সেপ্টেম্বরে ভারত যাচ্ছেন শেখ হাসিনা

0
138
Print Friendly, PDF & Email

ঢাকা,: আগামী সেপ্টেম্বরে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার এই সফরেই তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে দু’দেশের মধ্যে চুক্তি হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। আনন্দবাজার অনলাইন আজ এ খবর জানিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ গতকাল রোববার ঢাকায় শেখ হাসিনার সাথে বৈঠকের পরেই সেপ্টেম্বরে ভারত সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিস্তা ও স্থল-সীমান্ত চুক্তি নিয়ে সংশয়ের কারণ নেই বলেও জানান খুশিদ।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির বিষয়টি বিবেচনায় রেখেও তিস্তা চুক্তিটি করে ফেলার বিষয়ে দুই দেশ ঐকমত্যে পৌঁছেছে। খুরশিদের ঘোষণায় সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট।
আনন্দবাজার আরো জানায়, খুরশিদের ঘোষণার পরেই বাংলাদেশের কূটনৈতিক মহলে স্বস্তির আবহ দেখা যায়। তারা জানায়, চলতি বছরের শেষেই বাংলাদেশে নির্বাচন হতে পারে। এর আগে তার ভারত সফরে তিস্তার পানির ভাগ নিয়ে বাংলাদেশ জুড়ে যে আরো এক দফা আশার সঞ্চার হবে, হাসিনা তা বিলক্ষণই জানেন। সুতরাং তিস্তা চুক্তি নিয়ে একেবারে চূড়ান্ত আশ্বাস না পেলে তিনি এই কর্মসূচি নিতেন না। হাসিনার আগের ভারত সফরেই তিস্তা চুক্তির বিষয়ে দু’দেশের সহমতি হয়। ঠিক হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরেই দু’দেশ চুক্তি স্বাক্ষর করবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পানির ভাগ নিয়ে মমতার আপত্তিতে সে চুক্তি স্থগিত হয়ে যায়।
এ দিনও খুরশিদ মমতার পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, এই আপত্তির অর্থ কিন্তু এই নয় যে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের বিরোধী। পানি বণ্টন চুক্তিতে তার আপত্তি নেই, আপত্তি কিছু খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে।
আলোচনার মাধ্যমে সেই আপত্তি দূর করতে ভারত সরকার এখনও সচেষ্ট।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রের খবর, সেই সব খুঁটিনাটি বিষয়কে আপাতত বাদ রেখে তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে চুক্তি সই করতে রাজি হয়েছে দুই দেশ। ভারতের কূটনীতিকরা এ দিন শেখ হাসিনাকে বলেন, অতীতে প্রায় সব দ্বিপাক্ষিক চুক্তিই আগে স্বাক্ষর হয়েছে, তার পরে আলোচনার মাধ্যমে খুঁটিনাটি বিষয়গুলি চূড়ান্ত করা হয়েছে। গঙ্গার পানি বণ্টন নিয়ে দু’দেশের চুক্তিও আগে স্বাক্ষর হয়, তার পরে আলোচনার মাধ্যমে পানির পরিমাণ নির্দিষ্ট হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক অফিসার বলেন, বৈঠকে ভারতের প্রস্তাবে সায় দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোচনা চলুক, আগে চুক্তিটি করে নিই আমরা। তার পরেই সফরের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।
তিস্তার জল ভাগ নিয়ে বাংলাদেশের সাথে চুক্তিতে মমতার কোনো আপত্তি ছিল না। তার সঙ্গে কথা না বলে দিল্লি পানির পরিমাণ নির্ধারণ করাতেই তিনি ুদ্ধ হন। জানিয়ে দেন, পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে বঞ্চিত করে বাংলাদেশকে পানি দেওয়া যাবে না। বস্তুত গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির সময়েও পানির পরিমাণ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে মতভেদ দেখা দিয়েছিল। সে সময়ে ঠিক হয় আগে চুক্তিটি হয়ে যাক, তার পরে আলোচনা করে পানির পরিমাণ নির্ধারণ করা যাবে। হয়ও তাই। ভারতের কূটনীতিকরা আজ তিস্তা চুক্তি নিয়েও একই ফর্মুলা মেনে নেয়ার প্রস্তাব দেন। অর্থাৎ, চুক্তির পরেও মমতার সাথে আলোচনার রাস্তা খোলা থাকছে। খুরশিদ মনে করেন, কূটনীতিতে সঙ্ঘাতের কোনো জায়গা নেই। আলোচনার মাধ্যমেই আপত্তি ও মতভেদ মিটিয়ে ফেলা সম্ভব। সেই কারণেই তিনি ঢাকায় এসেও মমতার ঢালাও প্রশংসা করেন।
এ দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীরের সাথেও গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন খুরশিদ। আলমগীর জানান, ফেরার আসামিদের দু’টি তালিকা বিনিময় করেছে দুই দেশ। সীমান্তে চোরাচালান আটকানো এবং বিএসএফের গুলিচালনা বন্ধ করা নিয়েও তাদের আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশকে ৫০টি বিশেষ ধরনের আর্টিকুলেটেড বাস দিচ্ছে ভারত।

প্রথম দফায় তার ১০টি ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। শেখ হাসিনা ও খুরশিদ যৌথ ভাবে তার সূচনা করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনিও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ফেব্রুয়ারী ১৮.২০১৩

শেয়ার করুন