কৃষি ডেস্ক(২০ ফেব্রুয়ারী):প্রায় সাড়ে তিনি বছর আগে গ্রীণ বাংলাদেশ নামক একটি কোম্পানির কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বিভিন্ন� গ্রামের মানুষ অধিক লাভের শুরু হয় পাম চাষ। কোম্পানীর লোভনীয় কথায় এ এলাকার কৃষকরা গুরুত্ব সহকারে পাম চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়ে। সারা বছর পরিশ্র্রমের পর এখন গাছে গাছে থোকায় থোকায় পাম ফল। ভালো ফলন পেয়ে কৃষকরা খুবই খুশি।কিন্তু এ খুশি যে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের কপালে। কারণ এ ফলের সঠিক প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং বিপণন পদ্ধতি জানা নেই অত্র এলাকার কৃষকদের। এদিকে গাছ লাগানোর এক বছর পর গ্রীণ বাংলাদেশ নামক কোম্পানীর প্রতিনিধিরাও উধাও হয়ে যায়। তাই এ ফল নিয়ে মহাবিপদে পড়েছেন উপজেলার পাম চাষীরা।
উপজেলার ভাতঘরা গ্রামের পাম চাষি মাহবুব জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে পাম চাষ করেছেন। সাড়ে ৩ বছর আগে লাগানো গাছগুলো এখন পরিপূর্ণ ফল দিতে শুরু করেছে।এখন পাম ভাঙ্গিয়ে তেল বের করার পালা,আর সেখানেই বিপত্তি। পাম ভাঙানোর কোনা মেশিন না থাকায় এবং চাষিরা পাম প্রক্রিয়াজাতের সঙ্গে পরিচিত না হওয়ায় সঠিক প্রক্রিয়ায় পাম থেকে তেল উৎপাদন অথবা পামবীজ বিপণন করতে পারছেন না। মাহবুব আরো জানান, কালীগঞ্জ উপজেলায় গ্রীণ বাংলাদেশের কাছ থেকে বিভিন্ন এলাকার চাষীরা প্রায় ৮হাজার পামের চারা ক্রয় করে রোপন করে। ফল আসায় আনন্দিত হয়েছিলেন চাষীরা কিন্তু সেই আনন্দ বেশি দিন ধরে রাখতে পারেননি। কারণ গাছে ফল থাকলেও ফলের ক্রেতা নেই। পাম চাষী মিজানুর রহমান জানান, তিনি গ্রীণ বাংলাদেশ নামক কোম্পানীর কাছ থেকে একটি গাছ ৮‘শ টাকা দরে ৪০টি পাম গাছ ক্রয় করেছিলেন।
কোম্পানীর প্রতিনিধিরা ৩ বছর পরিচর্যা করবেন এবং ফল আসলে তা বিক্রির ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু গাছ লাগানোর এক মাস পর কোম্পানীর প্রতিনিধি গা ঢাকা দেয়। বড় ঘিঘাটি গ্রামের আরিজ মিয়া জানান তিনি ২০টি পাম গাছ ক্রয় করেন ২২০ টাকা দামে। হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করেন পাম বাগানে। গাছে ফলও এসেছে কিন্তু ফলের ক্রেতা নেই। গাছ কেটে অন্য কিছু করবেন না রেখে দিবেন সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। শুধু মাহবুব,মিজান, আরিজ নয় উপজেলার দুলাল মুন্দিয়ার তাজুল, একতারপুরের মুক্তার হোসেন, ডাঃ মোহাম্মদ, বাবরা গ্রামের তোরাব আলী, নিশ্চিন্তপুরের টিটো, পান্তাপাড়ার ওমর ফারুক, বারবাজারের আরশেদ আলীসহ বিভিন্ন এলাকার চাষিরা একই সমস্যায় ভুগছেন। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা মোশারফ হোসেন জানান, কালীগঞ্জে কি পরিমান পাম চাষ হয়েছে তার সঠিক হিসাব নেই। এমনকি পাম চাষ করার জন্য কোন কৃষককে উৎসাহিত করা হয়নি ।বর্তমানে যারা পাম চাষ করেছে তারা মেশিনের অভাবে তেল তৈরি করতে পারছে না।কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন পাম তেল তৈরির মেশিনের দাম প্রায় ১ কোটি টাকা এবং মেশিনটি মালয়েশিয়া থেকে কিনে আনতে হয়।
নিউজরুম