ইবতেদায়ি শিক্ষার্থীরা বৃত্তি থেকে বঞ্চিত সরকার এ বৈষম্য করতে পারে না

0
215
Print Friendly, PDF & Email

২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩।।

মহাজোট সরকারের বিরুদ্ধে চরম ইসলামবিদ্বেষী অবস্থান নেয়ার অভিযোগ দিন দিন বেড়েই চলেছে। সরকারের আচার-আচরণে বারবার প্রমাণ হচ্ছে, তারা যেন ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলামকে বিদায় করার জন্য নতুন শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করে সেখানে ধর্মশিক্ষাকে একেবারে গুরুত্বহীন করেছে বর্তমান সরকার। এর প্রভাব সমাজে পড়তে শুরু করেছে। নৈতিকতাহীন শিক্ষা সমাজে নানা অনাচার বাড়াচ্ছে। বাড়াচ্ছে খুন-সন্ত্রাস। আমরা দেখলাম মাদরাসা শিক্ষার প্রতিও সরকার বৈষম্য প্রদর্শন করছে।

শিক্ষার একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে সরকারি প্রাথমিক উত্তীর্ণ ছাত্রদের প্রায় ৫৫ হাজার শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হয়। এ ব্যবস্থাকে আমরা ইতিবাচক মনে করি। আরো বেশিসংখ্যক ছাত্রকে বৃত্তি দিয়ে শিক্ষায় ছাত্রদের আকৃষ্ট করা হোক। কিন্তু আমরা যখন দেখি একই সাথে পাস করা ইবতেদায়ি ছাত্রদের জন্য একটি বৃত্তির ব্যবস্থাও নেই তখন দুঃখ করা ছাড়া উপায় থাকে না। একই মায়ের দুই সন্তানের প্রতি কেন দু’ধরনের আচরণ। ইবতেদায়ি ছাত্রদের সংখ্যা প্রাথমিকের চেয়ে কম। সে হিসাবে তাদের বৃত্তির সংখ্যাও আনুপাতিকহারে কম হতে পারে। কিন্তু একেবারেই বৃত্তি না দেয়াকে অন্যায় ছাড়া কিছু বলা যায় না।

এবার প্রাথমিক শিা সমাপনী পরীায় উত্তীর্ণদের মধ্যে ৫৪ হাজার ৫৩০ শিার্থীকে বৃত্তি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে ২১ হাজার ৯৮০ জন, সাধারণ ৩২ হাজার ৫৫০ জন ও সম্পূরক এক হাজার ৮২ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হয়েছে। ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিপ্রাপ্ত একজন শিার্থী প্রতি মাসে ২০০ টাকা এবং সাধারণ ও সম্পূরক বৃত্তিপ্রাপ্তরা প্রতি মাসে ১৫০ টাকা করে পাবে। মাসিক বৃত্তি ছাড়াও বৃত্তিপ্রাপ্তরা প্রতি বছর এককালীন দেড় শ’ টাকা করে পাবে। অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিার্থীদের এ বৃত্তি দেয়া হবে। জীবনযাত্রার ব্যয় যে হারে বেড়েছে তাতে এ সামান্য বৃত্তির টাকা এমন কিছু নয়। কিন্তু এর বড় একটা প্রতীকী মূল্য রয়েছে। এটি ছাত্রদের মনোবল ও আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। শিক্ষার প্রতি নিজেদের আগ্রহ বাড়ায়। পাশের ইবতেদায়ি পাস করা মেধাবী ছাত্রটি যখন দেখবে তার চেয়ে কম মেধাবী একজন প্রাইমারি পাস করা ছাত্র বৃত্তির টাকা পাচ্ছে, সরকারি উচ্চ স্বীকৃতি পাচ্ছে তখন সে হীনম্মন্যতায় ভুগবে। মাদরাসা শিক্ষার প্রতি তার নেতিবাচক মনোভাব আসাই তখন স্বাভাবিক হবে।

শিক্ষার প্রতি সরকারের দ্বীমুখী নীতিকে সমর্থন করা যায় না। মনে হচ্ছে, সরকার মাদরাসা শিক্ষার প্রতি ছাত্রদের হতাশ করতে চাইছে। এই হতাশার মাধ্যমে ছাত্রদের মাদরাসা শিক্ষা থেকে সরে আসার পরোক্ষ প্রণোদনা দিচ্ছে। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে সরকারের চাপিয়ে দেয়া এ বৈষম্য আরো নগ্নভাবে প্রকাশ পেয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদরাসা ছাত্রদের ভর্তির ওপর নানা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আমরা মনে করি, এ ধরনের কপট আচরণ থেকে সরকার সরে আসবে।

শিক্ষার্থীদের প্রতি সমান সুযোগ সৃষ্টি করবে। এর মাধ্যমে সংবিধানে উল্লিখিত জনগণের অধিকার রক্ষায় সরকার মনোযোগী হবে।

শেয়ার করুন