বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক(১৮ ফেব্রুয়ারী): বর্তমানে অনেকেই সারাণ কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শোনেন। পড়ালেখা, ভ্রমণ, কম্পিউটারে সময় কাটানোসহ বেশির ভাগ তরুণ-তরুণীর সঙ্গী এখন হেডফোন। অনেকের কাছে হেডফোন এখন অনেকটা ফ্যাশনের অংশ। তবে এতে কানের কী ধরনের তি হয় বা চার পাশ সম্পর্কে তার খেয়াল থাকে কি না সে সম্পর্কে জানতে চাইলে হেডফোন ব্যবহারকারীরা নিশ্চুপ হয়ে যান। বাইরের পৃথিবী থেকে আলাদা হয়ে যেতে অনেকেই হেডফোনে জোরে গান ছেড়ে রাখেন। কিন্তু এর মাধ্যমে যে চিরতরে বধির হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, এ সম্পর্কে অনেকেই অসচেতন। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চশব্দে কানের কাছে গান বাজতে থাকলে তা আমাদের কানের ভেতর থাকা কোষগুলোকে নষ্ট করে দেয়। এ কোষগুলো শব্দকে তড়িৎ তরঙ্গ আকারে মস্তিষ্কে পৌঁছে দেয়। এর মাধ্যমে আমরা শব্দ শুনতে পাই। কিন্তু উচ্চস্বরে গান শুনলে এ কোষ নষ্ট হওয়ায় আমাদের শ্রবণেন্দ্রিয়তে সমস্যা হয়। অনেক েেত্র চিরস্থায়ী বধিরতাও ডেকে আনতে পারে। রকল্যান্ড গ্রুপ অব হসপিটালসের নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ ডক্টর জে এম হানস বলেন, ‘১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের অনেকেই আমাদের কাছে আসেন। বেশির ভাগেরই একটানা অনেকণ মাথাব্যথা থাকে। অনেকে আবার সেলফোনে রিং হওয়ার শব্দ শুনতে পান। অনেকে কানে কম শোনেন। এ রকম সমস্যা নিয়ে যারা আসেন, তাদের প্রায় প্রত্যেকেই সেলফোনে গান শোনা ও কথা বলার পেছনে দিনে ৭-৮ ঘণ্টা সময় ব্যয় করেন। শ্রবণ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শিশুদের কাছেও পৌঁছে যাচ্ছে গান শোনার ব্যবস্থা।অনবরত গান শুনতে থাকায় তাদের কানের পর্দায় সমস্যা হতে পারে। ফলে পরবর্তী প্রজন্মের অনেকেই বধিরতায় আক্রান্ত হতে পারে। বিষয়টি ভালোভাবে দেখছেন না মস্তিষ্ক বিশেষজ্ঞরা। তাদের ভাষায়, প্রাথমিকভাবে এর কোনো প্রভাব না পড়লেও দীর্ঘমেয়াদে স্মৃতিশক্তির সমস্যা হতে পারে। হেডফোন আর সাধারণ স্পিকারে গান শোনার মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। সাধারণ স্পিকারে দূর থেকে গান ভেসে আসায় এতে তির আশঙ্কা কম থাকে। আর হেডফোন সরাসরি কানের সাথে সংযুক্ত।আর্টেমিস হাসপাতালের মস্তিষ্ক বিভাগের প্রধান ডক্টর প্রভীন গুপ্ত বলেন, যারা পড়াশোনার সময় গান শুনতে থাকেন, তাদের পে পড়া বুঝতে সমস্যা হয়।বইয়ের লেখার অন্তর্নিহিত অর্থ তারা ধরতে পারেন না। কানে হেডফোন লাগিয়ে টানা গান শুনলে এর তিকর প্রভাব পড়তে বাধ্য। এতে বধিরতারও আশঙ্কা থাকে। এ ছাড়া রাস্তা পার হওয়ার সময় গান শুনলে দুর্ঘটনারও আশঙ্কা থাকে। গান শুনতে শুনতে রাস্তা পার হলে পথচারীরা গাড়ির হর্ন শুনতে পান না।
নিউজরুম