কৃষি ডেস্ক(২০ ফেব্রুয়ারী): নাটোরে রসুনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এ বছর গত মওসুমে দাম কম থাকায় প্রচুর আর্থিক লোকসান সত্ত্বেও দেশের সর্বাধিক রসুন উৎপাদনকারী জেলা হিসেবে পরিচিত নাটোরের কৃষকেরা চলতি মওসুমেও ব্যাপকহারে রসুনের আবাদ করেছেন। সেচ ও সারের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা এবং অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করায় এবার রসুনের বাম্পার ফলনের আশা করছেন এ জেলার কৃষকেরা।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ বছর নাটোর জেলায় ১৯ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে রসুনচাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত মওসুমের চেয়ে এক হাজার ১১৫ হেক্টর বেশি। এ এলাকায় এবার এক লাখ ৫৯ হাজার ৩০৭ টন রসুন উৎপাদিত হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
সরেজমিন দেখা গেছে, কয়েক দিন পর রসুন তোলা শুরু হবে। বর্তমানে রসুনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় উচ্ছ্বসিত এ এলাকার চাষিরা।
বড়াইগ্রাম ও গুরুদাসপুর উপজেলার চকপাড়া, মানিকপুর, রয়না ভরট, বাজিতপুর, রোলভা, হাঁসমারী, ধারাবারিষা, তালবাড়িয়া গ্রামের কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত মওসুমের পুরো সময়জুড়েই বাজারে রসুনের দাম কম ছিল। মওসুমের শুরুর দিকে কিছুটা দাম থাকলেও শেষ পর্যন্ত প্রতি মণ রসুন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। দাম কম হওয়ায় গত মওসুমে কৃষকের উৎপাদন খরচই ওঠেনি। এ বছর বীজের দাম কম থাকায় এবং উৎপাদিত রসুনের ভালো দাম পেলে গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবেÑ এ আশায় এই এলাকার কৃষকেরা এবারো ব্যাপকহারে রসুন আবাদের দিকে ঝুঁকেছেন। অন্য বছরের তুলনায় এবার রসুনের বাম্পার ফলন হবে এমন আশা করছেন তারা।
বড়াইগ্রাম উপজেলার রয়না ভরট গ্রামের রসুনচাষি মোহাম্মদ আলী ও জালশুকা গ্রামের মোশাররফ হোসেন বাবু জানান, প্রতি বিঘা জমিতে রসুন চাষে প্রায় ৪০ জন শ্রমিক লাগছে। তাদের শ্রমমূল্য ও খাবার খরচ বাবদ ব্যয় হয় প্রায় ছয় হাজার টাকা। তা ছাড়া বীজ, সার ও সেচ দিতে আরো প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ভালো ফলন হলে প্রতি বিঘা জমিতে ২০ থেকে ২৫ মণ রসুন পাওয়া যাবে। আর গতবারের মতো দাম কম থাকলে কৃষকের উৎপাদন খরচই উঠবে না।
রয়না গ্রামের রসুনচাষি আবু তাহের গাজী জানান, সার, ডিজেল ও বিদ্যুতের দাম বেশি। গত বছর রসুনের উৎপাদন খরচই ওঠেনি। এবার রসুনের ন্যায্যদাম না পেলে কৃষকেরা অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে যাবে।
নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক রহমতুল্লাহ সরকার জানান, বর্তমানে নাটোরের কৃষকের কাছে রসুন প্রধান অর্থকরী ফসল হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো আছে। তাই এবার জেলায় রসুনের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি। তবে ভালো দাম না পেলে কৃষক রসুনচাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।
নিউজরুম