ঢাকা: কাদের মোল্লার রায়ের বিরুদ্ধে চলতি সপ্তাহেই আপিল করতে যাচ্ছে সরকার। আর রাষ্ট্রপক্ষকে এ আপিলের শুনানিতে সহযোগিতা করবেন সাবেক বিচারপতি সৈয়দ আমীরুল ইসলাম।
অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বিচারপতি সৈয়দ আমীরুলকে এ বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তিনি এতে রাজিও হয়েছেন। বলেছেন, তাকে আলাদাভাবে নিয়োগ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তিনি আপিল শুনানি রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে আইনি লড়াই করবেন।’’
চলতি সপ্তাহেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলেও নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রের এই সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘‘কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আপিলের কাগজপত্র তৈরি কাজ করে যাচ্ছি আমরা। আশা করছি, চলতি সপ্তাহেই আপিল করতে পারব।’’
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে যুদ্ধাপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে গত ৫ ফেব্রুয়ারি তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। তবে ট্রাইব্যুনাল তাকে ৫টি অপরাধে দায়ী করলেও সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দণ্ডাদেশ না দেওয়ায় এবং একটি অপরাধের অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়ায় সাজা বাড়ানোর লক্ষ্যে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে যাচ্ছেন রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের সমন্বয়কারী অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান জানিয়েছিলেন, আগামী (চলতি) সপ্তাহে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে সরকার।
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে গণহত্যা, বুদ্ধিজীবী হত্যা, ছাত্র ও আইনজীবীসহ আরো অনেককে হত্যার মোট ৬টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের মধ্যে ৫টিই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে উল্লেখ করে ট্রাইব্যুনাল এসব অপরাধের দুইটিতে তাকে যাবজ্জীবন কারদণ্ড ও তিনটি অপরাধে ১৫ বছরের সাজা দেন। তবে ট্রাইব্যুনাল তার রায়ে বলেন, ঘটনা ঘটলেও ৪ নম্বর অভিযোগ কেরাণীগঞ্জের ঘাটারচর গণহত্যার অভিযোগের সঙ্গে কাদের মোল্লার সংশ্লিষ্টতা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পারেননি রাষ্ট্রপক্ষ। তাই তাকে এ অভিযোগ থেকে খালাস দেন ট্রাইব্যুনাল।
তবে ইতিপূর্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনে রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের বিধান ছিল না। শুধু যে কোনো খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারতেন প্রসিকিউশন।
আইনের এ অসামঞ্জস্যতা দূর করতে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে পাস করা হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইবুনালস) (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০১৩’। এর ফলে বাদী-বিবাদী ছাড়াও সরকারও রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে। ১৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি এ বিলের অনুমোদন দেওয়ায় তা আইনে পরিণত হয়েছে।
কাদের মোল্লার রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের এখন আপিল করতে বাধা নেই বলে উল্লেখ করে এম কে রহমান জানিয়েছেন, ‘‘আইন অনুসারে রায়ের পরে এক মাস অর্থাৎ আগামী ৫ মার্চের মধ্যে আপিল করতে হবে। তার অনেক আগেই চলতি সপ্তাহে আপিল করা হবে
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৩