স্পোর্টস ডেস্ক(১৯ ফেব্রুয়ারী): তখনো জানা হয়নি প্রতিপক্ষ কারা। শুধু জানতেন, পরদিন প্রতিপক্ষ যে-ই হোক, জয়ের বিকল্প নেই। শিরোপা ধরে রাখার এই একটাই পথ। ম্যাচটা যে ফাইনাল!
কাল দুপুরে মিরপুরের একাডেমি মাঠে অনুশীলন করল ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস।প্রতিপক্ষ না জেনেও অনুশীলনের আগে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা বললেন, ‘আমরা আত্মবিশ্বাসী। পুরো টুর্নামেন্টেই আমরা ভালো খেলেছি। ফাইনালেও নিজেদের সেরা খেলা খেলতে হবে।’ এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ঠিক হয়ে গেছে, মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ দ্বিতীয় বিপিএলের ফাইনালে ঢাকার প্রতিপক্ষ চিটাগং কিংস। রাতে সে দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ জানালেন, শিরোপার স্বপ্ন আছে তাদেরও, ‘টি-টোয়েন্টিতে কেউই ফেবারিট থাকে না। আমাদের কাছে এটা আর একটা ম্যাচই। কাজেই চাপ না নিয়ে ইচ্ছাশক্তির বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে।’
মাশরাফির দৃষ্টিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার একটাই শর্ত—ভালো খেলতে হবে প্রতিপক্ষের চেয়ে। তা ভালো ঢাকা খেলছেও। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে হারিয়েছে সিলেট রয়্যালসকে। এর আগে লিগ পর্বে ১২ ম্যাচের ৯টিতেই জয়। ফাইনাল প্রতিপক্ষ চিটাগং কিংসের বিপক্ষে রেকর্ড অবশ্য ১-১। অন্যদিকে চিটাগং কিংস লিগ পর্বে জিতেছে মাত্র ছয়টি ম্যাচ।
ঢাকার পারফরম্যান্স আসলে সামর্থ্যেরই অনুবাদ। তারকাখচিত এক দল। মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, মোহাম্মদ আশরাফুলের সঙ্গে তরুণ তুর্কি এনামুল হক। বিদেশিদের মধ্যে গত ম্যাচে ভিড়িয়েছিল ক্রিস গেইল আর কাইরন পোলার্ডকে।গেইল চলে গেছেন এক ম্যাচ খেলেই। তাতে অবশ্য আফসোস নেই মাশরাফির, ‘পুরো টুর্নামেন্টে গেইলকে ছাড়াই খেলেছি। সাকিব-আশরাফুলরা যদি নিজেদের খেলাটা খেলতে পারে…, পোলার্ডও আছে। সবাই ভালো খেললে গেইলের অভাব বোধ করব না।’ ফাইনালের আগে স্থানীয়দের ওপর আস্থা রাখছেন মাহমুদউল্লাহও, ‘ইচ্ছা ছিল অন্তত ফাইনালে খেলব। প্রথম পাঁচ ম্যাচে মাত্র একটা জয় পাওয়ার পরও স্থানীয় খেলোয়াড়দের চেষ্টায় এত দূর এসেছি। আশা করি, শেষটাও ভালো হবে।’
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বড় তারকাদের বড় কোনো প্রভাব দেখেন না মাশরাফি। ‘হিরো’ এখানে যে কেউই হতে পারে। প্রতিপক্ষ তারকাবিহীন হলেও নির্ভার হওয়ার সুযোগ নেই। যেমন নির্ভার হওয়া যাবে না মিরপুরের উইকেটে ২০০ রান করেও। ‘রেস টু ফাইনালে’ ১৯৭ রান করেও ঘাড়ে সিলেট রয়্যালসের নিঃশ্বাস টের পেয়েছিল ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস। কত রান করলে ফাইনালে জিতবেন, এমন প্রশ্নে সতর্ক মাশরাফি, ‘এটা আসলে বলা কঠিন। উইকেট খুবই স্পোর্টিং। স্পিনাররা ভালো করছে।ব্যাটসম্যানরাও রান পাচ্ছে। এমনকি পেস বোলাররাও কখনো কখনো ভালো বল করছে। এ রকম উইকেটে নিরাপদ স্কোর বলা কঠিন। তবে আমার মনে হয়, ১৭০-৮০ করতে পারলে খেলাটা ভালো হবে।’
বিপিএলে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে বলে কিছু নেই। তবে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস যখন ঢাকায় খেলে, গ্যালারির বেশির ভাগ দর্শকের সমর্থন তারাই পায়। মাশরাফি সেটা স্বীকার করলেও দর্শকদের সমর্থনটাকে বলছেন খেলোয়াড়-নির্ভর, ‘সব দলেই বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়েরা আছে। ঢাকা যেমন সমর্থন পাচ্ছে, তেমনি মুশফিকেরও অনেক ভক্ত আছে। ওরা হয়তো এ কারণে সিলেটকে সমর্থন করেছে। চিটাগংয়ের মাহমুদউল্লাহকে সমর্থন করছে।’
শুরুতে দর্শক-খরায় ভোগা বিপিএলের গ্যালারি ভরে উঠতে শুরু করে খুলনা পর্বের শেষ দিন থেকে। আজকের ম্যাচের টিকিটের জন্য তো কাল হন্যে হয়ে ঘুরতে দেখা গেল অনেককেই। ফাইনাল বলে কথা!
নিউজরুম