ব্যবসা ও অর্থনীতিডেস্ক(১৮ ফেব্রুয়ারী): দুই সপ্তাহ টানা মূল্যবৃদ্ধির পর গতকাল পতন ঘটেছে দেশের শেয়ারবাজারে। এ দিনে দেশের দুই বাজারেই সূচকের অবনতি ঘটে। সকালে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় দিনের লেনদেন শুরু হলেও আধঘণ্টা পর বিক্রয় চাপের শিকার হয় দুই বাজার। এ চাপ দিনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকলে অবনতি ঘটে সূচকের। ঢাকায় সাধারণ সূচক ২২ দশমিক ৬০ ও ডিএসইএক্স সূচক ১৮ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট হ্রাস পায়। চট্টগ্রামে সার্বিক মূল্যসূচক ৩৮ দশমিক ৬০ ও সিএসসিএক্স সূচক ২২ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট নেমেছে।
গতকাল দিনের বেশির ভাগ সময় বাজার মন্দায় কাটালে কমে যায় লেনদেনের পরিমাণও। ঢাকায় আগের সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবারের ৫৫২ কোটি টাকার স্থলে গতকাল ৪৫৩ কোটি টাকার শেয়ার বেচাকেনা হয়। সে হিসাবে এখানে লেনদেন কমেছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। চট্টগ্রামেও ৫৭ কোটি টাকা থেকে লেনদেন নেমে আসে ৪৬ কোটি টাকায়।
তবে লেনদেন ও দরের অবনতিকে স্বাভাবিক বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, টানা বৃদ্ধিতে সূচকের যথেষ্ট উন্নতি ঘটেছে, যা বিক্রয় চাপকে অবশ্যম্ভাবী করে তোলে। তারা আসা করছেন সংশোধন শেষে এ অবস্থা থেকে বাজার আবার ঘুরে দাঁড়াবে। বিনিয়োগকারীরাও এ ক্ষেত্রে একমত পোষণ করেন। তাদের মতে, বারবার দরপতনের কারণে বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদে শেয়ার ধারণ করতে সাহস পান না। তাই সামান্য লাভেই তারা শেয়ার ছেড়ে দেন। এ সংশোধন কাটিয়ে সামনের দিনগুলোতে বাজার আবার মূল্যবৃদ্ধির ধারায় ফিরবে এমন প্রত্যাশাও পোষণ করেন তারা।
গতকাল প্রথম আধঘণ্টা মূল্যবৃদ্ধি ধরে রাখে বাজারগুলো। এ সময় ঢাকা স্টকে সাধারণ সূচক ৩৩ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। তবে বেলা ১১টার পর বিক্রয় চাপ দেখা দিলে কমতে শুরু করে সূচক। দিনের বাকি সময় শুধু পতনেই কাটে।
তালিকাভুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এক বছরের কার্যক্রম শেষ করে ইতোমধ্যে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। কোনো কোনোটি ইতোমধ্যে পর্ষদ সভার ঘোষণা দিয়েছে।আবার কোনো কোনোটি আগের বছরের লভ্যাংশ ঘোষণাও শেষ করেছে। এ পর্যন্ত লভ্যাংশ ঘোষণা করা কোম্পানিগুলোর কয়েকটি আগের বছরের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। কোনো কোনোটি লভ্যাংশ ঘোষণায় আগের বছরকে ছাড়িয়ে গেছে। ফলে বছরের শুরুতে বাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা অনেক।
গতকাল ডিএসইতে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজকে পেছনে ফেলে ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট উঠে আসে লেনদেনের শীর্ষে। ২৭ কোটি ২৪ লাখ টাকায় ২১ লাখ ৭৭ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে কোম্পানিটি। ২৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকায় এক কোটি ৯ লাখ শেয়ার লেনদেন করে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ছিল দ্বিতীয়। ডিএসইর শীর্ষ দশ কোম্পানির তালিকায় আরো ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড,. সামিট পূর্বাঞ্চল পাওয়ার কোম্পানি, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস, আর এন স্পিনিং, জেনারেশন নেক্সট, এনভয় টেক্সটাইল, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি ও সামিট পাওয়ার।
মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল সামিট অ্যালাইয়েন্স পোর্ট। দিনের লেনদেনে ১০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি ঘটে কোম্পানিটির।একই গ্রুপের বিদ্যুৎ কোম্পানি সামিট পূর্বাঞ্চল ছিল দ্বিতীয়। এ ছাড়া ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট ৭.০৮, জেমিনি সী ফুডস ৬.৮১, সাবমেরিন ক্যাবলস ৫.১২ ও রুপালি ইন্স্যুরেন্সের ৫.০৪ শতাংশ দাম বাড়ে। অপর দিকে দিনের সর্বোচ্চ দর হারায় পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স। ২০০ শতাংশ বোনাস শেয়ারের রেকর্ড পরবর্তী লেনদেনে ৫৩ দশমিক ৫২ শতাংশ দর হারায় কোম্পানিটি। এ ছাড়া এইচ আর টেক্সটাইল ৭.১৬, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স ৫.৪১, বিডি ওয়েল্ডিং ৪.৩৩ ও ডেল্টা স্পিনিং ৪.২৫ শতাংশ দর হারায়।
নিউজরুম্