কাবেরী গায়েনের সঙ্গে আমিও একমত, রাজাকার-আলবদরদের দেশ বাংলাদেশ নয়। আজকের এই বিশাল নতুন প্রজন্মের একত্র বিক্ষোভ, সমাবেশ একজন সমাজবিজ্ঞানী হিসেবে আমার কাছে শুধু একটি দাবির উপলক্ষ মনে হয়নি। অনেক নতুন বিষয়কে মানুষের সামনে নিয়ে এসেছে।
আজ ২০১৩ সালেও দেশের নারী-শিশুরা নিরাপদ নয়। তাদের নিরাপত্তার জন্য আমরা কি এভাবে একত্র হয়েছি একবারও? কত চোখের পানি আঝোরে ঝরে যাচ্ছে প্রতিদিন। প্রতিদিনের আলোচনা আমাকে, আমার মতো হাজার মনকে, বিবেককে নাড়া দিয়ে যায়।
আমার দেশের অধিকাংশ মানুষ ধর্মনিরপেক্ষ, রাজনীতি-নিরপেক্ষ শান্তিপ্রিয় মানুষ। বিশেষ করে আমার বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের ছেলেমেয়েরা। দিকনির্দেশনাহীন একটি অস্থির সময় তারা পার করছে। অথচ তাদের এই বিশাল আত্মশক্তিকে কত ভালো কাজে লাগানো যেত, শুধু রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না। তা না হলে হার্ভার্ড, কেমব্রিজ, অক্সফোর্ড বা বিশ্বের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েদের চেয়ে কোন অংশে আমাদের ছেলেমেয়েরা কম? শুধু সুযোগের অভাব।
পত্রপত্রিকা বা মিডিয়ায় ছোট ছোট শিশুকে বলতে শুনছি, ‘ফাঁসি চাই’ বা এ ধরনের কথাগুলো, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধির জন্য ক্ষতিকর।শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য আমাদের সচেতন অভিভাবকদের আরও বেশি যত্নবান হওয়া উচিত।
শেষে বলি, তরুণ প্রজন্মকে ধন্যবাদ এমন একটি প্রতিবাদী কণ্ঠ, মঞ্চ, সময় উপহার দেওয়ার জন্য। কিন্তু তাদের সতর্ক থাকতে হবে, যাতে কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের স্বার্থ এতে চরিতার্থ না হয়ে যায়। আমি তাদের আরও বলতে চাই, এই গরিবের দেশে সোচ্চার হওয়ার মতো আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে। সেসবের জন্যও এই প্রতিবাদী মন ও কণ্ঠের মঞ্চগুলো যেন আরও প্রতিবাদী হয়ে ওঠে।
তাহিসনা আক্তার
সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩.