শুধু প্রথম সমস্যাটির জন্য। চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুযায়ী এক্সরশনাল কম্পার্টমেন্ট সিনড্রোমের ক্ষেত্রে প্রথমে কনজারভেটিভ ট্রিটমেন্ট করা হয়। তাতে কাজ না হলে অস্ত্রোপচারে যেতে হয়। সাকিবের ক্ষেত্রে সেটাই অনুসরণ করা হয়েছে।’
অবশ্য অস্ত্রোচার করেও এ ধরনের সমস্যা অনেক সময় পুরোপুরি যায় না বলে মত দিয়েছেন দেবাশিস। অস্ত্রোপচার সফল হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৮০ ভাগ। আবার অস্ত্রোপচার না করে শুধু বিশ্রামে থেকে আপাতসমাধান হলেও সমস্যাটা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে যেকোনো সময়। অস্ত্রোপচারের পর ছয়-সাত দিন হাঁটতেও কিছুটা সমস্যা হতে পারে। এই সময়টা অস্ট্রেলিয়ায় থেকে চিকিৎসকের কাছ থেকে পরবর্তী পরামর্শ নিয়ে দেশে ফিরবেন সাকিব। অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর সঙ্গে আছেন স্ত্রী শিশিরও।
স্ট্রেস রিঅ্যাকশন এবং পেরিওসটিসিস সমস্যা শারীরিক গঠনগত কারণে কি না, এগুলোর পুনর্বাসন-প্রক্রিয়াই বা কী হবে, সেসব জানতে গতকালই বায়োমেকানিক্যাল টেস্ট হওয়ার কথা সাকিবের। ছয় সপ্তাহ খেলতে না পারা মানে শ্রীলঙ্কা সফরে সাকিবকে পাচ্ছে না বাংলাদেশ দল। এপ্রিলের জিম্বাবুয়ে সফরে তিনি খেলতে পারবেন কি না, সেটিও কাল নিশ্চিত করে বলেননি দেবাশিস, ‘থিওরিটিক্যালি জিম্বাবুয়েতে তাঁর যেতে পারার কথা। তবে এ ব্যাপারে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।’
২৪ ফেব্রুয়ারী/নিউজরুম