ঢাকা: সারা দেশে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরসহ ধর্মাশ্রয়ী দলগুলোর সংঘর্ষে ৪জন নিহত হয়েছেন।শুক্রবার জু’মার নামাজের পর থেকে শুরু হয়ে বিকেল পর্যন্ত তাদের তাণ্ডব চলে। নিহতদের মধ্যে গাইবান্ধায় ২, ঝিনাইদহে ১ ও সিলেটের ১জন রয়েছেন।
গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলায় হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় ২ জন নিহত ও ৩ জন গুলিবিদ্ধ হন।
পুলিশ সুপার নাহিদ ইসলাম একজন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করলেও গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল সূত্রে ২ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাক্ষণিকভাবে নিহতদের নামপরিচয় জানা যায়নি। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২০ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে বলে জানান এসপি নাহিদ।এছাড়া এ সংঘর্ষের ঘটনায় সোহেল (২৫), সজিত (১৮) ও পাপুল মিয়া নামে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গাইবান্ধা শহরের পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ সুপার জানান, হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা এ নাশকতা চালাচ্ছে। পুলিশ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২০ রাউন্ড রাইফেলের গুলি ছোঁড়ে এবং কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।
সিলেটে জামায়াত-শিবিরসহ কথিত ইসলামী দল ও পুলিশের মধ্যে সংর্ঘষে আহত একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
শুক্রবার জু’মার নামাজের পর নামসর্বস্ব ইসলামী দলগুলোর বের করা বিক্ষোভ মিছিল থেকে সিলেট গণজাগরণ মঞ্চে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। এরপর একটি পুলিশ ভ্যানে আগুন দেওয়া হয়। সহিংসতা মোকাবিলায় পুলিশ শতাধিক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এখন পর্যন্ত ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়েছে ১০ জন।
আহতদের সবাইকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখানেই একজন মারা যায়। তার পরিচয় পাওয়া যায়নি।
বেলা ২টা ৫০ মিনিট থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলাকালে নগরীর জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, শহীদ মিনার ও গণজাগরণ মঞ্চ এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।এসময় গণজাগরণ মঞ্চ ভাঙচুরসহ গণজাগরণ মঞ্চের পাশে ট্রাস্ট ব্যাংকের সামনে রাখা পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা।
অপরদিকে, ঝিনাইদহে জামায়াত ও সমমনা দলগুলোর সহিংসতার মধ্যে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে একজন নিহত হয়েছে। এসময় তিনজন সাংবাদিককে মারধরও করা হয়।
নিহত ব্যক্তির নাম আবদুস সালাম (৫৫)। জামায়াত দাবি করেছে, সালাম তাদের কর্মী।
শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে শহরের হাটের রাস্তায় জামায়াত-শিবিরসহ সমমনা ইসলামী দলগুলো মিছিল বের করে। সহিংসতার আশঙ্কায় পুলিশ এতে বাধা দেয়। এরপরও তারা মিছিল চালিয়ে গেলে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোঁড়ে। এতে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন সালাম। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহত সালাম ঝিনাইদহ সিদ্দিকীয়া আলিয়া মাদ্রাসার আরবি বিভাগের প্রভাষক। সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৩