২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩: ডিজিটাল দিনলিপিকে মূলত ব্লগ হিসেবে চেনে এ দেশের মানুষ। কিন্তু এই দিনলিপি লিখতে লিখতে যে এক ভয়ঙ্কর নাস্তিকচক্র গড়ে উঠেছে তা অনেকেরই অজানা। থাবা বাবা ওরফে রাজীব খুনের পর বিষয়টি সামনে আসে। রাজীবের বিভিন্ন ব্লগ ও ফেসবুকে অনেকের মন্তব্যও কুৎসিত এবং বিকৃত রুচির।
ইসলাম ধর্ম, নবী মোহাম্মদ সা: এবং ইসলামের রীতিনীতির বাইরেও মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালাকে নিয়ে কুৎসা রটিয়ে ব্লগে বিভিন্ন রকমের লেখা ছড়ানো হয়েছে।সরকারের তরফে রাজনৈতিক বিষয়গুলোর দিকে নজর দেয়া হলেও ধর্মীয় বিষয়গুলো একেবারেই মনিটরিংয়ের বাইরে ছিল জানিয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) এক কর্মকর্তা বলেন, এমন সব ব্লগের সন্ধান মিলছে যা আমরা চিন্তাও করিনি। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্ম ইসলাম নিয়ে এ রকম কোনো ব্লগ বা ফেসবুক বার্তা বা নোট কেউ লিখতে পারেন এমনটা ভাবনায়ও আসে না।
আমার ব্লগে থাবা বাবা ‘লাড়ায়া দে…’ নামে একটি ব্লগ লিখেন গত বছরের জুলাই মাসের ১৮ তারিখে। সেখানে থাবা বাবা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে আক্রমণ করেন।তার নিরাকার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। লাত, উজ্জা ও মানাতকে আল্লাহর কন্যা হিসেবে উল্লেখ করেন। হিমালয়ের চিপায় দেবতাদের এক অনুষ্ঠানের আকারে কাল্পনিক রম্য সাজানো হয়, যেখানে নোংরাভাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে আক্রমণ করা হয়েছে। একই সাথে নবী মোহাম্মদ সা:কে আক্রমণ করা হয় ওই ব্লগে।
আমার ব্লগটিতে এটি এখনো প্রকাশিত আছে। গতকাল মঙ্গলবার এতে গিয়ে দেখা যায় তার অশালীন এবং ধর্মকে আক্রমণ করা বিভিন্ন ব্লগের পাঠক সংখ্যা কম নয়। তাকে সমর্থন করেও অনেকে লিখেছেন। তাকে সাহস জুগিয়েছেন। থাবা বাবার এসব ব্লগ অনেক দিন ধরে চলে এলেও এ ব্যাপারে ইসলামপন্থীরা একেবারেই অন্ধকারে ছিলেন।থাবার মৃত্যুর পর একটি অনলাইন নিউজে প্রথম থাবা বাবার ফেসবুকের স্ক্রিনশর্ট দেয়ার পর সেখানে ঢুকে অনেকে তার সম্পর্কে জানতে চাইলেন। সেই থেকে শুরু।
অথচ এর জন্য এখন একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলকে দায়ী করা হচ্ছে। থাবা বাবা, তার সহযোগীদের এসব কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সবাই ওয়াকিবহাল ছিল না। তাদের জানিয়েছেন থাবারই অনুসারীরা। থাবার জন্মদাতা পিতা একটি পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মৌলবাদের বিরুদ্ধে লেখার কারণে তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আবার আরেকটি পত্রিকা বলছে, থাবার হত্যাকাণ্ডের মোটিভ জানতে পুলিশ এগোচ্ছে ভিন্ন পথে। তানজিলা নামে তার এক বান্ধবীর সাথে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে আলাপ হচ্ছে।
থাবা কেবল ব্লগে নয়, ফেসবুকে ব্যাপকভিত্তিক সমর্থন পেয়েছে। তার থাবা বাবা অ্যাকাউন্টে গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর রাত ৭টা ৪৯ মিনিটে একটি স্ট্যাটাস আপডেট করা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, ‘সবাই তারেক- কোকো আর হাসিনা-খালেদার বিদেশে টাকা পাচারের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় করে ফেলছে… এ দিকে প্রতি বছর সবার চোখের সামনে দিয়ে কয়েক লাখ হাজী যে মিলিয়ন মিলিয়ন টাকা সৌদি আরবে ঢেলে আসছে সেটা কেউ টুঁ-শব্দটা করে না…!!’
এখানে গ্র্যান্ডফাদার জাস্টিস বলেছেন, ‘হাজীদের টাকাটা তো অবৈধ না…তাই না।’ জবাবে থাবা বলেছেন, ‘টাকা তো চলেই যাচ্ছে তা স্রেফ বিনা কারণে।’ ধৈর্য নেই বলেছেন, ‘সমস্যা নাই, প্রতিবেশী না খাইয়া মরুক আমার ফরজ আমি পালন করুম। পরকালে আমারে বাঁশ দেয়নের সময় কি প্রতিবেশীরা আইবো।’
ক্ষণিকের অতিথি বলেছেন, ‘এন্সাল্লা, এবার আমরা ৪০০ শয়তান আদমের পাপ ধুয়তে সৌদিয়ারব পাঠাচ্ছি। আমাদের কোম্পানির একটা সিস্টার কনসার্ন ৪০০ হজযাত্রী পাঠাচ্ছে। দাড়িওয়ালা লোক এমনিতেই আমার পছন্দ না। কিন্তু তারা যে কতখানি শয়তান তা এদের না দেখলে বোঝা মুশকিল।’
জাকির বালী লিখেছে, ‘যে টাকা খরচ হয় তা দিয়া ১০০ জন বেশ্যা দেশে বইসা ভোগ করে ও দেশের জন্য উপকার করার মতো টাকা থাকে। তাই আসুন ৭২ এর নেশা বাদ দিয়া ১০০ উপভোগ করি আর গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করি। ’
লুৎফুন নাহার শোভা বলেছে, ‘বুদ্ধি থাকলে থাইল্যান্ড গিয়া রিফ্রেশ হইত। লোভীগুলি পাপ খণ্ডাইতে যায়…ধিক।’
এ রকম তার আরো অনেক সাঙ্গোপাঙ্গ ছিল এবং আছে। যারা আপাতত এ ধরনের লেখা থেকে বিরত আছে। আবার অনেকে এসব লেখা সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।